মেক্সিকোয় আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক দিবসে 'চীনা সন্ধ্যা'
  2016-10-25 14:02:06  cri
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি'। আর এ অনুষ্ঠানে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু ওয়াং ছুই ইয়াং জিনিয়া।

প্রথমে শুনুন একটি সাংস্কৃতিক খবর।

'রেশমপথে গাড়ি চালানো: চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্বপূর্ণ ভ্রমণ' শীর্ষক চীন-পাকিস্তান যৌথ পর্যটনবিষয়ক অনুষ্ঠান সম্প্রতি পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়। চীনের নিংসিয়া হু জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ওয়াং হো শান, পাকিস্তানের তথ্য ও প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী পারভেজ রশিদ এবং দেশটিতে চীনের রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েই তুংসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে একটি চীনা গাড়িবহরকে স্বাগত জানানো যায়।

জানা গেছে, চীনের এ গাড়িবহরটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিংসিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে ২২ দিন পর ইসলামাবাদে পৌঁছায়। এরপর বহরটি আরো পশ্চিম দিকে যাবে। কয়েক দিনের মধ্যে তারা মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয়দেশ ভ্রমণ করবে।

এখন শুনুন 'সিআরআই ও এটিএন বাংলা'র মধ্যে 'হ্যালো, চায়না' প্রচারসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত' শিরোনামে একটি প্রবন্ধ।

সম্প্রতি ঢাকায় চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই) ও বাংলাদেশের এটিএন বাংলা টিভি চ্যানেলের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে, এটিএন বাংলা 'হ্যালো, চায়না' শীর্ষক শত পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করবে। চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

"এখন দু'পক্ষের প্রতিনিধিরা প্রকল্পের বিনিয়োগ কাঠামো চুক্তি বিনিময় করুন।"

সিআরআইয়ের উপ-মহাপরিচালক সিয়া চি স্যুয়ান এবং এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুসারে, সিআরআইয়ের তৈরি চীনসম্পর্কিত ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্র 'হ্যালো, চায়না' পয়লা অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এটিএন বাংলা'য় প্রচারিত হবে।

'হ্যালো, চায়না' মোট ১০০টি ক্ষুদ্র পর্বে বিভক্ত ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্র। এ পর্বগুলোতে চীনের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। সিআরআইয়ের বাংলা বিভাগে প্রামাণ্যচিত্রটি অনুবাদ ও বাংলায় ডাবিং করা হয়েছে।

উপ-মহাপরিচালক সিয়া চি স্যুয়ান বলেন, প্রামাণ্যচিত্রটির অনুবাদ ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রের সহযোগিতা আরো উন্নয়ন করবে।

"এখানে (বাংলাদেশে) ভারত ও পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব খুবই স্পষ্ট। যদি চীনের প্রামাণ্যচিত্রটির অনুবাদ বাংলাদেশের বন্ধুরা গ্রহণ করতে পারে, চীনের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও উন্নয়নের ধারণাও বাংলা বন্ধুদের কাছে প্রবেশ করতে পারে, তা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ। 'হ্যালো, চায়না' হলো সহযোগিতার প্রথম ধাপ, ভবিষ্যতে সরকারের সমর্থন ও দু'দেশের সাংস্কৃতিক মহলের বন্ধুদের সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগ অনেক বছর ধরে চীন ও বাংলাদেশের জনগণের বিনিময়ে অনেক অবদান রাখছে। ভবিষ্যতের উন্নয়ন নিয়ে বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়েই বলেন,

"বাংলাদেশের লোকসংখ্যা ১৬ কোটিও বেশি, চীনে প্রায় ৬০জন চীনা বাংলা ভাষা বলতে পারেন। এর মধ্যে অধিকাংশই সিআরআই-এর সঙ্গে যুক্ত। আমার মনে হয় 'হ্যালো, চায়না' তা একটি সূচনা, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিভিন্ন মাধ্যমগুলোর সঙ্গে আরো ব্যাপক সহযোগিতা করবো।"

আমি বিশ্বাস করি, 'হ্যালো, চায়না' ছাড়া, আমাদের সব দৃষ্টি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের ওপর, তাইনা? প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের এবারের সফর ত্রিশ বছর পর কোনো চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর। অবশ্য এর আগে সি চিন পিং যখন চীনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন তিনি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। এবার সফরকালে প্রেসিডেন্ট সি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর দু'নেতার উপস্থিতিতে বেশ কিছু উন্নয়ন ও ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এবার শুনুন মেক্সিকোয় আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক দিবসে 'চীনা সন্ধ্যা' শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।

১৩ অক্টোবর মেক্সিকোর গুয়ানাহুয়াতো শহরের প্লাজা লস পাস্তিতোস মহাচত্বরে দেশটির ৪৪তম সারভান্তেস আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক দিবসে 'চীনা সন্ধ্যা' অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানে চীনের বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত ব্যান্ড, ডিজে ও ভিসুয়াল আর্টস পরিবেশন করা হয়।

১২ থেকে ১৪ অক্টোবর চীনের ঐতিহ্যিক অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয় সেখানে। যেমন, কাগজ কেটে তৈরি করা ছবি, বেইজিং অপেরাসহ বিভিন্ন শিল্পকর্ম দেশটির রেলস্টেশনে দেখা যায়। চীনের এসব শিল্পকর্ম দেখে মেক্সিকোর অনেক নাগরিক ভীষণ মুগ্ধ হন।

আসলে স্পেনের বিখ্যাত সাহিত্যিক সারভান্তেসের নামানুসারে এ দিবসটির নামকরণ করা হয়।'সারভান্তেস আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক দিবস' হলো মেক্সিকো এমনকি সারা লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম সাংস্কৃতিক দিবস। চলতি বছর হলো সারভান্তেস-এর মৃত্যুর ৪'শ তম বার্ষিকী। মোট ৩৮টি দেশের ৩হাজার ৫'শরও বেশি শিল্পী এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ ছাড়া, চলতি বছর 'চীন-লাতিন আমেরিকা সাংস্কৃতিক বিনিময় বছর'। দু'পক্ষের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনেক ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com।

চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।

শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান (জিনিয়া/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040