হ্যালো চায়না: ২১. লেখার ব্রাশ
  2016-05-30 09:37:32  cri

কলম, কালি, কাগজ ও ইয়ানথাই প্রাচীনকালে চীনা পণ্ডিতদের অধ্যয়ন কক্ষের চারটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় জিনিস। এগুলো তাদের সাংস্কৃতিক জীবনেরও অংশ। প্রথমটি হলো লেখার ব্রাশ। বাঁশ বা প্রাণীর হাড় দিয়ে তৈরি হয় লেখার ব্রাশের ধারক। ছাগল, খরগোশ বা নেকড়ের লোম বেঁধে ব্রাশের পয়েন্ট তৈরি করা হয়। লেখার ব্রাশ ঐতিহ্যিক হস্তলিপিশিল্প ও চীনের পেইন্টিংয়ের প্রধান ব্যবহারকারী যন্ত্রপাতি।

লেখার ব্রাশগুলো ২০০ টিরও বেশি ধরনের হয়ে থাকে। বিভিন্ন সাইজ অনুযায়ী 'তাখাই', 'চোংখাই'আর 'সিয়াওখাই'কে ভাগ করা হয়। তৈরির কাঁচামাল অনুযায়ী 'জিহাও' আর 'লাংহাও' সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। 'জিহাও' বেগুনী রঙয়ের খরগোশের লোম দিয়ে তৈরি করা হয়, 'লাংহাও' বেজির লোম দিয়ে তৈরি করা হয়। নানা ধরনের লেখার ব্রাশ দিয়ে লেখা চীনা অক্ষরের স্টাইলও বিভিন্ন রকমের হয়। লেখার ব্রাশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রশ্ন উঠতে পারে, কে এটি আবিষ্কার করেছেন?

কথিত আছে প্রাচীনকালের ছিন রাজবংশের এক জেনারেল মেংথিয়ান লেখার ব্রাশ আবিষ্কার করেন। একদিন তিনি কয়েকটি খরগোশ শিকার করলেন এবং দেখলেন একটি খরগোশের লেজ মাটিতে আঁকাবাঁকা চিহ্ন তৈরি করেছে। হঠাৎ তিনি ভাবলেন যে, খরগোশের লেজ দিয়ে কলম তৈরি করা যেতে পারে। ফলে তিনি খরগোশের লেজ কেটে বাঁশের খাঁজে ঢুকিয়ে দিলেন, বিশ্বের প্রথম লেখার ব্রাশটি এভাবেই তৈরি হলো। প্রাণীর লোম আর্দ্রতা শোষণ করতে সক্ষম হওয়ায় হাতে লেখার সময় কালি বেশ ধীরে ধীরে কাগজে আসে এবং লেখার সময় খুবই আলতোভাবে ছোঁয়া লাগে বলে এটি দিয়ে চীনা অক্ষর লেখা বেশ সহজ। লেখার ব্রাশ আবিষ্কারের পর চীনা অক্ষরগুলো এক নতুন শিল্পে পরিণত হয়েছে। আর এটিই হলো হস্তলিপিশিল্প।

বর্তমানে লেখার জন্য নানা ধরনের কলম ব্যবহৃত হলেও, ঐতিহ্যবাহী এ লেখার ব্রাশগুলো একজন পুরনো বন্ধুর মতো চীনাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040