20160427yinyue.mp3
|
মঙ্গোলীয় জাতি হচ্ছে চীনের উত্তরাঞ্চলের প্রধান জাতিগুলোর অন্যতম। চীনের অধিকাংশ তৃণভূমিতে মঙ্গোলীয় জাতির পশুপালকদের পদচিহ্ন রয়েছে। তারা প্রধানত চীনের অন্তঃমঙ্গোলিয়া, লিয়াও নিং, চি লিন, হেই লোং চিয়াংয়ে বসবাস করেন। বিশ্বে প্রায় ১ কোটি মঙ্গোলীয় জাতির লোক আছে। মঙ্গোলিয়ায় প্রায় ৩০ লাখ মঙ্গোলীয় জাতির লোক রয়েছে। চীনে ৬০ লাখ আছে। তা ছাড়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তান ও অন্যান্য দেশেও মঙ্গোলীয় জাতির লোক দেখা যায়।
মঙ্গোলীয় জাতির লোকেরা গান গাইতে পছন্দ করেন। তারা গায়কদের বেশ শ্রদ্ধা করেন। তাদের লোকসংগীতের বিষয় ও বিস্তার ব্যাপক। প্রায় প্রতিটি গানে প্রেম ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশিত হয়।
বন্ধুরা, এখন আপনারা শুনছেন হায়া নামে ব্যান্ডের গাওয়া 'মঙ্গোলীয় মানুষ' নামে একটি গান। এ গানে বলা হয়েছে, 'আমি পশুপালকের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছি। বিশাল ও সীমাহীন তৃণভূমি হলো আমার বড় হওয়ার দোলনা। আমি নিজের শরীরের যত্ন করার মতো এ ভূমিকে ভালোবাসি। আমি যে নদীতে গোসল করেছি সে নদীর পানি মায়ের দুধের মতো মিষ্টি। এই হলো মঙ্গোলীয় মানুষের ধরণ। জন্মভূমিকে আমরা ভীষণ ভালোবাসি'। মঙ্গোলীয় জাতির বিখ্যাত গায়ক থেগের প্রথমে এ গানটি গেয়েছেন। চীনে তিনি এ গানটি গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের মঙ্গোলীয় ভাষা বিভাগ আছে। এ বিভাগের বুরেনপায়ার নামে একজন সাংবাদিক ও উপস্থাপক ছিলেন। যখন তার মেয়ে তিন বছর বয়স তিনি মেয়ের জন্য একটি গান লেখেন। গানের নাম 'চি সিয়াং সান পাও'। এ গানে মেয়ে ও বাবার কথোপকথন শুনে শ্রোতারা মুগ্ধ হন।
গানে মেয়ে প্রশ্ন করে, 'বাবা, সূর্য উঠলে চাঁদ কী বাসায় ফিরে যায়?'
বাবা উত্তরে বলেন, 'নাতো।'
মেয়ে প্রশ্ন করে, 'তাহলে আসলে সূর্য কোথায় গেলো?'
বাবা উত্তরে বলেন, 'আকাশে।'
মেয়ে বলে, 'আমি দেখতে পাই না কেন?'
বাবা বলেন, 'বাসায় ফিরে গেছে যে।'
বন্ধুরা, শুনুন এ গানটি।
শ্রোতাবন্ধুরা, মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলান বাটোর। উলান মানে লাল। বাটোর মানে বীর। ১৯৮৫ সালে মঙ্গোলিয়ার সুরকার প্রিদাওবুজি 'উলান বাটোরের রাত' নামে একটি গান লেখেন। এ গান প্রচারের পর মঙ্গোলিয়াসহ বিশ্বে তা ছড়িয়ে পড়ে। চীনের অনেক বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পীও গানটি গেয়েছেন। আমি এ গানটি খুব পছন্দ করি। এ গানে উলান বাটোরের রাতের সৌন্দর্য এবং এ শহরের প্রতি ভালো লাগার অনুভুতি প্রকাশিত হয়েছে। বন্ধুরা, শুনুন আন লাই নিংয়ের গাওয়া এ গানটি।
প্রিয় শ্রোতা, গত বছর 'আমি গায়ক' নামে গানের প্রতিযোগিতায় চীনের গায়িকা থান ওয়েই ওয়েই প্রয়াত বাবার প্রতি মনের ভালোবাসা ও গভীর বেদনা গানের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। তিনি নতুন করে এ গানের কথা লিখেছেন। তিনি বলেছেন, 'তুমি অনেক বছর আগে চলে গেছো। তবে আমার মনে হয়, তুমি এখনো আমার পাশে আছো। তোমার হাসি মুখ, আমি এখনো দেখতে পাই।'
থান ওয়েই ওয়েই
সুপ্রিয় শ্রোতা, 'রাজহাঁস' অন্তঃমঙ্গোলিয়ার উলাত লোকসংগীত। চীনের বিখ্যাত লেখক লিউ ইয়ান ওয়েই এ লোকসংগীতের চীনা ভাষার কথা লিখেছেন। সুরকার চাং হোং কুয়াং (张宏光) নতুন করে সুর সাজিয়েছেন। 'পূর্বাঞ্চলে ফিরে আসা বীরদের কাহিনী' টেলিভিশন নাটকে এ গানটি প্রধান গান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এ কারণে চীনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে গানটি। বন্ধুরা, শুনুন হুসিলাংয়ের গাওয়া মঙ্গোলীয় ভাষার এ গানটি। এ গানে বলা হয়েছে, রাজহাঁস আকাশে উড়ছে। তৃণভূমিতে বেদনাদায়ক বাদ্যযন্ত্রের সুর শোনা যায়। রাজহাঁস দক্ষিণ দিকে উড়ে যাচ্ছে। তার জন্মস্থান উত্তরাঞ্চলে। আকাশ কত দূর, তুমি কবে ফিরে আসবে?"
বন্ধুরা, এবার শুনুন চীনা গায়িকা হান হোংয়ের গাওয়া চীনা ভাষার এ গানটি।
বন্ধুরা, 'সুর ও বাণী' আসরে আপনারা মঙ্গোলীয় জাতি সম্পর্কে কয়েকটি গান শুনলেন। কেমন লাগলো? আমি পরবর্তী সময় চীনের বিভিন্ন জাতির সংগীত আপনাদের শোনাবো। আশা করছি, আপনাদের ভালো লাগবে। আজকের 'সুর ও বাণী' এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। (ইয়ু/মান্না)