এদিন জেনিভায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবতাবাদী কর্মকর্তা, সংস্থার উপমহাসচিব স্টিফেন ও ব্রায়ান অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন,
'২০১৭ সালের অর্থ সংগ্রহ পরিকল্পনা কৌশল ও সহযোগী বিষয় নিয়ে গঠিত, এতে বিশ্বের ৩৩টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এর মোট পরিমাণ ২২২০ কোটি মার্কিন ডলার। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে কঠোর মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছি আমরা। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই সংঘর্ষের কারণে সৃষ্ট।
এদিন জাতিসংঘের মানবতাবাদী কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ইস্তাহারে বলা হয়েছে, এসব অর্থ প্রধানত সংঘর্ষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত বিশ্বের ৩৩টি দেশের লোকদের সহায়তা দেওয়া হবে, তাদের জন্য খাবার, আবাসিক এলাকা, ওষুধ, আত্মরক্ষা ও জরুরি শিক্ষাগ্রহণসহ বিভিন্ন খাতে দেওয়া হবে।'
ইস্তাহারে আরও বলা হয়েছে, অব্যাহতভাবে গুরুতর হিংসাত্মক সংঘর্ষ মানবিক সংকটের মূল কারণ। ত্রাণের অর্থের তিন ভাগের এক ভাগ এ খাতে দেওয়া হবে। সিরিয়ায় ৩৪০ কোটি, ইয়েমেনে ১৯০ কোটি, দক্ষিণ সুদানে ১৩০ কোটি আর নাইজেরিয়ায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
বৈশ্বিক মানবিক সংকটের আরেকটি কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এল নিনোর কারণে সৃষ্ট বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। চলতি বছর প্রায় ২২টি দেশে এমন সাহায্য প্রয়োজন। ২০১৭ সালে ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, হাইতি, দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলোতে এ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খাদ্যদ্রব্য, পানি ও পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থা ও চিকিত্সা হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মানবিক সংকট মোকাবিলার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার উচিত আরও দ্রুত ও কার্যকর সেবা প্রদান করা।
স্টিয়ারিং কমিটি ফর হিউম্যানিটারিয়ান রেসপন্স-এর (steering committee for humanitarian respons-schr)দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ম্যাডাম কেট হাফ বলেন,
'মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম। সংকটে জড়িত লোকদের সুযোগ দেওয়া এবং তাদের সম্মান ও মর্যাদাসহ জীবনযাপনে সহায়তা দেবে।'
বর্তমানে মানবিক অর্থ সংগ্রহের অবস্থা আশাব্যঞ্জক নয়। জানা গেছে, চলতি বছর এ অর্থের পরিমাণ ২০১০ কোটি থেকে ২২১০ কোটি বাড়ানো হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত অর্ধেক অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে, আরও ১০৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঘাটতি রয়েছে। এ সম্পর্কে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কর্মকর্তা উপমহাসচিব স্টিফেন বলেন,
'এ পর্যন্ত আমরা মাত্র ১১৪০ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছি। যদিও এ পরিমাণ অন্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি, তবে তা প্রয়োজনের অর্ধেক। যারা অর্থ সহায়তা দিয়েছেন আমরা তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই এবং আশা করি সবাই আরও বেশি সাহায্য দিতে পারবেন।'
(সুবর্ণা/তৌহিদ)