সংবাদ পর্যালোচনা: লানছাং নদীর নিম্নতীরের দেশের জন্য পানি সরবরাহ করায় চীন'কে ধন্যবাদ জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব দেশের বিশেষজ্ঞ
  2016-04-29 18:20:21  cri
লানছাং-মেগুং নদীর নিম্নতীরের কয়েকটি দেশ এখন খরা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। মার্চ মাসে জরুরি পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়ার পর চীন সরকার আবার নিম্নতীরের দেশের জন্য পানি সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত লানছাং-মেগুং নদী আঞ্চলিক সহযোগিতা ফোরামে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের গবেষকরা চীনের এ ব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন। তারা মনে করেন, লানছাং-মেগুং নদী সহযোগিতা ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা পানি সম্পদ ব্যবহারে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।

একই দিন অনুষ্ঠিত ফোরামে থাইল্যান্ডের চুলালোংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন গবেষক জুং চিয়া বিং চীনের পানি সরবরাহের ব্যবস্থার উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মেগুং নদী সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের প্রধান খবর হয়েছে, কারণ তার পানি শুকিয়ে গেছে। ভিয়েতনামের অনুরোধে চীন সরকার পানির সরবরাহ করেছে, তা খুব ভাল একটি ব্যবস্থা।

২০১৫ সালের শেষ নাগাদ থেকে এল-নিনো প্রাকৃতিক প্রভাবে লানছাং-মেগুং নদী প্রবাহিত বিভিন্ন দেশ কমবেশি পানির অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। খরায় দুর্গত দেশের জরুরি আহ্বানে চীন নিজের পানির অভাব হলেও দুর্গত দেশের জন্য পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়েছে।

ফোরামে অংশগ্রহণকারী চীনের আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাসচিব ইয়াং ই চীনের সংশ্লিষ্ট নীতি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, পানি সম্পদ হচ্ছে লানছাং-মেগুং নদী সহযোগিতা ব্যবস্থার পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান বিষয়ের অন্যতম। পানি সম্পদ নিয়ে তর্কবিতর্ক বেশি থাকে। কারণ নদীর বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন দেশে আছে, পানি সম্পদ বিভিন্ন দেশের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। আঞ্চলিক সহযোগিতা সুষ্ঠুভাবে উন্নয়ন হতে চাইলে পানি সম্পদ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা চালাতে ইচ্ছুক চীন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যৌথভাবে লানছাং-মেগুং নদীর পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা উচিত বলে চীন মনে করে। এ অঞ্চলের দেশগুলো শুধু সহযোগিতার মাধ্যমে জলবায়ু-পরিবর্তন মোকাবিলা এবং প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা মোকাবিলা করতে পারে।

কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এর আগে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, চীনের জরুরি পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থেকে বোঝা যায় মেগুং নদী প্রবাহিত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের সুষ্ঠু ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এ ব্যবস্থা কম্বোডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের খরা অবস্থা মোকাবিলায় অনেক সাহায্য করেছে।

গত ২৩ মে লানছাং-মেগুং নদী সহযোগিতা ব্যবস্থা চীনের হাইনানের সান ইয়া শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এটি হচ্ছে চীন, মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম ছয়টি নদী প্রবাহিত অঞ্চলের দেশের মধ্যে সহযোগিতার একটি নতুন ধরনের উপ-আঞ্চলিক ব্যবস্থা। ছয়'পক্ষ যোগাযোগ বাড়ানো, উত্পাদন ক্ষমতা, উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য, পানি সম্পদ, কৃষি ও দারিদ্র বিমোচনের পাঁচটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা চালাবে বলে একমত হয়েছে।

ভিয়েতনামের পানি সম্পদ একাডেমিক কমিটির বিশেষজ্ঞ থাও জুং হাও গতকালের সম্মেলনের বিভিন্ন দেশের প্রতি যৌথভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, লানছাং-মেগুং নদী সহযোগিতা ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা এ অঞ্চলের পানি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। আমরা যৌথভাবে একটি সুষ্ঠু সহযোগিতা ব্যবস্থা গঠন করতে পারি।

ছয়টি দেশের জন্য এ নতুন ব্যবস্থা অন্য ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করতে পারে। থাইল্যান্ডের চুলালোংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জুং বিন চিয়া মনে করেন, সহযোগিতার ব্যবস্থা গঠনে অন্য সফল অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা যায়। যদি এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের মত আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা চালাতে পারে তাহলে আরো ভাল হয়।

(স্বর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040