বিশ্বব্যাপী 'মে দিবস' পালিত
  2016-05-02 19:12:44  cri

পয়লা মে ছিল আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস; বিশ্বের শ্রমিকদের জন্য নিবেদিত একটি বিশেষ দিন। বিভিন্ন দেশে নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে।

রাশিয়া

এ দিন রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এগুলোর মধ্যে মস্কোর শোভাযাত্রাটি ছিল সবচেয়ে বড়। মস্কো শ্রমিক সংঘ ফেডারেশন রেড স্কোয়ারে শোভাযাত্রার আয়োজন করে। মস্কোর মেয়র সার্গেই সোবিয়ানিন, মস্কো রাজ্যের শ্রমিক সংঘের প্রতিনিধিগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, প্রবীণ যোদ্ধা এবং মস্কোর প্রায় এক লাখ মানুষ এ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। তা ছাড়া, রুশ কমিউনিস্ট পার্টিসহ সে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলও মস্কোর কেন্দ্রীয় স্থানে শোভাযাত্রা ও সমাবেশের আয়োজন করে।

এ বছরের শ্রমিক দিবসে ফ্রান্সের জেনারেল শ্রমিক সংঘ এবং ফরাসি শ্রমিক শক্তি জেনারেলের মূল কাজ ছিল ফ্রান্সের শ্রম আইন সংস্কারের বিরোধিতা করা। এ দিন ফ্রান্সের শোভাযাত্রাদল প্যারিসের পূর্বাঞ্চলের বাস্তিল কারাগার থেকে রওনা হয়ে শহরের কেন্দ্রীয় স্থানের নিকটের জাতীয় মহাচত্বরে পৌঁছায়। একই দিনে রেনে, নান্তে, বর্দেউ, মাখ্‌ছেইসহ বিভিন্ন শহরেও বিভিন্ন আকারের মিছিল ও বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়।

সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় 'পয়লা মে'-র প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ভাষণ দেন। তিনি আবারও জোরালো ভাষায় শ্রমিক, পুঁজিপতি ও সরকারের মধ্য পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, এই তিন পক্ষের মধ্যে সমন্বয় হচ্ছে সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক রূপান্তরের লক্ষ্য বাস্তবায়নের মূল চাবিকাঠি। তিনি পুঁজি ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি উন্নত করা এবং সরকার ও শ্রমিক সংঘগুলোর মধ্যে সহযোগিতার তাগিদ দেন। পাশাপাশি তিনি শ্রমিকদের সক্রিয়ভাবে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজের গতি উন্নত করা ও বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলের শ্রমিক সংগঠনগুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে শ্রমিক দিবস, আয়োজন করে জনসমাবেশের। তারা সর্বনিম্ন বেতন বৃদ্ধি, ভোগকর বাড়ানোর বিরোধিতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা আইন বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। জাপানের জাতীয় শ্রমিক সংযুক্ত ফেডারেশনের প্রধান বলেন, 'যদি শিনজো আবের অর্থনৈতিক নীতি কার্যকর করা হয়, তবে শ্রমিকদের জন্য শ্রম পরিবেশ ও জীবনমান উন্নত করা যাবে না।'

থাইল্যান্ডের শ্রম মন্ত্রণালয় ও শ্রমিক সংস্থাগুলো পয়লা মে ব্যাংককের মহাচত্বরে বড় আকারের জনসমাবেশের আয়োজন করে। এসময় সমাবেশ থেকে কিছু বড় আকারের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প চালুর প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবকদের ভাষ্যমতে, এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দেশের অর্থনীতিও উন্নত হবে।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো গতকাল তার টুইটারবার্তায় সারা দেশের শ্রমিকদের 'মে দিবসের' শুভেচ্ছা জানান। তিনি আশা করেন, ইন্দোনেশীয় শ্রমিকরা প্রতিযোগিতার বাজারে আরও সক্ষমতার পরিচয় দেবে।

এ দিন শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর গল থেকে কয়েক হাজার লোক রাস্তায় নেমে আসে এবং সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনসমাবেশে অংশ নেন। শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষ্যে আলাদাভাবে বিবৃতি দেন। তারা বলেন, পরবর্তী কয়েক বছরে সরকার দেশের অর্থনীতি ও জনগণের জীবিকা উন্নয়ন এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল তথা বিশ্বে শ্রীলংকার মর্যাদা উন্নত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল-ফাতাহ আল-সিসি ২৮ এপ্রিল সে-দেশের শ্রম সংঘ ফেডারেশনের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি শ্রম সংঘের দশ জন সিনিয়র সদস্যকে প্রথম শ্রেণীর শ্রমপদকে ভূষিত করেন। এরপর তিনি টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে বলেন, শ্রমিকরা হচ্ছেন মিশরের স্তম্ভ। সরকার শ্রমিকদের চিকিত্সা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিমাসহ নানা বিষয়ের ওপর নজর রাখে। তিনি ঘোষণা করেন, শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় এবং পর্যটনশিল্পসহ রুগ্ন শিল্পগুলোকে সহায়তা দিতে সরকার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়কে ১০ কোটি মিশরীয় পাউন্ড বরাদ্দ দেবে। (ইয়ু/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040