সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের লক্ষণীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ২০১০ সালে দু'দেশের সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নীত হওয়ার পর থেকে দেশ দু'টি রাজনীতি, অর্থ-বাণিজ্য, সংস্কৃতি, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ব্যাপারে সহযোগিতা জোরদার করেছে। দু'দেশের সম্পর্ক উন্নীত করা প্রেসিডেন্ট সি'র এবারের সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। এ সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের সময় সি চিন পিং বলেন,
'বর্তমানে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক ইতিহাসের নতুন আদ্যস্থলে রয়েছে। দু'দেশের সম্পর্কের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়নের পথে পারস্পরিক আস্থা ও সমর্থনের অংশীদারে পরিণত এবং দু'দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের বিষয় যোগানোর পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা জোরদার এবং দু'দেশের জনগণের কল্যাণ বয়ে আনতে চায়'।
চীন ও বাংলাদেশ দু'দেশের সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করা এবং দু'দেশের ঊর্ধ্বতন আদান-প্রদান ও কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার করার বিষয়ে সম্মত।
সি চিন পিং'র এবারের সফরে চীনা স্বপ্ন ও সোনার বাংলার স্বপ্ন সংযুক্ত হয়। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
এ দু'টি লক্ষ্য চীনের 'দুটি একশ বছর বা সিপিসি প্রতিষ্ঠার একশ বছরে চীনের অর্থনীতি আরও উন্নীত, বিভিন্ন ব্যবস্থা আরও সুষ্ঠু এবং গণপ্রজাতন্ত্র চীন প্রতিষ্ঠার একশ বছরে আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন ও সমৃদ্ধ, সমতাসম্পন্ন ও সভ্য সামাজিক সমাজতান্ত্রিক দেশে পরিণত হওয়া'-এর সঙ্গে মিল রয়েছে।
সি চিন পি'র এবারের সফরের মাধ্যমে দু'দেশের স্বপ্ন ও লক্ষ্য যুক্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সি চিন পিং বলেন,
'আমরা একমত হয়েছি যে, দু'দেশ উন্নয়নের কৌশল যুক্ত করে যৌথভাবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণকাজ বেগবান করবে। পাশাপাশি, অবকাঠামো, জ্বালানি, বিদ্যুত, পরিবহণ, টেলিযোগাযোগ ও কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করবে। চীন যথাসাধ্য বাংলাদেশকে অর্থ, প্রযুক্তি ও জনসম্পদ সমর্থন দিয়ে যাবে'।
বৈঠকের সময় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতার সম্ভাবনা উপলব্ধি করে এবং অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি সহযোগিতা ও কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন,
'বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দু'দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সে সময় দু'দেশের জনগণের জন্যও কল্যাণ বয়ে আনা হবে। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যাপক মতৈক্য অর্জিত হয়েছে। আমরা একমত হয়েছি যে, চীন ও বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ ও কৃষিসহ এ বিষয়গুলো কেন্দ্র করে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করবে'।
(ওয়াং তান হোং/টুটুল)