রোস্টের বিভিন্ন পর্যায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কফি বিন এক কাপ সুস্বাদু কফিতে পরিণত হবে কি না, তা নির্ভর করে রোস্টের বিভিন্ন পর্যায়ের ওপর। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'কফি বিন রোস্টের বিভিন্ন পর্যায় ক্ষেতে কফি উত্পাদনের চেয়েও জটিল ও মজাদার। এ কাজটি চ্যালেঞ্জিং। রোস্টের সময় কম হলে কফির স্বাদ হবে ফলের মতো, মধ্য পর্যায়ের হলে স্বাদ হবে বাদামের এবং আরও গভীর হলে চকোলেটের স্বাদ হবে। আমরা কফির স্বাদ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।'
বহু বছর ধরে কফিসম্পর্কিত কাজ করছেন চা রং। তার অভিজ্ঞতা কফি মহলে স্বীকৃতি পেয়েছে। বেইজিংয়ে কাজ করার সময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কফি কোম্পানি ও পেশাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে পরিচিতির মাধ্যমে তিনি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ২০১১ সালে চাং রং আবিস্কার করেন যে, ছিং দাও'র নাগরিক বেইজিং ও শাংহাই'র চেয়ে কফিসম্পর্কিত জ্ঞান কম রাখেন না। সেজন্য তিনি ছিংদাওতে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি 'ফিশার কফি' নামক একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
সাধারণ সুপারমার্কেটে কফি বিনের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে। 'ফিশার কফি' প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে ভোক্তাদের বিভিন্ন স্বাদের কফি খাওয়ানোর চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি দাঁড় করাতে চা রংকে বিভিন্ন চ্যালেন্ঞ্জও মোকাবিলা করতে হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'বিগত কয়েক বছরে চীনের কফিবাজার দ্রুত উন্নত হয়েছে এবং এ ধারা অব্যাহত আছে। কিন্তু আগে আমাদের ব্যবসার পরিবেশ ভাল ছিল না। চীনে কফিবাজারে এখনো অনেক অসুবিধা রয়েছে। আমরা এ পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে চাই। আমি এ বাজারে কিছু অবদান রাখতে ইচ্ছুক।'
ফিশার কফি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর ওয়েবসাইটে বিক্রির পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। ২০১৫ সালে ফিশার কফি বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬০ টন। এক শ'রও বেশি ধরণের কফি বীন ভোক্তাদের হাতে পাঠানো হয় এসময়। পাশাপাশি চাং রং'র প্রতিষ্ঠানের আকারও দিনে দিনে বড় হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের লোকসংখ্যা ৭ জন থেকে বেড়ে ২১ জনে উন্নীত হয়েছে। 'চীনে ওয়েবসাইট ই-কমার্স দ্রুত উন্নত হচ্ছে। চীন সরকার ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিচ্ছে। আমরা বিভিন্ন ধরনের কফি বিক্রি করি এবং সঠিক সময়ে তা সরবরাহ করে থাকি।'
চাং রং আফ্রিকায় উত্পাদিত এক ধরণের কফি প্রথমবারের মতো চেখে দেখার কথা মনে রেখেছেন। তিনি ভেবেছিলেন, ভবিষ্যতে আফ্রিকায় গিয়ে সবচেয়ে তাজা কফি চাছাই করবেন এবং সেটা নিজের হাতে রোস্ট করে কফি তৈরি করবেন। ২০১৬ সালে আফ্রিকা কফি সমিতির আমন্ত্রণে তিনি জুরি হিসেবে নাইরোবির টেস্ট অব হার্ভেস্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি নাইরোবিতে ১৫ দিন অবস্থান করেন এবং সে সময় বেশ কয়েকটি কফি উত্পাদান এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় জনগণের সাথে মিশে তাদের সঙ্গে কফি পানের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
চাং রং মনে করেন চীনে উত্পাদিত কফির মান কিছুটা খারাপ। ২০১২ সালে তিনি চীনের ইউননান প্রদেশে কফি উত্পাদন এলাকায় কফি চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আগে আমি প্রতি বছর এক থেকে দু'বার ইউননানে যেতাম। কিন্তু সেখানকার কফির মান ভালো নয়। একজন পেশাদার হিসেবে আমি মনে করি, চীনে কফি চাষের প্রযুক্তি উন্নত নয়। সেজন্য আমি স্থানীয় কৃষকদেরকে উন্নত প্রযুক্তি শিখিয়েছি। এ বছর ইউননান থেকে প্রথম দফা চালান আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। মান অনেক ভাল।'
গত ১০ বছর ধরে চাং রং কফির ব্যবসা করছেন। তিনি চান চীনা কফিকে বিখ্যাত ব্রান্ডে পরিণত করতে।