পুবের জানালা ১১৩০
  2016-11-30 11:08:53  cri

 



১. বিশ্বের প্রথম নতুন ধরনের জ্বালানিচালিত 'আকাশ রেল' (SkyTrain)পরীক্ষামূলকভাবে গত ২১ নভেম্বর চালু হয় চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেং তু শহরে।

জাপান, জার্মানির পর চীন হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় দেশ, যে আকাশ রেল চালু করলো। প্রথম দু'দেশের আকাশ রেলের চেয়ে অবশ্য চীনের আকাশ রেল কিছুটা ভিন্ন। জাপান ও জার্মানির আকাশ রেল চলে বিদ্যুতে। আর চীনের আকাশ রেল চলে লিথিয়াম ব্যাটারিতে। পৃথিবীতে লিথিয়াম ব্যাটারির শক্তিতে আকাশ রেল চালু করে রেকর্ড করলো চীন।

আকাশ রেলের দুটি বগি। এটি নির্মিত হয়েছে পান্ডার আকৃতিতে। ট্রেনটি একটি বাক্সের মতো দেখতে ট্র্যাক থেকে ঝুলে থাকে। ট্রেনে ব্যবহৃত লিথিয়াম ব্যাটারিতে সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টা চলতে পারে ট্রেনটি।

চীনের আকাশ রেল বা 'আকাশ ট্রেন'-এর প্রধান ডিজাইনার জাই ওয়ান মিং। তিনি বললেন, প্রযুক্তির দিক দিয়ে এই ট্রেন অনন্য। শহুরে পরিবহনব্যবস্থায় এ এক নতুন সংযোজনও বটে। তিনি আরও বললেন, 'আকাশ ট্রেন'-এর লাইন নদীর পাশ ঘেষে তৈরি করা যেতে পারে। এ ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা দ্রুতগতির রেল স্টেশান বা বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের শহরে আসা-যাওয়ার ভালো পদ্ধতি হতে পারে।

আকাশ ট্রেনের লাইন স্থাপন তুলনামূলকভাবে সহজ। আকাশে অবস্থিত বলে, এ ব্যবস্থা বিদ্যমান সনাতন যোগাযোগব্যবস্থার ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। এ ট্রেন কোনো গ্যাস নির্গত করবে না, কোনো ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশানও হবে না। জাই ওয়ান মিং জানালেন, আকাশ ট্রেন ও লাইনের উৎপাদন ব্যয় কম বলে, এটি ছোট ও মাঝারি শহরগুলোর প্রধান পরিবহনব্যবস্থা হতে পারে।

২. ২১ নভেম্বর চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং শাংহাই মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে মার্কিন কোম্পানি জেনারেল ইলেকট্রিকের চীনা সদর দফতর ও গবেষণাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং বলেন, জেনারেল ইলেকট্রিকের আগমন প্রমাণ করে যে, চীন এখনও বড় একটি বাজার এবং বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য ভাল একটি বিনিয়োগের জায়গা।

এদিকে, গত ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত 'চীনা কোম্পানির বিশ্বায়ন, ২০১৬' শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৫ সাল থেকে চীনের বৈদেশিক বিনিয়োগ টানা ১০ বছর ধরে বেড়েছে এবং ২০১৫ সালে এ পরিমাণ পৌঁছেছে ১৪৫৬৭ কোটি ডলারে।

উল্লেখ্য, ২০১৫-২০১৬ সালে চীন প্রথমবারের মতো Net capital exporting দেশে পরিণত হয়েছে; জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগ উত্স দেশে পরিণত হয়েছে; এবং তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের বিনিয়োগ প্রথমবারের মতো চীনে মার্কিন বিনিযোগের চেয়ে বেড়েছে।

৩. চীনা বিদেশি মুদ্রা বিনিময়কেন্দ্র জানিয়েছে, ২৫ নভেম্বর ফরেন এক্সচেঞ্জ বাজারে রেন মিন পি'র Central Parity Rate ছিল এক ডলারে ৬.৯১৬৮ ইউয়ান। বিগত ৮ বছরে ডলারের বিপরীতে রেনমিনপি'র এ ছিল সর্বনিম্ন মূল্য।

প্রশ্ন হচ্ছে: ডলার-ইউয়ান বিনিময় হারে এ পরিবর্তন চীনা মানুষের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলছে? যারা যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করেন বা ওখানে ভ্রমণ করতে চান, তাদের জন্য এটা সুখবর নয়। কারণ, এখন তাদেরকে ডলার কিনতে বেশি ইউয়ান ব্যয় করতে হবে।

তবে রেনমিনপির মূল্যহ্রাস চীনের রফতানি বাণিজ্যের জন্য ভাল। আর রফতানি ভালো হলে উৎপাদন বাড়বে এবং উৎপাদন বাড়া মানে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

তা ছাড়া, চীনের দর্শনীয় স্থানগুলো আরও বেশি বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে পারে। কারণ, তারা এখন ডলার ভাঙালে আগের চেয়ে বেশি চীনা মুদ্রা পাবেন।

আরেক ধরনের চীনা মানুষ এতে উপকৃত হবেন । ধরা যাক, একজন চীনা মানুষ ২০১৪ সালে ১ কোটি ইউয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেই অর্থ দিয়ে মার্কিন ডলার কেনেন। তো তিনি যুক্তরাষ্ট্রে দু'বছর কাটান এবং তার ডলারের ১০ শতাংশ ব্যয় করেন। ২০১৬ সালে তিনি চীনে ফিরে আসেন এবং তার কাছে রয়ে যাওয়া ডলারগুলো দিয়ে ইউয়ান কেনেন। তিনি কতো ইউয়ান পাবেন? এক কোটি! অর্থাত দৃশ্যত তিনি বিনা খরচে যুক্তরাষ্ট্রে দু'বছর ভ্রমণ করে এসেছেন!!

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040