আসলে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন চাং রুই দেখতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালেই। তখন ওয়েবসাইটে যে-কোনো নতুন জিনিস চাং রুইকে আকর্ষণ করত। তিনি বলেন, '১৯৯৮ সালে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হয়। ১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল ছিল চীনের ইন্টারনেট উন্নয়নের প্রথম সময়কাল। তখনই আমি ওয়েবসাইটসম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখা শুরু করি।'
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর চাং রুই মর্গান স্ট্যানলেতে কাজ শুরু করেন। তিনি সেখানে কাজ করে নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করেন। ২০০৬ সালে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি বলেন, 'প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার বৃহত্তম দু'টি খরচ হল অফিস ভাড়া ও কর্মীদের বেতন। ২০০৬ সালে বেইজিংয়ে অফিস ভাড়া বেশি ছিল না। এক রুমের একটি অফিসের ভাড়া প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার ইউয়ান ছিল। আর একজন প্রকৌশলীর প্রতি মাসের বেতন ছিল মাত্র ৫-৬ হাজার ইউয়ান। কিন্তু বর্তমানে দুই খাতেই খরচ অনেক বেড়েছে।'
২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে চাং রুই একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। চার বছরে তিনি ৩০ জনেরও বেশি কর্মী নিয়ে একটি দল গঠন করেন। কিন্তু ২০১০ সালে তিনি নতুন ব্যবসা শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।
এ সময় চীনে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং পরিপক্ক হয়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে প্রচুর উপাত্ত ব্যবহৃত হয়। সেজন্য ব্যবহারকারী ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ উপাত্ত নতুনভাবে গুরুত্ব পেতে শুরু করে।
চাং রুই এ সুযোগে মোবাইল ফোনে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং উন্নয়নের দিকে মন দেন। আগে কোনো প্রতিষ্ঠান তার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন রেডিও, টিভি বা সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচার করতে পারতো। কিন্তু মোবাইল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে একটি প্রতিষ্ঠান সরাসরি নিজের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন বিনামূল্যে ভোক্তাদের মধ্যে প্রচার করতে পারে। এ সম্পর্কে চাং রুই বলেন, 'আমাদের উচিত ভোক্তা ও সম্ভাব্য ভোক্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। এরপর শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজেই হয়ে উঠবে একটি গণমাধ্যম। আমাদের মূল কাজ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোভাবে পণ্য বা সেবা বিপণনে সাহায্য করা।'
চাং রুই ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানের বিপণন কাঠামো পরিবর্তন করেন। তিনি ২০১১ সালে নিজের কোম্পানির ব্যবসা কাঠামোও পরিবর্তন করেন। বর্তমানে শিছু'তে প্রায় এক হাজার কর্মী কাজ করেছেন। এ কোম্পানি বিভিন্ন বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিচ্ছে। এ সম্পর্কে চাং রুই বলেন, 'সোশ্যাল গণমাধ্যম অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। এখানে ব্যবহারকারীদের ভূমিকা দিন দিন বাড়বে। তাই এ ক্ষেত্রটি আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আমি মনে করি, আমাদের জন্য বৃহত্তম চ্যালেন্ঞ্জ হল ভুল কমানো। কারণ, ভুল বেশি হলে অন্য প্রতিষ্ঠান আমাদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে। আসলে আমরা এখন বেশ চাপের মধ্যে কাজ করি। তবে, আমরা চাপকে ভয় পাই না।'