1224yinyue.m4a
|
কেনি জে
বন্ধুরা, 'জেসমিন ফুল' গানটি চীনের বিখ্যাত একটি লোকসংগীত। চীনের সামরিক বাহিনীর সুরকার হো ফাং প্রাচীন লোকসংগীতের ভিত্তিতে নতুনভাবে গানটি পরিবেশন করেছেন। এ গানটি চীনের কোলে হংকংয়ের ফিরে আসার অনুষ্ঠান, এথেন্স অলিম্পিক গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠান, বেইজিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, নানচিং যুব অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়েছে। চীন ও বিশ্বমঞ্চে এ সুরটি বার বার প্রচারের কারণে তা ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে এবং চীনা সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী উপাদানে পরিণত হয়েছে। এ সুরের বিশেষ মর্যাদা থাকায় একে চীনের 'দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় গান'ও বলা হয়।
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন মার্কিন স্যাক্সোফোন বাদক কেনি জের বাজানো 'জেসমিন ফুল' সুরটি। একজন মার্কিন শিল্পী হলেও তার বাজানো কয়েকটি চীনা সুর চীনে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। শুনুন সুরটি।
বন্ধুরা, আমি একবার ঢাকার সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমে পরিদর্শনের সময় একটি বাঙালী মেয়ের কণ্ঠে চীনের 'রূপকথা' গানটি শুনেছি। তার গান আমাকে মুগ্ধ করেছে। আর তখন থেকেই এ গানটি আমার হৃদয়ে স্থান করে নেয়। গানটি সর্বপ্রথম গেয়েছিলেন তাইওয়ানের কণ্ঠশিল্পী কুয়াং লিয়াং।
কুয়াং লিয়াং
গানের কথায় বলা হয়েছে, 'কত দিন হয়েছে, তোমার কোনো খোঁজ পাইনা! আমি কী আবার ভুল করেছি? তুমি কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলেছো, রূপকথার সব মিথ্যা। আমি তোমার রাজকুমার হব না। হয়তো তুমি জানো না, যখন তুমি আমায় ভালোবাসতে শুরু করেছ, তখন থেকেই আমার আকাশের সব তারা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। আমি রূপকথার মধ্যে তোমাকে ভালোবাসার পরী বানাতে চাই। আমার দু'টি পাখা দিয়ে তোমাকে আগলে রাখতে চাই। তুমি বিশ্বাস করো, আমরা রূপকথার মতো সুখী হবো।'
বন্ধুরা, আপনারা এতক্ষণ শুনলেন তাইওয়ানের কণ্ঠশিল্পী কুয়াং লিয়াং এর গাওয়া 'রূপকথা' গানটি। এটি একটি উষ্ণ ও রোমান্টিক প্রেমের গান। এ গানটি দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পীদেরও পছন্দ হয়েছে। কিম হোং জোং এ গানটি গেয়েছেন, এমনকি এ গানের জন্য তৈরি মিউজিক ভিডিওটিও প্রায় একই রকম। এখন আপনারা শুনুন কোরীয় ভাষায় গাওয়া 'রূপকথা' গানটি।
লিয়াং চিং রো
বন্ধুরা, লিয়াং চিং রো হলেন মালয়েশিয়ায় একজন গায়িকা। ১৯৯৭ সালে তিনি তাইওয়ানের পপ সংগীত জগতে সাফল্য অর্জন করেন। তার অনেকগুলো গান জনপ্রিয় হয়েছে। আজ আপনাদের শোনাবো 'তোমাকে ভালোবেসেছি দু'এক দিন নয়' গানটি। গানের কথা এমন, 'তুমি বিদায়ের সময় বলেছো, আমরা হলাম বন্ধু। কিন্তু এর পর কেন কোনো যোগাযোগ নেই? তোমাকে ভালোবেসেছি দু'এক দিন নয়। প্রতিদিন অনেক বার তোমাকে মিস করি। তোমাকে ছাড়া ভিড়ের মধ্যে হাঁটতে এখনও অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। তুমি কী আমাকে মিস করছো?"
বন্ধুরা, কান মি ইয়োন হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার একজন গায়িকা। ২০০৮ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি চীনের বাজারে ঢোকার চেষ্টা করেন। তিনি বেশ কিছু চীনা গানকে কোরীয় ভাষায় রূপান্তর করে গেয়েছেন এবং ভালো সাড়া পেয়েছেন। এখন শুনুন তার গাওয়া 'তোমাকে ভালোবেসেছি দু'এক দিন নয়' গানটির কোরীয় সংস্করণ। তিনি এ গানটির নাম দিয়েছেন 'তুষারপাত'।
বন্ধুরা, আমি সাধারণত হালকা সুরের গান শুনতে পছন্দ করি। তবে মাঝে মাঝে দু'একটি রক সঙ্গীতও মন্দ নয়, তাইনা? চীনের প্রতিনিধিত্বশীল রক সংগীত বলতে গেলে ছুই চিয়ানের 'কোনো কিছু নেই' গানটির কথাই বলতে হয়। এ গানটি ছুই চিয়ানের প্রতিনিধিত্বশীল গানের অন্যতম। ১৯৮৬ সালে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শান্তি বর্ষ-বিষয়ক শত কণ্ঠশিল্পীদের সংগীতানুষ্ঠানে ছুই চিয়ান প্রথম বার এ গানটি গান। এ গানটি কেবল ছুই চিয়ানের জন্য সুনাম অর্জন করেছে, তা কিন্তু নয়, বরং এ গানটি ছিল চীনের পপ সংগীতের প্রতীকী কর্ম। গানটির কথায় উত্তর চীনের লোকসংগীতের ভাব রয়েছে। এটি কোনো প্রেমের গান নয়। এ গানে গায়কের মনের বিক্ষুব্ধ ও শক্তিহীন বোধ প্রতিফলিত হয়েছে। চীনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর রক সংগীত ধাপে ধাপে চীনের প্রধান সম্প্রদায় গ্রহণ করেছে। এ গানের জন্য ছুই চিয়ানকে 'চীনের প্রথম রক শিল্পী' বলে অভিহিত করা হয়।
১৯৮৭ সালে ডেনমার্কের ম্যাকেল রক শেখা নামে এক ব্যান্ড গঠিত হয়। এটি ডেনমার্কের সংগীত জগতে সফল ব্যান্ড দল। এ পর্যন্ত ডেনমার্কে তাদের ৫ লাখেরও বেশি ডিস্ক বিক্রি হয়েছে। ২০০৭ সালে তারা চীনা ভাষার গান 'কোনো কিছু নেই' ইংরেজিতে রূপান্তর করেন। শুনুন তাহলে।
প্রিয় বন্ধুরা, সংগীত জগতে জাতির বিভেদ নেই, রাষ্ট্রীয় সীমানা নেই। সুন্দর গানগুলো ভিন্ন ভাষার ডানায় ভর করে পাহাড় ও সমুদ্র পার হয়ে বিশ্বের সব জায়গায় ছড়িয়ে যায় এবং আমাদের জীবনের নতুন প্রেরণা যোগায়।
বন্ধুরা, সুর ও বাণী আসর আজকের মতো এখানে শেষ করছি। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে।
(ইয়ু/তৌহিদ)