ভূমিকম্প ঝুঁকি ও পূর্বাভাস ব্যবস্থা
  2016-09-03 18:27:40  cri



বিশ্বব্যাপী ভূমিকম্প ঝুঁকি কি? ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া কি সম্ভব? চীনে ভূমিকম্প পূর্বাভাসের কি ভূমিকা রয়েছে? আজকের অনুষ্ঠানে আমরা ভূমিকম্প এবং তার পূর্বাভাস ব্যবস্থা নিয়ে কিছু আলোচনা করব।

প্রথমেই চলুন চীনের মারাত্মক ভূমিকম্প সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

২০০৮ সালের ১২ মে, চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের ওয়েন ছুয়ানে ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। ১ লাখ বর্গকিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষয়ক্ষতি। চীনের অর্ধেক এলাকা ও এশিয়ার কয়েকটি দেশও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০০৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৯ হাজার ২২৭ জন নিহত ও ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪৩ আহত হয়। সে সময় নিখোঁজ হয় ১৭ হাজার ৯২৩ জন। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প যাতে অসংখ্য মানুষের প্রণাহানী হয়। ২০০৮ সালের ১৯ থেকে ২১ মে দেশজুড়ে জাতীয় শোক ঘোষণা করে সরকার। পাশাপাশি প্রতি বছরের ১২ মে জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চলতি জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চীনের মূল ভূভাগে মোট ৬টি ৫ মাত্রার ও তার চেয়ে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। চীনের হেই লং চিয়াং প্রদেশের লিন খো, তিব্বতের আন তো ও ছাং তু, সিন চিয়াংয়ের লুন থাই ও সিন ইউয়ান এবং ছিং হাই প্রদেশের মেন ইয়ানে ভূমিকম্প হয়।

চীনের ভূমিকম্প তথ্য কেন্দ্র (সি ই এন সি)-এর পরিচালক বান হুয়াই ওয়েন বলেন, গত দেড় মাসে, সুমাত্রা, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, জাপান ও ইকুয়েডর অঞ্চলে ৫ বার ৭ মাত্রার ও তার চেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে ৮ দিন টানা ৪ বার ৭ মাত্রার ও তার চেয়ে গুরুতর ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। যা ১৯০০ সালের পর ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা।

২০০৪ সালের পর বিশ্বব্যাপী ৮ ও তার চেয়ে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প মাঝে মধ্যেই দেখা গেছে। এ প্রবণতা অবহ্যাতভাবে চলছে। চীনের মুল ভূভাগ ও পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে ২০০১ সাল থেকে ১৫ বার ৭ ও তার চেয়ে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

বান হুয়াই ওয়েন বলেন, কোনো অঞ্চলে ভূমিকম্প হবে কি-না তা ভূতাত্ত্বিক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল।

সাধারণত ভূমিকম্পের উত্স হয় মাটির গভীরে, যা আমরা দেখতে পারি না, স্পর্শ করতে পারি না সেখানে ঘটে যাওয়ার পর তা বোঝা যায়।

তাহলে বন্ধুরা আপনি জানেন কি, কিভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া যায়?

চীনের ভূমিকম্প তথ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ভূমিকম্পের তরঙ্গ দুই রকমের হয়ে থাকে। অনুদৈর্ঘ্য এবং তির্যক। তির্যক তরঙ্গের চেয়ে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ আরও দ্রুতভাবে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছে যায়। সাধারণত ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র অনুদৈর্ঘ্য এবং তির্যক তরঙ্গ ভূপৃষ্ঠে পৌঁছার সময়ের পার্থক্য এবং তাদের গতি নিয়ে হিসাব করে জানায় যে, ভূমিকম্পটির উত্স কোথায়। তারপর পর্যবেক্ষণকেন্দ্র ভূমিকম্পের উত্সটির চারপাশে সমব্যবধানে একটি গোল চিহ্ন দিয়ে দুর্যোগ এলাকা নির্ধারণ করে। কিছু পর্যবেক্ষণের পর গোল চিহ্ন তুলে নিয়ে সেখানে সতর্কতা জারি করে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্র।

বর্তমানে চীনে ৩২টি আঞ্চলিক ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্র এবং একটি জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। তারা ১১০০টি পর্যবেক্ষণ স্টেশন থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এবং প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে। বেইজিং ও তার আশপাশের শহরে ১.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব।

বন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই এখন বুঝতে পারছেন, পর্যবেক্ষণকেন্দ্র কিভাবে কাজ করে। এরপর আমাদের মনে যে প্রশ্নটি আসে সেটি হলো, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানা সম্ভব কিনা।

