20160724yinyue.mp3
|
এখন আপনারা 'কিস দ্য রেইন'নামক পিয়ানো সুর শুনছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সুরকার ইরুমা সুরটি করেছেন। একদিন রাতে অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে মোবাইল ফোনে প্রথম বার এ সুর শুনি। সুর শুনে আমার মন শান্ত হয়, শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এ সুরটি অবশ্যই আপনাদের শোনাব। ইরুমা জানান, এক তারাভরা রাতের হঠাৎ বৃষ্টি তাকে এ সুর সৃষ্টি করতে অনুপ্রাণিত করেছে। শুনুন তাহলে সুরটি।
বন্ধুরা, চীনে বৃষ্টি সম্পর্কিত অনেক গান ও কবিতা আছে। কবিতাগুলোর মধ্যে 'বৃষ্টির গলি' নামে কবিতা আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। কবিতাটি এমন: 'আমি ছাতা নিয়ে একা একাই লম্বা ও সরু গলিতে হাঁটছিলাম। আমি লাইলাকের মতো মেয়ের সঙ্গে মিলিত হতে চাই। তার আছে লাইলাকের মতো রং, লাইলাকের মতো সুগন্ধ আর লাইলাকের মতো বিষণ্ণতা। সে আমার মতোই এ বৃষ্টিভেজা গলিতে কাগজ দিয়ে তৈরি ছাতা নিয়ে একা একাই নীরবে হাঁটছিল। সে আমার কাছে আসে, আবার স্বপ্নের মতো চলে যায়।'
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন 'বৃষ্টিপাত' শীর্ষক গান। এ গানের কথা লিখেছেন সিয়াও মেই, সুর করেছেন হুয়াং লিয়াং শেংএবং গেয়েছেন লিয়াং ইয়োং ছি। গানটি শুনে আপনারা বৃষ্টির দিনে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করতে পারেন।
বন্ধুরা, বৃষ্টি নানা ধরণের আছে। কিন্তু আপনারা কখনো ফুলের পাপড়ির বৃষ্টি দেখেছেন? ভেবে দেখুন, কী রোমান্টিক দৃশ্য হবে। যদিও বাস্তবে এমন বৃষ্টি দেখার সুযোগ নেই, কিন্তু আমরা 'ফুলের পাপড়ির বৃষ্টি' শীর্ষক গানটি ঠিকই শুনতে পারি। এটি ছিল গায়ক থোং আন গের ১৯৯০ সালে প্রকাশিত একই নামের অ্যালবামের প্রধান গান। গানে বলা হয়েছে: 'একজনকে কতোদিন ভালোবাসা যায়? মনের ব্যথার সীমানা কোথায়? আমার প্রেম বাতাসের মধ্যে হারিয়েছে। ফুলের পাপড়ির বৃষ্টি আমার পিছনে পড়েছে।'
বন্ধুরা, কাসকাদেস হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ব্যান্ডদল। এ দলের নাম হয়তো অনেকেই শোনেননি। তবে 'রিদম অফ দ্য রেইন' গানটি আপনারা অনেকেই শুনে থাকবেন। তাই না? যারা শোনেননি, তারা এখন শুনুন। আর যারা শুনেছেন, তারা আবার শুনুন। এমন গান বার বার শুনতে হয়।
এ বছর চীনের অনেক জায়গায় মূষলধারে বৃষ্টি পড়ে বন্যা হয়েছে। পত্রিকা বা ইন্টারনেটে নানা অঞ্চলের বৃষ্টির খবর পাই। তখন মনে মনে ভাবি, বৃষ্টি কেন থামে না! একটানা বৃষ্টি পড়লে শুধু যাতায়াতের কষ্ট হবে তা নয়, বরং নানা আর্থিক লোকশানও ঘটে। কিন্তু বৃষ্টির দেবতা আমাদের কথা শোনেন না।
