প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং'র বাংলাদেশ সফর: চীনা স্বপ্ন ও সোনার বাংলার স্বপ্ন সংযুক্ত
  2016-10-15 19:07:44  cri
অক্টোবর ১৫: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরের লক্ষ্যে গতকাল (শুক্রবার) বিশেষ বিমান যোগে ঢাকায় পৌঁছান। এটি হলো কোনো চীনা প্রেসিডেন্টের ৩০ বছর পর প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরের সময় প্রেসিডেন্ট সি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে দু'নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে পরিকল্পনা নির্ধারণ করেন এবং দু'দেশের সম্পর্ককে কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের লক্ষণীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ২০১০ সালে দু'দেশের সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নীত হওয়ার পর থেকে দেশ দু'টি রাজনীতি, অর্থ-বাণিজ্য, সংস্কৃতি, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ব্যাপারে সহযোগিতা জোরদার করেছে। দু'দেশের সম্পর্ক উন্নীত করা প্রেসিডেন্ট সি'র এবারের সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। এ সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের সময় সি চিন পিং বলেন,

'বর্তমানে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক ইতিহাসের নতুন আদ্যস্থলে রয়েছে। দু'দেশের সম্পর্কের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়নের পথে পারস্পরিক আস্থা ও সমর্থনের অংশীদারে পরিণত এবং দু'দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের বিষয় যোগানোর পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা জোরদার এবং দু'দেশের জনগণের কল্যাণ বয়ে আনতে চায়'।

চীন ও বাংলাদেশ দু'দেশের সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করা এবং দু'দেশের ঊর্ধ্বতন আদান-প্রদান ও কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার করার বিষয়ে সম্মত।

সি চিন পিং'র এবারের সফরে চীনা স্বপ্ন ও সোনার বাংলার স্বপ্ন সংযুক্ত হয়। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

এ দু'টি লক্ষ্য চীনের 'দুটি একশ বছর বা সিপিসি প্রতিষ্ঠার একশ বছরে চীনের অর্থনীতি আরও উন্নীত, বিভিন্ন ব্যবস্থা আরও সুষ্ঠু এবং গণপ্রজাতন্ত্র চীন প্রতিষ্ঠার একশ বছরে আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন ও সমৃদ্ধ, সমতাসম্পন্ন ও সভ্য সামাজিক সমাজতান্ত্রিক দেশে পরিণত হওয়া'-এর সঙ্গে মিল রয়েছে।

সি চিন পি'র এবারের সফরের মাধ্যমে দু'দেশের স্বপ্ন ও লক্ষ্য যুক্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সি চিন পিং বলেন,

'আমরা একমত হয়েছি যে, দু'দেশ উন্নয়নের কৌশল যুক্ত করে যৌথভাবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণকাজ বেগবান করবে। পাশাপাশি, অবকাঠামো, জ্বালানি, বিদ্যুত, পরিবহণ, টেলিযোগাযোগ ও কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করবে। চীন যথাসাধ্য বাংলাদেশকে অর্থ, প্রযুক্তি ও জনসম্পদ সমর্থন দিয়ে যাবে'।

বৈঠকের সময় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতার সম্ভাবনা উপলব্ধি করে এবং অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি সহযোগিতা ও কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন,

'বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দু'দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সে সময় দু'দেশের জনগণের জন্যও কল্যাণ বয়ে আনা হবে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যাপক মতৈক্য অর্জিত হয়েছে। আমরা একমত হয়েছি যে, চীন ও বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ ও কৃষিসহ এ বিষয়গুলো কেন্দ্র করে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করবে'।

(ওয়াং তান হোং/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040