চীনের কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠান অর্থ হলো, রাষ্ট্রীয় পরিষদের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদ তত্ত্বাবধান ও প্রশাসন কমিশনের রাষ্ট্রীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বিদায়ী বছরের শেষ নাগাদ এমন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১০৬টি আর তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৭.৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এবারের নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে ২০২০ সাল নাগাদ কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠান উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিস্তারিতভাবে বললে তাদের মধ্যে কিছু সুসংবদ্ধ ও জোরদার করতে হবে, কিছু উদ্ভাবন করতে হবে, কিছু পুনর্গঠন করতে হবে এবং কিছু প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করতে হবে।
যেসব প্রতিষ্ঠান সুসংবদ্ধ ও জোরদার করতে হবে সেগুলো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও খাতের সঙ্গে জড়িত, অর্থাত্ রাষ্ট্রীয় পেশাগত কার্যক্রমের দায়িত্বশীল শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এমন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় অর্থ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণও বজায় রাখতে হবে।
সংস্কার ও পুনর্গঠন করতে হবে সেইসব প্রতিষ্ঠান যারা দীর্ঘকাল ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ও নিম্ন কার্যকরী সম্পদ এবং ভবিষ্যত উন্নয়ন প্রাধান্য পায়নি এমন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তাদের ভালোভাবে পুনর্গঠন করতে হবে। এ সম্পর্কে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদ তত্ত্বাবধান ও প্রশাসন কমিশনের পরিচালক সিয়াও ইয়া ছিং বলেন, চীনের কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ অর্থনীতিতে জোরদার ভূমিকা পালন করছে এবং অবকাঠামোও উন্নত হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় সম্পদ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সামরিক শিল্প, টেলি যোগাযোগ, বেসামরিক বিমান চলাচল ও জ্বালানি সম্পদসহ বিভিন্ন খাতে এর পরিমাণ ৯০ শতাংশেরও বেশি। এর সঙ্গে সঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ ও আন্তর্জাতিক ধারণক্ষমতা সহযোগিতায় অংশ নিয়েছে, বিদেশে ব্যবসাও অব্যাহতভাবে বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্কার ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে নিম্ন কার্যকারিতা ও অকার্যকর সম্পদ ব্যবস্থাপনা করেছে। ২০১২ সাল থেকে চীনের কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিম্ন কার্যকরী এ ধরনের সম্পদের মূল্য ছিল ১০৮ বিলিয়ন ইউয়ান।
চীনের রাষ্ট্রীয় প্রশাসন একাডেমির গবেষক, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদ তত্বাবধান ও প্রশাসন কমিশনের গবেষণাগারের পরামর্শ বিভাগের প্রধান চাং ছুন সিয়াও মনে করেন, কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংস্কারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রয়োজনীয় শিল্পে গুরুতারোপ করা।
শ্রেষ্ঠ ও কার্যকর সম্পদ বরাদ্দ দিতে হবে। চীনের কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উচিত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে জড়িত শিল্পের ওপর বেশি গুরুতারোপ করা। এসব খাতে যত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে তত বেশি ভূমিকা পালন করা সম্ভব হবে।
পুনর্গঠন কাজের উদাহরণ হিসেবে চীনের ইস্পাত শিল্পসংশ্লিষ্ট দু'টি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান উকাং গ্রুপ ও বাওকাং গ্রুপের পুনর্গঠন সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এটা ২০১৬ সালে চীনের কেন্দ্রীয় উদ্যোগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠনের প্রথম কাজ। উত্পাদনের পরিমাণের দিক থেকে হিসেব করলে দু'টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের পর বার্ষিক উত্পাদন ক্ষমতা কমপক্ষে ৬ কোটি টন হতে পারে, যা চীনের অপরিশোধিত ইস্পাতের মোট পরিমাণের ৭.৬ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
(সুবর্ণা/তৌহিদ)