/1002nvxing
|
বিশেষজ্ঞরা জানান, অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কিশোরীদের পুষ্টি-পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। তবে অপুষ্টিতে শিশুমৃত্যু অনেক কমেছে এবং এতে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় ভালো করেছে। তাদের মতে, দেশের মা ও শিশুদের পুষ্টিহীনতা রোধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার কারণে অপুষ্টি সম্পূর্ণ দূর করতে সরকার গৃহীত কর্মসূচীসমূহ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ কারণে পুষ্টি কার্যক্রম সফল করতে পুষ্টিনীতি ও কর্মসূচি ঢেলে সাজানো প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক (শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ) ডা. এস কে বণিক বলেন, শিশুর সুস্থ সবলভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন গর্ভবতী মায়ের সঠিক পুষ্টি। শিশুর জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানো, শিশুর বয়স ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো এবং ৬ মাস বয়সের পর থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি বয়স অনুযায়ী পারিবারিক পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা এবং পুষ্টি (এইচপিএন) খাতের বিদ্যমান বাধাসমূহ দূর করে এই কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসডিপি) বাস্তবায়ন করে।
ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত এইচপিএসপি (১৯৯৮-২০০৩) এবং এইচপিএনএসডিপি (২০০৩-২০১১) থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা, সরকারের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, রূপকল্প-২০২১ এবং স্বাস্থ্যনীতির আলোকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তৃতীয় সেক্টর কর্মসূচি এইচপিএনএসডিপি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হালনাগাদকৃত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত চালু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৫৬টি। উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে ৪৩৬টি হাসপাতাল। ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে ৩১টি হাসপাতাল ও ১ হাজার ৩৬২টি আউটডোর ক্লিনিক। ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে ১২ হাজার ৫২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে শিশু ও মহিলাই বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর বিভিন্ন জরিপের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত দুই দশকে দেশে দারিদ্র্যতার হার কমার পাশাপাশি বেড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাত্রা। ২০১৫ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি মুল ইস্যুর মধ্যে ৫ টির ক্ষেত্রেই আমাদের অগ্রগতির হার বেশ আশাব্যঞ্জক। শিশু মৃত্যুর হার রোধ এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যেই অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া নবজাতক ও শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হারও ৪৮ শতাংশ থেকে ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। শিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তির হারও বেড়েছে।