20160821yinyue.mp3
|
বন্ধুরা, আপনারা কি গান শুনতে পছন্দ করেন? নাকি গাইতে পছন্দ করেন? আপনি কোথায় গান গাইতে পছন্দ করেন? মঞ্চে? ক্লাসরুমে? শয়নকক্ষে? নাকি স্নানকক্ষে? হ্যাঁ, এ কথা শুনে অবশ্য কেউ কেউ চুপি চুপি হাসছেন। কারণ একেক জনের একেক রকম অভ্যাস। অনেকেই গান গাইতে পছন্দ করেন, তবে গান গাওয়ার জায়গা ভিন্ন। হ্যাঁ, আজকের 'সুর ও বাণী' আসরে আমরা এ নিয়েই গল্প করবো। কেমন?
বন্ধুরা, প্রথমে 'শোনো, কেউ গান গাইছে' নামে গান। গেয়েছেন লিউ রুও ইং ও হুয়াং ইয়ুন লিং। গানে বলা হয়েছে, 'শোনো, মনে হয়, কেউ গান গাইছে। আসলে তা হলো আমি কাকে ডাকছি। ঠিক শ্বাস নেওয়ার মতো স্বাভাবিক। ফলে আমরা মিলিত হয়েছি। এ ঋতুতে আমাদের সাক্ষাত্ আকস্মিক ব্যাপার নয়। এটা তোমার প্রত্যাশা।'
আমি ছোটবেলায় সিনেমায় দেখেছি, কিছু ছেলে বানরের মতো গাছে আরোহণ করতে পারে। গাছের ডালে বসে গল্প করে, অনেক দূরের দিকে তাকিয়ে থাকে। কী মজা। তখন ভেবেছি, আমি যদি গাছে আরোহণ করতে পারতাম! আসলে এখন বয়স বেড়েছে, মা হয়েছি। গাছে আরোহণের সেই স্বপ্ন আর বাস্তবায়িত হবে না। তবে সম্প্রতি আমি রেডিওতে একটি নতুন গান শুনেছি। গানের নাম 'খালি পায়ে গাছের ওপর গান গাই'। এ গানটি শুনে আবার ছোটবেলার স্বপ্নের কথা স্মরণ করেছি।
গানে বলা হয়েছে, 'আমি খালি পায়ে গাছের ওপর গান গাইতে চাই। তোমার বলা প্রতিটি হাস্যকৌতুক শুনে আমি হেসেছি। তোমার রসবোধ বেড়েছে? নাকি আমি আনন্দিত হয়েছি? অনেক দিন পর আমাদের সাক্ষাত্ হয়েছে। তোমার চোখে, আমার বড় পরিবর্তন হয়েছে।আমি খালি পায়ে গাছের ওপর গান গাইতে চাই। বড় গাছের ওপর আরো জায়গা আছে। তুমি কী আসবে?'
প্রিয় বন্ধুরা, আপনি কী দিয়ে গান করেন? মুখ দিয়ে? কণ্ঠ দিয়ে? নাকি মন দিয়ে? হংকংয়ের কণ্ঠশিল্পী লি মিং শরীর দিয়ে গান করেন। হ্যাঁ, এ কথা শুনে আপনারা হয়তো অবাক হবেন। আমি কিন্তু সত্যি কথা বলছি। তার এ গানের নাম হলো 'শোনো, শরীর গান করছে'। লি মিং শুধু ভালো গান গাইতে পারেন তা নয়, তিনি খুব ভালো নাচও করেন এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
এখন চীনের বিভিন্ন টেলিভিশন কেন্দ্রে অনেক ধরণের গানের প্রতিযোগিতা প্রচার হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পেশাগত শিল্পীদের প্রতিযোগিতা, অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের গানের প্রতিযোগিতা, বাচ্চাদের গানের প্রতিযোগিতা ও মায়েদের গানের প্রতিযোগিতা। এ অনুষ্ঠানগুলোর নামও খুব সহজে মনে রাখা যায়। যেমন 'চীনের সুকণ্ঠ', 'চীনের ভালো গান', 'আনন্দিত ছেলে', সুপার মেয়ে' ইত্যাদি। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা গায়ক ও গায়িকারা গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিজের শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালায়।
দর্শকরা এসব অনুষ্ঠান দেখেও অনেক অবাক হন। তারা ভাবেন, চীন সত্যি বিশাল দেশ, এখানে এতো বেশি লোক আছেন, সবাই এমন সুন্দর সুন্দর গান গাইতে পারেন! বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের অন্যজনের সফলতা দেখে নিজের গান গাওয়ার আস্থাও বেড়েছে।
প্রিয় বন্ধুরা, আপনি যদি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মঞ্চে উঠে গান গাওয়ার সুযোগ না পেয়ে থাকেন, হতাশ হবেন না। হয়তো আপনি প্রথমে নিজের বাড়ির ছাদে গান গাইতে পারেন। বিশেষ করে তারাভরা রাতে একা একাই ছাদে বসে আবেগ নিয়ে প্রেমের গান গাইতে পারেন। এই গান আপনার মনকে ভীষণভাবে স্পর্শ করবে।