আসলে গত শতাব্দীর ৬০ দশক থেকে চীনসহ বিশ্বের নানা দেশ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। তবে দুঃখের বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত এটি একটি অমীমাংসিত সমস্যা।

এ প্রসঙ্গে বান হুয়াই ওয়েন বলেন, বর্তমানে আমাদের পূর্বাভাস ক্ষমতা উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। ভূমিকম্পের প্রভাব কমানোর জন্য কিছু দেশ ভূমিকম্পের পূর্বসর্তকতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। আসলে ভূমিকম্পের পূর্বসর্তকতা জানানো মানে বড় ভূমিকম্পের পর দ্রুত এ ভূমিকম্পের উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তার কি প্রভাব পড়তে পারে তার পূ্র্বাভাস দেওয়া। আরও ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পের আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া।

বান হুয়ে ওয়েন বলেন, সংশ্লিষ্ট গবেষণা অনুযায়ী, যদি দু সেকেন্ড আগে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাহলে নিহতদের সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমে যায় এবং ৫ সেকেন্ড আগে হলে, নিহতের সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমানো সম্ভব।

চীনা ভুমিকম্পকেন্দ্র ওয়ে বো, ওয়ে সিনসহ নানা সামাজিক গণমাধ্যমের সহায়তায় সেবাব্যবস্থা চালু করেছে। ইন্টারনেটর মাধ্যমে মানুষের কাছে পাঠানো হয় ভূমিকম্পের তথ্য। অন্যদিকে, ইন্টারেনেটের উপাত্তের ভিত্তিতে আমরা সহজে উদ্ধারকাজ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

যেমন ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি ছিংহাই মেন ইউয়ানে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয় এবং তাপীয় বিশ্লেষণ ডায়াগ্রাম অনুযায়ী, এ ভূমিকম্প কেন্দ্রের চারপাশে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে মানুষের সংখ্যা ছিল খুব কম। যা ভূমিকম্প পরবর্তী জরুরি উদ্ধার ও নীতি নির্ধারণে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়েছিল।

বন্ধুরা চলুন, এবার বিশ্বের বড় ধরনের ১০টি ভূমিকম্প নিয়ে সংক্ষেপে জেনে নেই। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান সম্প্রতি রিখটার স্কেলের মাত্রার ভিত্তিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভূমিকম্পের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

১. চিলি, ২২ মে ১৯৬০: মাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫

এটাকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে দেখা হয়। রিখটার স্কেলে ৯ দশমিক ৫ মাত্রার এ ভূমিকম্পে চিলিতে মারা গিয়েছিল চার হাজার ৪৮৫ মানুষ। আহত হয়েছিল ২০ লাখের বেশি। ১৯৬০ সালে লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির দক্ষিণাঞ্চলে এই শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এই ভূমিকম্পে পুয়ের্তো সাভেদ্রা নামে একটি সমুদ্রবন্দর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই ভূমিকম্পের ফলে সাগরে সুনামির সৃষ্টি হয়।

২. প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ড, আলাস্কা, ২৪ মার্চ ১৯৬৪ : মাত্রা—৯ দশমিক ২

এই ভূমিকম্পের ফলে আলাস্কায় ভয়ংকর ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছিল। এতে সাগরে সুনামিরও সৃষ্টি হয়। মৃতের সংখ্যা ছিল ১২৮ জন আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার।

৩. উত্তর সুমাত্রার পশ্চিম উপকূল, ২৬ ডিসেম্বর ২০০৪ : মাত্রা—৯ দশমিক ১

ভূমিকম্পের সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার একটা সম্পর্ক রয়েছে, এটাই সুনামি নামে পরিচিত। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সুনামি বলা হয় ২০০৪ সালে, একটি ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পের পর। এশিয়া ও পূর্ব আফ্রিকার ১৪টি দেশে অনুভূত হয়েছিল এই ভূমিকম্প ও সুনামি। এই সুনামিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইন্দোনেশিয়া; এক লাখ ৭০ হাজার মানুষ এতে প্রাণ হারায়। অনেক মৃতদেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মৃতের সংখ্যা নিরূপণ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ইন্দোনেশিয়ার মৎস্য শিল্প ও কারখানার প্রায় ৬০ শতাংশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় এই সুনামিতে।

