হ্যালো চানয়: ৫৭. থাই শান
  2017-01-13 19:59:21  cri

চীনের একটি বহুল প্রচলিত কথা হলো, চোখ থাকার পরও থাই শান (শান্ত পাহাড়) দেখে না। রূপক অর্থে কথাটি ব্যবহৃত হয়। এ কথাটি দিয়ে এমন একজনকে বোঝানো হয়, যে তার সামান্য অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দিয়ে কাছের বিখ্যাত মানুষের গুরুত্ব বুঝতে পারে না। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন থাইশানকে জ্ঞানী মানুষের প্রতীক হিসেবে কল্পনা করা হয়? কারণ, চীনা মানুষদের মনে থাই শানের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা।

থাই শান চীনের শানতুং প্রদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। এ পাহাড়কে চীনারা 'পৃথিবীর প্রথম পাহাড়' বলে থাকে। নৈতিক গুরু কনফুসিয়াস থাই শানের ওপর উঠেছিলেন। সেখান থেকে তিনি নিচের সব দৃশ্য দেখতে পারতেন। তিনি বলেছেন, থাইশান পাহাড়ের ওপরে উঠলে গোটা পৃথিবীকে ছোট মনে হয়। থাই শান অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও পবিত্র। দুই হাজার বছর আগেও চীনা সম্রাটরা থাই শানে গিয়ে দেশ ও নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য স্বর্গ ও পৃথিবীর পূজা করতেন। স্বর্গ ও পৃথিবীর পূজাকে চীনা ভাষায় বলা হয় ফেংশান। চীনের ইতিহাসে ১২ জন সম্রাট থাই শানে ফেংশান করেছিলেন। আর তাই, থাই শান হলো চীনা মানুষদের কাছে খুবই পবিত্র পাহাড়।

চীনা মানুষ শ্বশুরকে থাই শান বলে। কারণ, চীনের এক কিংবদন্তীতে রয়েছে যে, থাং রাজবংশে থাং মিং হুয়াং নামে এক সম্রাট ছিলেন। তিনি চাংশুও নামের এক কর্মকর্তাকে থাই শানে স্বর্গ ও পৃথিবীর ফেংশান বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেন। চাংশুও'র জামাই চেং ই হলো সর্বনিম্ন কর্মকর্তা। নিয়ম অনুযায়ী ফেংশানের কাজে অংশ নেয়ার পর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা সবাইকে ছাড়িয়ে এক পর্যায়ে ওপরে উঠে যান। কিন্তু চেং ই তাঁর শ্বশুরকে ছাড়িয়ে চতুর্থ ধাপে উঠে যায়। এরপর সম্রাট থাং মিং হুয়াং চেং ইকে পঞ্চম পর্যায়ের কর্মকর্তায় পরিণত করেন। এ ঘটনায় কেউ কেউ বলে থাকে, এটি থাই শানের কীর্তিকলাপ। এখানে 'কীর্তিকলাপের' দু'টি অর্থ রয়েছে। একটি হলো ফেংশানের কাজ, আর অন্যটি চেং ই'র শশুরের কাজ। এরপর থেকে শশুরকে থাই শানের সঙ্গে তুলনা করা হয়।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040