বন্ধুরা, এখন শুনছেন 'সে ছাদে গান গায়' নামে গান। গেয়েছেন লি হুই মিন। গানে বলা হয়েছে, 'সে বারান্দায় বসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। তার মুখ গান করছে। সে গানের নাম আমি ভুলে গেছি। আমি টেলিভিশন বন্ধ করে একটি কাগজের বিমান তৈরি করেছি। সে বিমানটি তার কাছে ছুড়ে ফেলেছি। আমি ছাদে গিয়ে গান গাইতে গাইতে তার জন্য অপেক্ষা করি।'
প্রিয় বন্ধুরা, আপনি জানেন, পৃথিবীর ছাদ কোথায়? সেটি হলো হিমালয় পর্বতের ছুমোলোংমা শৃঙ্গ। তার উচ্চতা ৮৮৪৪ মিটার। খুবই সামান্য কিছু লোক ছুমোলোংমা শৃঙ্গে উঠতে পেরেছেন। তাদেরকে অবশ্যই বীর বলা যায়। অবশ্য অন্যরা এখানে আরোহণ করতে না পারলেও এ সম্পর্কিত গান গাইতে পারেন। বন্ধুরা, শুনুন 'বিশ্বের ছাদে গান গাই'। গানে বলা হয়েছে, 'আমি বিশ্বের ছাদে এ গান গাই। শিঙার আওয়াজ উঠার সময় আমরা এখানে দাঁড়িয়ে তোমার অপেক্ষা করি। ভালোবাসা সংগীতের সুরে পরিণত হয়ে আমার রক্তনালীতে দৌঁড়ায়।এ গান থামবে না, এক একটি শতাব্দী ধরে প্রচার হবে।'
বন্ধুরা, সা ডিংডিং চীনের একজন অসাধারণ গায়িকা। তার কণ্ঠ একটু ভিন্ন। তার গানও সাধারণ পপ সংগীতের মতো নয়। তার সংগীতের মধ্যে নিজের স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য বোঝা যায়। তিনি পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির জন্য 'ধূলিকণা গান গায়' নামের গান সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, 'যদিও মানুষ উপলব্ধি করেছে যে, এ পৃথিবীর পরিবেশ হচ্ছে মানবজাতি বেঁচে থাকার ভিত্তি। তবে মানবজাতি বার বার এ পৃথিবী ধ্বংস করে। শুনুন 'ধূলিকণা গান গায়'।
আমি যখন বাংলাদেশে ছিলাম, তখন মনে হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ কণ্ঠশিল্পীর মতো গান গাইতে পারেন। গানের সুর তাদের মাথায় আছে। লোকসংগীত, দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, পপ সংগীত সবই আছে। আসলে গান গাওয়া কেবল মঞ্চের সঙ্গেই যুক্ত নয়, এটি দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ। এটা আমার খুব ভালো লাগে। আমি এখনো ভালো করে বাংলা গান শিখতে পারিনি। সত্যি এটা আমার কাছে দু:খের বিষয়। তবে আমি আশা করি, এ 'সুর ও বাণী' আসরের মাধ্যমে আপনারা দু'একটি চীনা গান শিখবেন।
বন্ধুরা, এবার শুনুন 'মেয়ে জন্মগত গান গাইতে পছন্দ করে'।এ গানে বলা হয়েছে, 'সবাই বলেন, আমি কোকিলের মতো। আমি বসন্তকাল নিয়ে গান করি, আমি জীবন নিয়ে গান করি। আমি দেশ নিয়ে গান করি। আমার গানের পাখা আছে, তা দিয়ে উঁচু পাহাড় ও নদনদী অতিক্রম করে অনেক দূরে যেতে পারি।'
প্রিয় বন্ধুরা, আজ গান গাওয়া সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি গান আপনাদের শুনিয়েছি। আপনি যদি গান শুনতে পছন্দ করেন, অথবা গান করতে পছন্দ করেন, তাহলে একদিন আমরা একসাথে গান করবো। কেমন?
প্রিয় বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা 'সুর ও বাণী' আসর শুনলেন। আমার সঙ্গে গানগুলো শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশা করি, গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এবার তাহলে আমি বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু/টুটুল)