হ্যালো চায়না: ১৯. কু ছিন
  2016-05-20 19:07:10  cri

চীনা বাদ্যযন্ত্র বলতে সাধারণত 'কু ছিন'কে বোঝায়। এ বাদ্যযন্ত্রটির ইতিহাস তিন হাজার বছরেরও বেশি। 'কু ছিন' হলো সাত কিছু তারের বাদ্যযন্ত্র। বিংশ শতাব্দীতে এসে চীনারা পশ্চিমা ধারার বিভিন্ন সঙ্গীত সম্পর্কে জানতে পারে। তারপরই মূলত পরিপূর্ণ 'কু ছিন' আবির্ভূত হয়। প্রথমদিকের কু ছিনে ৫টি তার ছিলো। এ ৫টি তার ধাতু, কাঠ, পানি, আগুন ও পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব করত, যা চীনা দর্শনের প্রতিফলন ঘটায়। কথিত আছে, চোও সাম্রাজ্যের সম্রাট ওয়েন বন্দী হওয়ার পর তার ছেলের অভাব বোধ করেন। তখন কু ছিনে ষষ্ঠ তারটি যোগ করা হয়। তারপর 'উ ওয়াং' যুদ্ধের সময় শাং রাজা 'জৌ ওয়াং'কে পরাজিত করলে ওই ঘটনার স্মরণে এতে আরেকটি তার যোগ দেওয়া হয়। আর এভাবেই কু ছিন সাত তারের বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়। একে তখন 'ওয়েন উ' বা সাত তারের বাদ্যযন্ত্র বলা হতো।

'বাদ্যযন্ত্র, দাবা, হস্তলিপিশিল্প ও চিত্রকর্ম হলো চীনের সাহিত্যিকদের শরীর ও মানসিক শক্তি বিকাশের চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। এর মধ্যে বাদ্যযন্ত্র সবচে গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনকালে লোকেরা বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে নতুন বন্ধু খুঁজে পেত। কোনো সুরকারের সুরকে কেউ পছন্দ করলে তাকে বলা হয় 'সুর অনুধাবনকারী' বন্ধু। অর্থাত্ খুব আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রাচীনকালে বলিদান ও বিভিন্ন উত্সব 'কু ছিন' বাজানো হত। তারপর সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৭৭ সালে চীনের 'কু ছিনে'র বাজানো সঙ্গীত ভয়েজার ১ ও ২ নভোযানের মাধ্যমে মহাকাশ থেকে সম্প্রচার করা হয়।

কু ছিনের আওয়াজ স্পষ্ট, রুচিশীল ও মার্জিত। যন্ত্রসঙ্গীত শেষ হলেও তার রেশ যেনো রয়ে যায়। ইতিহাসে আছে, হান এ নামের এক মেয়ে অর্থাভাবে গ্রাম থেকে শহরে এসেছিল। কিন্তু কোনো কাজ না পেয়ে সে শহরের মূল গেটে বসে কু ছিন বাজানো শুরু করে। হানের বাজানো বাদ্যযন্ত্রের সুর শুনে মানুষের মন আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সুর তাদের মনে গভীর ছাপ ফেলে। এভাবে কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও মানুষের মনে হানের বাজানো সুর বাজতে থাকে।

তারা তখন বলা শুরু করে যে, হানের হাতে কু ছিনের সুমধুর সুর যেনো মানুষের মনে বাজতেই থাকে দীর্ঘ সময় ধরে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040