চাং ইয়ু
বন্ধুরা, এখন শুনুন 'বৃষ্টি একটানা পড়ছে' শীর্ষক গান। গেয়েছেন চাং ইয়ু। গানের কথা লিখেছেন তার স্ত্রী শি ই লাং। গানের সুর করেছেন চাং ইয়ু নিজেই।
বৃষ্টি আর মেঘ সবসময় একসাথে থাকে। যখন আমরা আকাশে কালো মেঘ দেখি, তখন বুঝা যায় বৃষ্টি আসবে। চীনারা বৃষ্টিতে ভিজে অভ্যস্ত না। গ্রীষ্মকালেও আমাদের ব্যাগের মধ্যে ছাতা থাকে। সূর্যালোক বেশি হলে ছাতা খুলে রোদ প্রতিরোধ করি। বৃষ্টি পড়লেও ছাতা খুলি। ভুলে ছাতা না আনলে, বৃষ্টির সময় অবশ্যই তিনি দ্রুত বাসায় ফিরবেন বা অন্য কোনো স্থানে আশ্রয় নেবেন।
আচ্ছা, বন্ধুরা, এবার শুনুন আরেকটি গান। গানের নাম 'বাতাসের মধ্যে বৃষ্টির মেঘ আছে'। গেয়েছেন মাং টিয়াং ওয়েই। তিনি তাইওয়ানের একজন গায়িকা। ১৯৯৫ সালে তিনি প্রথম চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন কেন্দ্রের আমন্ত্রণ পেয়ে বসন্ত উত্সবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে যান। সে অনুষ্ঠানে তিনি এ গান গেয়েছেন।
মাং টিয়াং ওয়েই
তিনি গেয়েছেন: 'বাতাসের মধ্যে বৃষ্টি দিয়ে তৈরি মেঘ আছে। এ মেঘের মনে বৃষ্টি-ই বৃষ্টি। বৃষ্টির প্রতি ফোটা পানি সবই তুমি। যখন আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে, তখন সে মেঘ অবশ্যই আছে। যখন আমি তোমার কথা মনে করি, সে মেঘকেও দেখতে পাই।'
বন্ধুরা, নাটক বা সিনেমায় যখন চরিত্রের মন খারাপ, বা কোন দুঃখজনক ঘটনা ঘটে, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে আকাশে কালো মেঘ আসে, বজ্রপাত হয়, বৃষ্টি পড়ে। বৃষ্টি যেন আকাশের অশ্রু। কিন্তু আপনি লক্ষ্য করেছেন, বৃষ্টির পর সূর্যালোক আরো বেশি সুন্দর? কেবল বৃষ্টির পরই রংধনু দেখা যায়। এটা মানুষের জীবনের মতো; দুঃখের পরে সুখ।
বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষে শুনুন 'সূর্যালোক সবসময় ঝড়বৃষ্টির পর আসে' শীর্ষক গান। গেয়েছেন সুই মেই চিং। তিনি গেয়েছেন: 'কেবল ঝড়বৃষ্টি অতিক্রম করার পর সুন্দর রংধনু দেখা যায়। বৃষ্টির পর পৃথিবী আরও বেশি টাটকা ও সুন্দর হয়। ভোরে আগে থাকে অন্ধকার। ঝড়বৃষ্টি না থাকলে, কীভাবে বোঝা যেত যে সূর্যালোক কতটা উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়?'
বন্ধুরা, এতোক্ষণ আপনারা চীন আন্তর্জাতিক বেতারের 'সুর ও বাণী' আসর শুনলেন। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের কোনো মতামত থাকলে আমাকে ইমেইল লিখে অথবা ফেসবুকে মন্তব্য লিখে জানাবেন। আমার ফেসবুকের আইডি 'আনন্দি ইয়ু'।
বন্ধুরা, আজ তাহলে এ পর্যন্তই। এ অনুষ্ঠানটি শোনার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে। (ইয়ু/আলিম)