ঘটনা ১ গত ২৫ এপ্রিল থেকে বেইজিংয়ের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান নান লু কু সিয়াং আর কোনো 'পর্যটক গ্রুপ'-কে স্বাগত জানাবে না। পাশাপাশি নান লু কু সিয়াং দর্শনীয় স্থান হিসেবে নিজের 'থ্রি-এ' যোগ্যতা বাতিলের আবেদনও জানিয়েছে। সম্প্রতি বেইজিং তুং চেং এলাকার পর্যটন কমিটি এক বিবৃতিতে জানায়, নান লু কু সিয়াং প্রতিদিন গড়ে পর্যটকের সংখ্যা হয় ৩০ হাজার; সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজারে; এবং জাতীয় ছুটির সময়ে সংখ্যাটি আরও বেড়ে লাখ ছাড়িয়ে যায়। জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী, নান লু কু সিয়াং প্রতিদিন গড়ে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার পর্যটককে এন্টারটেইন করতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই সেই সর্বোচ্চ মাত্রা ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। এতে স্থানীয় অধিবাসীদের কষ্ট বেড়েছে। তাই এই এলাকায় ২৫ এপ্রিল থেকে 'গ্রুপ পর্যটন' ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে লোকজন সেখানে ভ্রমণে যেতে পারবেন। নান লু কু সিয়াং বেইজিংয়ের প্রাচীন এলাকা। এখানে এখনও প্রাচীন বেইজিংকে খুঁজে পাওয়া যায়। একসময় এ স্থানটি শান্ত ছিল। পর্যটকদের হুড়াহুড়ি ছিল না। কিন্তু ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক গেমসের পর থেকেই এখানে ভীড় বাড়তে থাকে। কারণ, ততদিনে দেশে-বিদেশে নান লু কু সিয়াং বিখ্যাত হয়ে গেছে। ঘটনা ২ পয়লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। চীনে এ উপলক্ষ্যে ৩০ থেকে ২ মে পর্যন্ত তিন দিন ছুটি থাকবে। এ উপলক্ষ্যে বরাবরের মতোই বেইজিংয়ের রাজপ্রাসাদ যাদুঘর বা নিষিদ্ধ নগরীতে পর্যটকসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই সময়টাতে প্রতিদিন ৮০ হাজার টিকিট বিক্রি করা হবে। অর্থাত প্রতিদিন ৮০ হাজার পর্যটক সেখানে যেতে পারবেন। তা ছাড়া, ইন্টারনেটে যারা রিজার্ভেশন করাবেন তারা সরাসরি আইডি কার্ড পাঞ্চ করে যাদুঘরে প্রবেশ করতে পারবেন। তাদেরকে অযথা টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। উল্লেখ্য, গত বছরের জুন থেকে রাজপ্রাসাদ যাদুঘরে পর্যটকসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি চালু হয়। গ্রুপ পর্যটন ও ব্যাক্তিগত পর্যটনের জন্যও আলাদা আলাদা রিজার্ভেশন সিস্টেম চালু করা হয়। ঘটনা ৩ পয়লা মে থেকে বেইজিংয়ে অ্যাম্বুলেন্সও চলবে মিটারে। অর্থাত মিটারে যে ভাড়া উঠবে সেই ভাড়া ব্যবহারকারীকে দিতে হবে। এ পর্যন্ত ৫৮০টি অ্যাম্বুলেন্সে মিটার বসানো হয়েছে। চীনের কোনো শহরে এই প্রথম মিটারওয়ালা অ্যাম্বুলেন্স চালু হতে যাচ্ছে। এর আগে বেইজিংয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়ার তেমন কোনো নিয়ম ছিল না। একেক হাসপাতাল বা ক্লিনিকে একেক ভাড়া। অনেক সময় বিভিন্ন অভিযোগও শোনা যেত। নতুন নিয়মের ফলে এসব সমস্যা আর থাকবে না। অ্যাম্বুলেন্সে প্রথম ৩ কিলোমিটারের জন্য ভাড়া ৫০ ইউয়ান। পরের প্রতি কিলোমিটারের জন্য ভাড়া ৭ ইউয়ান করে। উল্লেখ্য, বেইজিংয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা প্রায় ৮০০টি। ঘটনা ৪ পাবলিক টয়লেট দেখলে নাকি একটি শহরের মান সম্পর্কে আন্দাজ করা যায়। সম্প্রতি বেইজিংতে শুরু হয়েছে 'পঞ্চম টয়লেট বিপ্লব'। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে, নতুন পাবলিক টয়লেট নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ মানদন্ড প্রকাশিত হবে আগামী অক্টোবর মাসে। নতুন মানদন্ড অনুযায়ী পাবলিক টয়লেটের আয়তন বাড়বে, বাড়বে সংখ্যাও। টয়লেটগুলোতে বায়ু চলাচলের আধুনিক ব্যবস্থা থাকবে, থাকবে শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। নতুন এসব টয়লেটে শীতকালে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকবে এবং গরমকালে ৩০ ডিগ্রির ওপরে উঠবে না। দোকান ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভবিষ্যতে পুরুষদের চেয়ে নারীদের টয়লেটের সংখ্যা বেশি হবে বলেও নতুন নীতিতে বলা আছে। তা ছাড়া, কিছু পারিবারিক টয়লেটও থাকবে। এগুলো প্রয়োজনে কোনো পরিবার এককভাবে ব্যবহার করতে পারবে। এ ধরনের টয়লেটের আয়তন ৬ বর্গমিটারের চেয়ে বেশি হবে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত বেইজিংয়ে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য ৫.৫৭টি পাবলিক টয়লেট ছিল। এ ছাড়া, পারিবারিক টয়লেট আছে হাজার খানেক। পরিকল্পনা অনুসারে, চলতি বছর বেইজিংয়ের থুং চৌ ও ফাং সান এলাকায় ১০০টির বেশি নতুন পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে এবং ওখানে ওয়াইফাই ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাত সেখানে ব্যবহারকারীরা বিনা পয়সায় ইন্টারনেট কানেকশান পাবেন। উল্লেখ্য, ২০০২ সাল থেকে বেইজিংয়ের সব পাবলিক টয়লেট জনগণের জন্য বিনামূল্যে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।(শিশির/আলিম)