হাংচৌ শীর্ষসম্মেলনে বিশ্বজুড়ে কাঠামোগত সংস্কারে নেতৃত্ব দেবে চীন
  2016-08-31 14:43:15  cri
জি-টোয়েন্টি শীর্ষসম্মেলনের আয়োজক হিসেবে উন্নয়নের নতুন তত্ত্ব ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়নে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করবে চীন।

এ সম্পর্কে চীনের পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি গবেষণা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক চিয়া চিন চিং মনে করেন, চীনের প্রস্তাব থেকে স্পষ্টভাবে কাঠামোগত সংস্কারের রোডম্যাপ দেখা যায়। তিনি বলেন,

'কাঠামোগত সংস্কারের রোডম্যাপ প্রণয়ন করার আগে বিশ্বের অর্থনৈতিক সংকট ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শেষ হয় নি। পাশ্চাত্য অধিকাংশ দেশগুলো মুদ্রা ও আর্থিক নীতিমালার সংস্কারের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে মুদ্রা ও আর্থিক নীতি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে মন্দাবস্থা থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম নয়, তাই কাঠামোগত সংস্কার চালু করতে হবে। শুধু চীন এমন নব্যতাপ্রবর্তন নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে সক্ষম'।

তাহলে কাঠামোগত সংস্কার বলতে কি বোঝানো হয়? এ সম্পর্কে চীনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক একাডেমির অধ্যাপক তিং ছুন মনে করেন, এ কাঠামোগত সংস্কার প্রধানত শিল্প খাতের অগ্রগতি। তিনি বলেন,

'সংকীর্ণভাবে দেখলে কাঠামোগত সংস্কার মানে কিভাবে সংশ্লিষ্ট শিল্পের কাঠামোর বিরাট পরিবর্তন ও উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা যায়। যেমন আইটি শিল্পের অগ্রগতি বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নতি ও রূপান্তরে নেতৃত্ব দিয়েছে। ব্যাপকভাবে দেখলে তা খুব সম্ভবত ব্যবস্থাপনার নব্যতাপ্রবর্তন বা ব্যবস্থার পরিবর্তন, কিভাবে উত্পাদনের কার্যকরিতা উন্নত করা যায় তাও এখানে বিবেচনা করতে হবে'।

প্রত্যেক দেশে নিজ নিজ কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, তবে বিভিন্ন দেশের সম্মুখীন কাঠামোগত সংস্কারের বিষয় ভিন্ন। তাই আন্তর্জাতিক সমাজকে এ ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছতে হবে, যাতে বিভিন্ন পক্ষের স্বার্থ ব্যাপকভাবে রক্ষা করা যায়। চীনের আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গবেষণাগারের গবেষক ছেন ফেং ইং বলেন, এ খাতে হাংচৌ শীর্ষসম্মেলনের অবদান অতুলনীয়। তিনি বলেন,

'চীনের অবস্থাকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে বলা যায়, আমাদের মূল কর্তব্য ধারণক্ষমতা, পণ্যদ্রব্যের মজুত ও 'ইকোনোমিক লিভার' কমানো। কাঠামোগত সংস্কারে চীনে সরবরাহ দিকের সংস্কার হবে বলে মনে করে চীন'।

যুক্তরাষ্ট্র সুদের হার বাড়াতে যাওয়ার কারণে সারা বিশ্বে নেতিবাচক সুদের হার পড়ে। এবারের হাংচৌ শীর্ষসম্মেলনে সংশ্লিষ্ট খাতে সংস্কার ও নীতিমালা নিয়ে ধারাবাহিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঠামোগত সংস্কার না করলে বৈশ্বিক অর্থনীতির নিম্নমুখী চলাচলের ভিত্তিতে টেকসই প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এর সঙ্গে সঙ্গে নব্যতাপ্রবর্তন উন্নয়ন চালু করতে হবে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিজ্ঞান প্রযুক্তির নব্যতাপ্রবর্তন।

পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরে জি-টোয়েন্টি ব্যবস্থায় যদিও ৮০০টি কাঠামোগত সংস্কারের নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে, তবে বিভিন্ন দেশ ও অর্থনৈতিক সত্তায় এ সংস্কারের প্রক্রিয়া অতি ধীর। এর মূল কারণ হল কাঠামোগত সংস্কারের প্রতি আস্থার অভাব। অস্ট্রেলিয়াকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে অধ্যাপক চিয়া চিন চিং বলেন, পাশ্চাত্য দেশে কাঠামোগত সংস্কার চালু করতে না পারার মূল বিষয়টি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ব্যাপার। তিনি বলেন,

(রে ৪)

'জি-টোয়েন্টির পালাক্রমিক চেয়ারম্যান হিসেবে অস্ট্রেলিয়া অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে ধারাবাহিক ব্যবস্থা দাখিল করেছে, তবে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় কংগ্রেস এ প্রস্তাব নাকচ করেছে। তবে আমরা দেখেছি, এবারের জি-টোয়েন্টি শীর্ষসম্মেলনকে কেন্দ্র করে কাঠামোগত সংস্কারের রোডম্যাপ ও ব্যবস্থা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং পরীক্ষার মানদণ্ড ও পদ্ধতি প্রণয়ন করা হয়েছে, যা জি-টোয়েন্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়'।

জি-টোয়েন্টির শীর্ষসম্মেলন শুধু বিশ্বের কয়েকটি বড় দেশের উন্নয়নের চাহিদার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এবারের সম্মেলনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ২০৩০ সালের উন্নয়ন কর্মসূচি। অবকাঠামো নির্মাণ, দরিদ্র দেশের শিল্পায়ন সমস্যা ইত্যাদি। তাদের অবস্থার উন্নতি হলে বৈশ্বিক অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নও নিশ্চিত হবে বলে উল্লেখ করেন গবেষক ছেন ফেং ইং। (সুবর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040