1104china
|
মহাপ্রাচীরের নির্মাণ শুরু হয় চীনের বসন্ত ও শরৎ যুগ এবং যুদ্ধ কবলিত রাজ্যসমূহের যুগ অর্থাৎ খৃষ্টপূর্ব নবম শতাব্দী থেকে। বড় রাজ্যগুলোর মধ্যে পরস্পরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে সীমান্তের কাছাকাছি পাহাড়ে মহাপ্রাচীরের কাজ শুরু হয়। মহাপ্রাচীরে সঙ্কেত দেয়ার জন্য অনেকগুলো অগ্নিমঞ্চ আছে। এসব মঞ্চ শত্রুর আক্রমণের খবর দেয়া হয়। যখন শত্রু আক্রমণ করতে আসে, তখন দিনের বেলা আগুন জ্বালিয়ে ধোঁয়া উড়ানো হত, রাতে আগুন জ্বালিয়ে মানুষকে সতর্ক করা হত। প্রত্যেক সঙ্কেত-অগ্নিমঞ্চের মধ্যে ১০ লি দূরত্ব আছে। যাতে খুব তাড়াতাড়ি সংকেত পাঠানো যায়। মহাপ্রাচীর হলো চীনের নির্মাণ স্থাপত্যের একটি বিস্ময়।
মহাপ্রাচীরের নির্মাণ নিয়ে একটি বেদনাদায়ক গল্পও প্রচলিত আছে।
ছিন রাজবংশের ছিনসিহুয়াং রাজার সময় মহাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য অনেক শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়। মেংচিয়াংনুই নামে নব বিবাহিত এক স্ত্রীর স্বামীও এ কাজে যোগ দেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর মেংচিয়াংনুই রাত-দিন স্বামীর কথা ভাবতে থাকেন। অনেক দিন পার হলে তার স্বামীর কোনো খোঁজ না পেয়ে অবশেষে স্বামীকে খোঁজার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পথে মেংচিয়াংনুই অনেক কষ্ট মোকাবিলা করে অবশেষে মহাপ্রাচীরে পৌঁছান। কিন্তু অন্যান্য শ্রমিক তাকে জানায় যে, তার স্বামী মরে গেছে। মেংচিয়াংনুই মর্মাহত হয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। মেংচিয়াংনুই তিন দিন তিন রাত কান্নাকাটি করার পর গভীর দুঃখে সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে মানুষেরা মেংচিয়াংনুইয়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মহাপ্রাচীরের নিচে মেংচিয়াংনুই মন্দির নির্মাণ করে।