একদিকে, সুইজারল্যান্ড সফরের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চীনা প্রেসিডেন্টের ২০১৭ সালের সফর এবং অন্যদিকে, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে চীনা শীর্ষ নেতার প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ।
সুইজারল্যান্ডে পৌঁছানোর পর প্রেসিডেন্ট সি বলেন, তার এ সফর মৈত্রী সুসংহত, সহযোগিতা গভীরতর এবং শান্তি ও উন্নয়ন খুঁজে বের করতে সক্ষম বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন।
রোববার দুপুরে যখন প্রেসিডেন্ট সি এবং তার স্ত্রী বিশেষ বিমান যোগে জুরিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান তখন সুইস প্রেসিডেন্ট দোরিস লিউথার্ড এবং তার স্বামী তাদের জন্য জাঁকজমকপূর্ণ এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। ভাষণে প্রেসিডেন্ট সি বলেন,
'এবার আমি মৈত্রী সুসংহত ও সহযোগিতা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছি। আমি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বাস্তব সহযোগিতা গভীরতর এবং চীন-সুইজারল্যান্ড কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক পূর্ণাঙ্গ করতে চাই। আমি দাভোস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন এবং সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের শান্তি সুরক্ষা এবং অভিন্ন উন্নয়ন বেগবান করতে চাই।'
আজ (সোমবার) আনুষ্ঠানিক বৈঠক, স্বাক্ষর অনুষ্ঠান, সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাত্ এবং দেশটির অর্থনৈতিক মহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করাসহ ধারাবাহিক বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় কার্যক্রম চলার কথা।
প্রেসিডেন্ট সি ২০১৭ সালে তার প্রথম সফর হিসেবে সুইজারল্যান্ডকে বেছে নিয়েছেন। এটি বিভিন্ন পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমি (সিএএসএস)-র ইউরোপ গবেষণালয়ের মহাপরিচালক হুয়াং পিং বলেন, প্রেসিডেন্ট সি'র এ সফর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-সুইজারল্যান্ড সম্পর্কের উন্নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। ২০১৬ সালে দু'দেশ বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সৃজনশীল কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রেসিডেন্টের সি'র এবারের সফর অবশ্যই গত বছর দু'পক্ষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত সম্পর্কের বিষয় সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
উল্লেখ্য, পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট সি'র সফরকালে চীন ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে যে সব চুক্তি স্বাক্ষর হবে তা রাজনীতি, অবাধ বাণিজ্য, সংস্কৃতি, শুল্ক, জ্বালানি ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত।
দু'পক্ষ ২০১৭ সালে চীন-সুইজারল্যান্ড পর্যটন বর্ষ চালু করবে এবং ধারাবাহিক বাস্তব সহযোগিতার মাধ্যমে দু'দেশের জনগণের সত্যিকার কল্যাণ বয়ে আনার চেষ্টা করবে।
সফরকালে প্রেসিডেন্ট সি আমন্ত্রিত হয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ২০১৭ সালের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিতে দাভোস যাবেন। তিনি ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন। ভাষণে তিনি বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি কিভাবে সংকটাবস্থা থেকে বের হয়ে যেতে পারে তা নিয়ে চীনের মতামত তুলে ধরবেন।
সুইজারল্যান্ড সফরকালে প্রেসিডেন্ট সি আমন্ত্রিত হয়ে জেনিভায় জাতিসংঘ কার্যালয় পরিদর্শন করবেন এবং প্যালেস অব নেশন্সে ভাষণ দেবেন। ভাষণে বর্তমান বিশ্বের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও শৃঙ্খলা নিয়ে চীনের অবস্থান তুলে ধরবেন। তিনি মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করবেন।
তা ছাড়া, প্রেসিডেন্ট সি জেনিভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও লোজানে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির দফতর পরিদর্শন করবেন। চীনের কোনো শীর্ষ নেতা এই প্রথমবারের মতো উল্লেখিত দু'টি আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিদর্শন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। (লিলি/টুটুল)