কুল খাওয়ার সময় ৭ বিষয়ে সাবধান
  2016-07-10 18:36:41  cri

কুল আমাদের নিত্যদিনের এক সাধারণ খাবার, অনেকেই তাকে খেতে পছন্দ করেন। কুল খেলে শরীরে রক্ত তৈরি হয়, রক্তের ঘাটতি পূরণ হয়। আপনি জানেন? কুলের সাথে কিছু খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে পুষ্টিগুণ আরও বাড়াবে। তবে কিছু খাবারের সাথে মিশিয়ে কুলের কার্যকারিতা কমে যাবে। সেজন্য কুল খাওয়ায় কি কি সাবধান করা উচিত?

সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে কুল খাওয়ার ৭টি বিষয় সাবধানতার কথা উল্লেখ করা হয়। আজকের 'জীবন যেমন' অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

শসা বা গাজরের সাথে মিশিয়ে খাবেন না।

শসা বা গাজরের সাথে মিশিয়ে কেন খেতে পারেন না, এখন বুঝিয়ে দিচ্ছি। শসা ও গাজরের মধ্যে এসিড এনজাইম পদার্থ আছে, যা কুলের সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ পদার্থ কুলের ভিটামিনের গুণ নষ্ট করতে পারে। এভাবে কুলের পুষ্টিকর মূল্য হ্রাস হয়।

অতিরিক্ত কুল খাবে না

আমরা জানি, কোনো কোনো খাবার অতিরিক্ত খেলে শরীরে কোনো লাভ নেই। কথাটি কুল খাওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রতিদিনে কুল খাওয়ার পরিমান ৫০ গ্রামের মধ্যে রাখুন। ডায়াবেটিস রোগীরা কুল খেতে সাবধান। কারণ কুলের মধ্যে চিনির পরিমান বেশি। সাবধান না হলে আগের অবস্থা আরও গুরুতর হবে। সাধারণ মানুষদের জন্য বেশি খেলে পাকস্থলী প্রসারণ সমস্যা হয়।

গরম পানিতে সিদ্ধ করবে না

কুল ৮০ সেলসিয়াস গরম পানিতে সিদ্ধ করলে কুলের ভিটামিন সি তো নষ্ট হয়ে যাবে। টাটকা কুলের জন্য পরিষ্কার করে শুধু পানি দিয়ে ধোয়া যথেষ্ট। প্রতিদিনে ৫ ও ৮টি কুল খেলে শরীরের জন্য খুব তা ভালো।

রক্ত শূন্যতা শুধু কুল খেলে যথেষ্ট নয়।

কুলের মধ্যে প্রচুর লৌহ পদার্থ রয়েছে। যাদের রক্ত ঘাটতি লৌহর পরিমান অভাবের কারণে হয়, তাদের জন্য কুল খাওয়া একটি ভাল উপায়। তবে শুধু কুল খেলে রক্তপূরণ হয় না। এতে আপনি raisins, longanসহ কিছু খাবারের সাথে মিশিয়ে খেলে রক্তপূরণ সমস্যা ভাল হয়ে যাবে।

কুল খাওয়ার পর শীঘ্রই উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন না

কুল খাওয়া শেষে সরসরি উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার খাবেন না। যেমন সী ফুড ও দুধ জাতীয় খাবার। কারণ এই দুটো রকমের খাবারের মধ্যে প্রচুর প্রোটিন আছে। সঙ্গে ভিটামিন সি খেলে সহজেই শরীরে প্রোটিন জমে থাকার ঝুঁকি থাকে। সে জন্য কুল খাওয়ার ১ বা ২ ঘন্টা পর উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে পারেন।

জ্বর প্রতিরোধক ওষুধ খেলে কুল খাওয়া যাবে না

যদি আপনার জ্বর হয়, তাহলে জ্বর প্রতিরোধক ওষুধ খাওয়ার পরে কুল খাওয়া ঠিক নয়। তা হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে।

পাকস্থলীর সমস্যা সমাধানের ওষুধ খেলে কুল খাবেন না

পাকস্থলী প্রদাহ হলে এর প্রতিরোধক ওষুধের সঙ্গে কুল খাওয়া যায় না। কারণ এগুলো ওষুধ হজমের জন্য সহায়ক। কুলে খেলে উল্টা ভূমিকা পালন করবে।

এখন কুলের পুষ্টিগুণ নিয়ে কথা বলবো।

কুলের পুষ্টিগুণ : প্রতি ১০০ গ্রাম কুলে রয়েছে খাদ্যশক্তি-৭৯ কিলো ক্যালরি, শর্করা-২০ দশমিক ২৩ গ্রাম, আমিষ- এক দশমিক দুই গ্রাম, জলীয় অংশ-৭৭ দশমিক ৮৬ গ্রাম, ভিটামিন এ-৪০ আইইএ, থায়ামিন-শূন্য দশমিক শূন্য দুই মিলিগ্রাম, রিবোফ্লোবিন শূন্য দশমিক শূন্য চার মিলিগ্রাম, নিয়াসিন শূন্য দশমিক ৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ৬-শূন্য দশমিক শূন্য ৮১ মিলিগ্রাম, ভিটামিনসি-৬৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম-২১ মিলিগ্রাম, লোহা-শূন্য দশমিক ৪৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম-১০ মিলিগ্রাম, ম্যাংগানিজ-শূন্য দশমিক শূন্য ৮৪ মিলিগ্রাম, ফসফরাস-২৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম-২৫০ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম- তিন মিলিগ্রাম, জিংক-শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ মিলিগ্রাম।

পুষ্টিগুণের জন্য কুলতো খাবেনই। আরও একটা কারণে কুল খেতে পারেন, তাহলো এটি দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

(ওয়াংহাইমান উর্মি/মান্না)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040