গত শতাব্দীতে চীনের সাংস্কৃতিক মহলের অনেক কবি ঠাকুরের কবিতা চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। এর ফলে আরো অনেক বেশি চীনা মানুষ ঠাকুরকে জানতে পারেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতের কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। সারা জীবন ধরে তিনি বাংলা ভাষায় ব্যাপক কবিতা, উপন্যাস, নাটক ও গল্প চর্চা করেছেন।
গত ৫ বছরে চীনের অনুবাদকরা 'রবীন্দ্র রচনাবলী' চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন।
'রবীন্দ্র রচনাবলী' চীনা ভাষায় অনুবাদের প্রধান দায়িত্বশীল ব্যক্তি, ৭০ বছর বয়সী মি.পাই খাই ইউয়ান ঠাকুরের প্রায় সবগুলো কবিতা চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। তা ছাড়া, তিনি ঠাকুরের গদ্যকাব্যও চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। তিনি বলেন,
মি.পাই খাই ইউয়ান
"ঠাকুর এবং তার কবিতার মোহনীয়াশক্তি আমার অনুবাদ করার চালিকা শক্তি। বিশ্বের হাজার হাজার কবিদের মধ্যে ঠাকুর চীনকে গভীরভাবে ভালবাসার একজন কবি। তিনি চীন সম্বন্ধে অনেক কবিতা লিখেছেন। সেজন্য তার সাহিত্যকর্ম চীনা ভাষায় অনুবাদ করা আমাদের দায়িত্ব। আমি শুধু নিজের দায়িত্ব পালন করেছি।"
মি. পাই খাই ইউয়ান দীর্ঘ দিন ধরে ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম অনুবাদ করছেন। এই অনুবাদ কাজে তাকে সমর্থন ও উত্সাহ যুগিয়েছেন চীনের বিখ্যাত পণ্ডিত পিং সিন এবং জি সিয়েন লিন।
মি.পাই খাই ইউয়ানের মত ৭০ বছর বয়সী আরেকজন অনুবাদক মি. সি চিং উ ও 'রবীন্দ্র রচনাবলী' চীনা ভাষায় অনুবাদের কাজে অংশ নেন। তিনি নাটক অংশের প্রধান দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে অনুবাদের কাজ সম্পন্ন করেন। তিনি সিআরআই বাংলা বিভাগে প্রথম শ্রেণির অনুবাদক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি অনেক বার প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সফরে দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন। চীনা ভাষায় 'রবীন্দ্র রচনাবলী'র অনুবাদ সম্বন্ধে তিনি বলেন,
"ঠাকুরের উপন্যাসের কাঠামো খুবই বিবেকী। ভাষা খুবই সুন্দর। উপন্যাসে সাধারণ শ্রমিক এবং নারীদের দুঃখকষ্ট দেখা যায়। তা ছাড়া, তার উপন্যাসের মানবিক বিষয় আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। অনুবাদ করতে করতে মন যেন আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।"
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের সাবেক রাষ্ট্রদূত চিয়াং সিয়েন ইও ঠাকুরের সাহিত্যকর্মের ভীষণ ভক্ত।
তিনি বলেন,
"চীনা অনুবাদকরা ৫ বছর ধরে চেষ্টা করে ১.৬ কোটি শব্দের এ সুন্দর বইগুলো চীনা মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। তাদের এ কাজে আমি অনেক মুগ্ধ।"
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমৎকার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com।
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান (জিনিয়া/টুটুল)