৪. কামচাটকা, ৪ নভেম্বর ১৯৫২ : মাত্রা—৯

রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আঘাত হেনেছিল শক্তিশালী এই ভূমিকম্প। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল সুনামি। কামচাটকা উপদ্বীপ ছিল এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। তিন হাজার মাইলজুড়ে অনুভূত হয়েছিল এই ভূকম্পন, যা রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অনুভূত হয়েছিল। তবে এই ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পেরু ও চিলিতেও আঘাত হেনেছিল এই ভূমিকম্প।

৫. আরিকা, পেরু (বর্তমান চিলি), ১৩ আগস্ট ১৮৬৮ : মাত্রা—৯

প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট এই ভূকম্পন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত অনুভূত হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার আরেকুইপা শহর। সেখানে মারা যায় ২৫ হাজার মানুষ। বলিভিয়ার লা পাজ শহরেও অনুভূত হয়েছিল ভূকম্পন। প্রথম আঘাত হানার চার ঘণ্টা পর ভূমিকম্পটির আফটার শক আঘাত হানে সমুদ্রে। এতে ১৬ মিটার উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়েছিল সৈকতে।

৬. যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল, ২৬ জানুয়ারি ১৭০০ : মাত্রা—৯ (আনুমানিক)

অনেক আগের এই ভূমিকম্পের কোনো দালিলিক প্রমাণ না থাকলেও উত্তর আমেরিকার বাসিন্দারা মুখে মুখে শুনেছেন এই ভূমিকম্প এবং তার ক্ষয়ক্ষতির কথা। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্প মনে করা হয় এটিকে।

৭. চিলি, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ : মাত্রা—৮ দশমিক ৮

সপ্তদশ শতক থেকেই চিলিতে ছোট-বড় ভূমিকম্প অনুভূত হয়ে আসছে। ২০১০ সালের এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারান ৫২১ জন মানুষ। আহত হন অন্তত ১২ হাজার। আট লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।

৮. ইকুয়েডরের উপকূল, ১৩ জানুয়ারি ১৯০৬ : মাত্রা—৮ দশমিক ৮

ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ার সমুদ্র উপকূলে সৃষ্ট এই সুনামিতে মারা যায় পাঁচ শতাধিক মানুষ। আহত হয় আরো দেড় হাজার। মধ্য আমেরিকা ও সানফ্রান্সিসকোতেও অনুভূত হয় এই ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের প্রভাবে হাওয়াইয়ের নদীগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল।

৯. লিসবন, ১ নভেম্বর ১৭৫৫ : মাত্রা—৮ দশমিক ৭

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আঘাত হানা শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। ভূকম্পনের ফলে সৃষ্ট সুনামি এবং অগ্নিকাণ্ড পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তোলে।

১০. আসাম-তিব্বত, ১৫ আগস্ট ১৯৫০ : মাত্রা—৮ দশমিক ৬

ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে আসাম-তিব্বতের ৭০টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের আসাম প্রদেশ। এতে মারা যায় এক হাজার ৫২৬ জন মানুষ। ভূমিকম্পের পরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।

বন্ধুরা শুনছিলেন চীনের ভূমিকম্প এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু কথা। এবার আমরা শুনবো বাংলাদেশে ভূমিকম্প এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে। আমাদের সঙ্গে কথা বলতে স্টুডিওতে উপস্থিত আছেন বাংলা বিভাগের বিশেষজ্ঞ তৌহিদ।

বাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলছেন যেকোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানবে। রাজধানী ঢাকার আশপাশে বড় মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে ঢাকা মহানগরীর।

যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছে আর্থ অবজারভেটরি। ভূমিকম্পের প্রবণতা নিয়ে ২০০৩ সাল থেকে গবেষণা করছেন অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার। তার গবেষণা মডেল বলছে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান এবং বার্মা তিনটি গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। তিনি জানান, বাংলাদেশের দুই দিকের ভূ-গঠনে শক্তিশালী ভূমিকম্পের শক্তি জমা হয়েছে।

ভূমিকম্প সহনীয় নিরাপদ অবকাঠামো তৈরি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা করছে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগ। এ বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী জানা বলছেন, ঢাকা শহরে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় রয়েছে চার লাখের বেশি ভবন। রাজউক এলাকায় যে সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি যার অধিকাংশই ভূমিকম্প সহনীয় নয়।

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ঢাকা মহানগরীতে বড় ভূমিকম্প ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।

বুয়েটের সঙ্গে যৌথভাবে সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি সিডিএমপির এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে। যেখানে তৈরি হবে সাত কোটি টন কনক্রিটের স্তুপ।(শিশির/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040