1216china
|
হাংচৌ পশ্চিম হ্রদের আরেকটি নাম হল সিজি হ্রদ। সং রাজবংশের (খ্রিষ্টাব্দ ৯৬০-১২৭৯) বিখ্যাত কবি সু তংফোর একটি কবিতায় বলা হয়েছে, "সিজি হ্রদ সিজির মতই সুন্দর, তাকে সাজানো হোক বা না হোক, সে অনেক কমনীয়।" এর সঙ্গে চমতকার একটি গল্প জড়িত রয়েছে। প্রাচীন চীনে পশ্চিম হ্রদে সিশি নামে এক সুন্দরী দেবতা থাকতেন। চীনা মানুষের কাছে সিশি সিচি নামে পরিচিত। কোনো ধরনের সাজসজ্জা ছাড়াই সে দেখতে অসাধারণ সুন্দর ও কমনীয়। পশ্চিম হ্রদ 'পৃথিবীর স্বর্গ' বলে পরিচিত। পশ্চিম হ্রদে ১০টি বিখ্যাত দর্শনীয় জিনিস রয়েছে। চাঁদের অবয়ব ফুটিয়ে তোলার মতো তিনটি স্তম্ভ রয়েছে এখানে। এ ধরনের আকর্ষণীয় স্থানের সঙ্গে সাধারণভাবেই জড়িয়ে রয়েছে সুন্দর সুন্দর গল্প। পশ্চিম হ্রদের সবচেয়ে সুন্দর গল্পটি হলো, 'সাদা সাপের কিংবদন্তী'।
কিংবদন্তীতে বলা হয়েছে, এক শিকারি 'বাই সুচেন' নামের একটি ছোট সাদা সাপকে বন্দি করে। তারপর এক মেষপালক ছেলে সাদা সাপ অর্থাত বাই সুচেনকে উদ্ধার করে। তখন ছোট সাপটি প্রতিজ্ঞা করে, সে ছেলেটিকে অবশ্যই এর প্রতিদান দেবে। এরপর দীর্ঘ বছরের সাধনায় বাই সুচেন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অপবেদতায় পরিণত হয়। সে এতটাই শক্তি অর্জন করে যে, সে অমর হয়ে স্বর্গে চলে যেতে পারে। কিন্তু সে ওই মেষপালক ছেলেটিকে প্রতিদান দেয়ার জন্য পৃথিবীতে রয়ে যায়। পরবর্তীতে মেষপালক ছেলেটি একজন চিকিৎসক হন। তার নাম স্যু সিয়ান। বাই সুচেন স্যুসিয়ানকে খুঁজে বের করে। তারা পরস্পর বিয়ে করে এবং সমাজের দরিদ্র মানুষদের চিকিত্সা সেবা দিতে থাকে। এরপর তারা একটি সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু ফাহাই নামের এক গোঁড়া ভিক্ষু মানুষ ও অপবেদতার বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। ভিক্ষু ফাহাই বাই সুচেনকে পশ্চিম হ্রদের তীরে লেইফেং মিনারের নিচে বন্দি করে এবং স্যু সিয়ানের কাছ থেকে আলাদা করে রাখে। এতে প্রচণ্ড কষ্ট পেয়ে চিকিত্সক স্যু সিয়ান মন্দিরের ভিক্ষুতে পরিণত হন। ঐতিহাসিক সেই লেইফেং মিনারটি হলো পশ্চিম হ্রদের দশটি বিখ্যাত স্থানের একটি।