ঘুমের আগের যে সব কৌশল আপনাকে তরুণ রাখতে সহায়ক
  2016-06-19 13:17:52  cri

কেমন আছেন আপনারা? জীবন কেমন চলছে? মনের আনন্দ বা দুঃখ হোক না কেন, আমাদের উচিত হাসিখুশি চেহারায় নিজের জীবন কাটানো।

হ্যাঁ, আধুনিক জীবনে বিভিন্ন রকমের চাপের সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। মানসিক ও শারীরিক চাপ থাকার কারণে আমাদের শরীরে সম্ভবত আসতে পারে ত্বকের ভাঁজ ও চোখের নীচে কালো দাগসহ বিভিন্ন সমস্যা। অনেকে বলেন যে, তারুণ্য বজায় রাখতে কত ভাল ভাল বা মূল্যবান ক্রিম ব্যবহার করেও ত্বকের সমস্যা দূর করা যায় না।

সুতরাং রাত জাগা বা ধূমপানসহ বদঅভ্যাসগুলো এড়াতে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। এসব দিকে খেয়ার না করলে, আপনার শরীরের অবস্থা কত ভালই হোক বা ত্বকের গুণগত মান যতই ভাল থাকুক আপনার তারুণ্য সময়মতো চলে যাবে। এ জন্য রাত সাড়ে এগারোটার আগে ঘুমিয়ে যেতে হবে। প্রতিদিনে যথেষ্ট পানি পান করতে হবে এবং যথেষ্ট শাক-সবজি খেতে হবে। এভাবেই আমাদের তারুণ্যকে রক্ষা করা সম্ভব ।

নিঃসন্দেহ ঘুম হচ্ছে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখার সবচেয়ে ভাল উপায়। 'ঘুমের আগের তিনটি অভ্যাস আপনাকে তরুণ রাখতে সহায়ক হবে'।

আজকের 'জীবন যেমন' অনুষ্ঠানে আমরা এই তিনটি কৌশল নিয়ে আপনাদের সাথে আলাপ করবো। আমি প্রথমে আজকের প্রথম কৌশল নিয়ে কথা বলবো।

কৌশল ১ : ঘুমানোর আগে বিছানায় শুয়ে কিছু শরীর চর্চা করুন।

হ্যাঁ বন্ধুরা, ঘুমাবার আগে বিছানায় শুয়ে কিছু ছোট্ট বা সহজ শরীর চর্চা করতে পারেন। যা আমাদের শরীরকে relax করতে পারে। মানসিক সুস্থতার জন্যও তা বেশ সহায়ক। বিছানায় শুয়ে শরীর চর্চা কিভাবে করবো আমি এখন বুঝিয়ে দেবো।

প্রথমে বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে দুটো পা আস্তে আস্তে উপরে ওঠানোর চেষ্টা করুন। এই প্রক্রিয়ায় সঙ্গে সঙ্গে আপনি নিজের দুটো পা' ম্যাসেজ করতে পারেন। দুটো পা এবং পিঠ 'এল' আকৃতি করে ঠিক এই অবস্থায় তিন বা চার মিনিট রাখুন। এটি আপনার হাঁটুর নিচের অংশের অতিরিক্ত মাংস কমাতে সহায়ক।

এই প্রক্রিয়া শেষ হলে আপনি আবারও বিছানায় আরাম করে শুয়ে থাকুন। পরের প্রক্রিয়া হলো পৃথক পৃথকভাবে নিজের দুটো পা ৯০ডিগ্রী, ৪৫ ডিগ্রী ও ৩০ ডিগ্রী অবস্থানে রাখুন। এ অবস্থায় প্রতি ডিগ্রীর অবস্থানে থেমে থাকবেন ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট করে। এই গোটা প্রক্রিয়া আপনার উরুর অতিরিক্ত মাংস কমাতে সহায়ক।

উর্মিকে তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এখন আমি দ্বিতীয় কৌশল সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি।

কৌশল ২ : মাথায় হাতের আঙ্গুল দিয়ে চিরুনির মতো আচঁড়ানো।

আমরা জানি, মাথায় শরীরের বেশ গুরুত্বপূর্ণ আকুপাংচার বিন্দু রয়েছে। চুল আচঁড়ানোর মাধ্যমে যে ম্যাসেজ করা হয় তা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। এখন আমি গোটা প্রক্রিয়াটি সবাইকে বুঝিয়ে দেবো।

প্রথমে চিরুনি দিয়ে মাথা আচঁড়ানো শুরু করুন। কপাল থেকে পেছন দিকে আচঁড়ান। জোড়ে জোড়ে আচঁড়াবেন না। যাতে যথেষ্ট আরাম লাগে এমনভাবে আচঁড়ান।

তারপর হাতের আঙ্গুল দিয়ে চিরুনির মতো কাজ করুন। তবে এই প্রক্রিয়ায় কপাল হচ্ছে চূড়ান্ত দিক। আপনি আঙ্গুল দিয়ে কান ও ঘাড়ের দিকের চুল টেনে নিয়ে কপালের দিকে আচঁড়ানো শুরু করুন। এই প্রক্রিয়া অবিরামভাবে ৩০ বার করুন। মাথায় যখন অসাড় অনুভুতি হবে তখন প্রক্রিয়াটি শেষ করুন। এই গোটা প্রক্রিয়া আমাদের মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য সহায়ক। এ ছাড়া, এটি স্মৃতি শক্তি বাড়ানো, চুল রক্ষা এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।

মান্না আপুকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এখন আমি তৃতীয় কৌশল অর্থাত্ আজকের অনুষ্ঠানের শেষ কৌশলটি নিয়ে আলোচনা করবো বন্ধুরা।

কৌশল ৩ : উষ্ণ গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখা।

শরীরের মধ্যে পা হচ্ছে আমাদের হার্ট বা হৃদপিন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি দূরের অঙ্গ। পায়ে অক্সিজেন ও রক্তের পরিমান পূরণ করা বেশ কঠিন বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে শীতকালে ঠান্ডার কারণে পায়ে রক্তপ্রবাহ হয়তো সুষ্ঠুভাবে চালতে পারে না। পরে পা ও হাত স্পর্শ করলে কেমন শীতল লাগে ।

পা হচ্ছে শরীরে আকুপাংকচার বিন্দু বেশি থাকা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি পায়ে রক্ত চলাচল যথেষ্ট না হয়, তাহলে লিভার ও কিডনিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক চলাচলে প্রভাব পড়বে। সুতরাং, ঘুমানোর আগে উষ্ণ গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন। এটি শরীরের সুষ্ঠু রক্তপ্রবাহকে এগিয়ে নেওয়া ও দেহে সজীব উপাদানের রসায়নিক পরিবর্তন জোরদার করতে সহায়ক হবে।

পা ধোয়ার টাবে চীনা ঐতিহ্যবাহী ঔষধ মিশিয়ে নিলে তার কার্যকারিতা আরও বাড়বে। পায়ে বেশি আকুপাংকচার বিন্দু থাকার কারণে আপনি পানিতে চীনা ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন chrysanthemum, Wormwood ও Prunella। এসব ওষুধ পানিতে ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনার কোমড় ও পায়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে এবং মাথাঘোরা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

(ওয়াংহাইমান উর্মি/মান্না)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040