বেইজিংয়ে চীন-রুশ শীর্ষনেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত
  2016-06-26 21:25:54  cri


গত ২৫ জুন বেইজিংয়ে বৈঠক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দু'নেতা 'চীন-রাশিয়া যৌথ বিবৃতি', 'বৈশ্বিক কৌশলগত স্থিতিশীলতা জোরদারসংক্রান্ত যৌথ বিবৃতি' এবং 'তথ্য, ইন্টারনেট ও মহাকাশ উন্নয়ন সমন্বয়সংক্রান্ত যৌথ বিবৃতি'তে স্বাক্ষর করেছেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন জোরদার, অর্থ-বাণিজ্য, অবকাঠামো, কৃষি, জ্বালানি এবং গণমাধ্যমসহ ত্রিশটিরও বেশি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

২৫ জুন বিকেলে বেইজিংয়ের মহাগণভবনের পূর্ব গেটের বাইরের মহাচত্বরে তোপধ্বনির আওয়াজের পর বেজে ওঠে রাশিয়ার জাতীয় সংগীত। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন সফররত রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য এই মনোজ্ঞ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। তাশখন্দে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষসম্মেলনে উপস্থিত থাকার পর তারা দু'জন বেইজিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বৈঠক করেন।

চলতি বছর 'চীন-রাশিয়ার সুপ্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা চুক্তি'র ১৫তম বার্ষিকী এবং চীন ও রাশিয়ার কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দুই দশক পূর্তি। পুতিনের এ সফর দশ-বারো ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফর হলেও, দু'পক্ষের ব্যস্ততম বৈঠকের পাশাপাশি চুক্তি স্বাক্ষরের ১৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সি চিন পিং গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জোর দিয়ে চীন ও রাশিয়ার কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা জোরদারের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, 'আমি ও প্রেসিডেন্ট পুতিন মনে করি, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি জটিল ও পরিবর্তনশীল হলেও, চীন ও রাশিয়ার কৌশলগত সহযোগিতার মনোভাব এবং বংশানুক্রমিক বন্ধুত্বের ধারণা লালন করা উচিত, পরস্পরকে সমর্থন করা উচিত, রাজনৈতিক ও কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা বাড়ানো উচিত এবং এভাবে দু'দেশের সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক গভীরতর করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বাস্তব সহযোগিতা ও স্বার্থ সৃষ্টি করা, বিশেষ করে দু'দেশের উন্নয়ন কৌশলকে সংযুক্ত করা এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' এবং ইউরোপ-এশিয়ার অর্থনৈতিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা জোরদার করা, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যাপক অগ্রসর করা এবং বিশ্ব অর্থনীতির কঠিন অবস্থা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মাধ্যমে দু'দেশের অর্থনীতির সুষ্ঠু উন্নয়ন বজায় রাখা সম্ভব।'

এদিন চীন ও রাশিয়ার সাত জন উপপ্রধানমন্ত্রী দুই শীর্ষনেতার কাছে সহযোগিতা ব্যবস্থার কাঠামোতে দু'পক্ষের জ্বালানি, বিনিয়োগ, সংস্কৃতি এবং চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের সহযোগিতা-সংক্রান্ত কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন। বৈঠকের পর দুই সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো দূরপাল্লার বিশাল আকারের যাত্রীবাহী বিমান প্রকল্প, বেসামরিক উন্নতমানের ভারী হেলিকপ্টার গবেষণা প্রকল্প, রাশিয়ায় চীনা মুদ্রা রেনমিনপির লেনদেন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন।

এ দিনের বৈঠকে পুতিন দু'দেশের সার্বিক সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়নের উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া বাণিজ্য, জ্বালানি, উচ্চ প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে চায় এবং ইউরোপ-এশিয়ার অর্থনৈতিক ইউনিয়ন ও রেশম পথ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে।

বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উত্তপ্ত বিষয়গুলো নিয়েও দু'দেশের শীর্ষনেতারা আলোচনা করেন।

সি চিন পিং বলেন, 'দৃঢ়তার সাথে আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা রক্ষা করা হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা ও রাজনৈতিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রীয় মতভেদ ও আঞ্চলিক সমস্যা সমাধান করতে হবে। আমরা বলপ্রয়োগ করে ভয় দেখানো, শাস্তি আরোপ করা, একতরফা নীতিতে জেদ দেখানো বা সংশ্লিষ্ট পক্ষকে না জানিয়ে একপেশে তত্পরতার বিরোধিতা করি। আমরা অব্যাহতভাবে সহযোগিতা ও সকলের কল্যাণের জন্য নতুন ধরণের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালাবো।'

(ইয়ু/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040