বাংলাদেশে চুনাপাথরের বৃহত্তম খনি আবিষ্কার, সম্ভাবনা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির
  2016-04-23 13:35:50  cri

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের জন্য সুসংবাদ নিয়ে এসেছে নওগাঁয় দেশের সবচেয়ে বড় চুনাপাথরের খনি আবিষ্কারের খবর। জেলার বদলগাছির তাজপুরে খনিটি আবিষ্কার করে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর। ২১ এপ্রিল সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ খবরটি দেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

তাজপুরে আবিষ্কৃত চুনাপাথরের খনিটির আয়তন ৫০ বর্গকিলোমিটার। এর পুরুত্ব ২ হাজার ২১৪ ফুট। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর এর খনন কাজ শুরু করে। দুমাসের মধ্যে সন্ধান মেলে চুনাপাথরের। খননকাজে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৩ লাখ টাকা। এ খনিতে সাদা মাটি ও কয়লা পাওয়া যেতে পারে বলেও আশা করা হচ্ছে। খনিজ সম্পদে সন্ধান পাওয়ায় এলাকাটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠবে বলে মনে করছে ভূতাত্ত্বিক জরিপা অধিদপ্তর।

তবে খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানান, খনিটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যাবে কি না- তা নিশ্চিত হতে সমীক্ষা চালাতে হবে। এজন্য দেড় থেকে দুবছর সময় লাগবে। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা গেলে চুনাপাথর আমাদানির ওপর নির্ভর করতে হবে না বাংলাদেশকে। কারণ দেশের সব সিমেন্ট কারখানার চাহিদা মেটানোর মতো চুনাপাথরের মজুদ রয়েছে খনিটিতে।

এদিকে, বাংলাদেশের পোষাক খাতের বিষয়েও ভালো খবর দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। ২১ এপ্রিল রাজধানীতে গত এক বছরে পোষাক খাতের অগ্রগতি সম্পর্কে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সংস্থাটি। এ সময়ে বাংলাদেশের পোষাক শিল্পে কর্মপরিবেশ ও শ্রমমান উন্নয়নে অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে জানানো হয়েছে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা ও নীতি বিবাগের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মনজুর ই খোদা জানান, পোষাক শিল্পের সমস্যা সমাধানে গৃহীত উদ্যোগের পূণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৯ ভাগ। তবে, গৃহীত উদ্যোগের ৫৭ ভাগ সন্তোষজনক অগ্রগতির পর্যায়ে রয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলন, সার্বিকভাবে পোষাক শিল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলেও শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে বাস্তবধর্মী উদ্যোগ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অনীহা রয়েছে। বিশ্ববাজারে তৈরি পোষাকের দাম কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয়ে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য তৈরি পোষাকের মূল্য বৃদ্ধিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কল্যাণ তহবিল গঠনের মতো কিছু সুপারিশ করে টিআইবি।

রানা প্লাজা ধসের মামলার বিচারকাজে দীর্ঘসূত্রতার কারণেও এ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে হাজারের বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের তৈরি পোষাক নিয়ে বিশ্ববাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তার পর থেকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় পোষাক শিল্পের কর্মপরিবেশ ও শ্রমমানের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

একই সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান তাদের সংস্থার কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও সম্পদের বিবরণী নিয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর আগে তার ফেসবুক পেজে মন্তব্য করেন, দুর্নীতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা হলেও টিআইবি কর্মকর্তারা যে দুর্নীতগ্রস্ত নন তা প্রমাণের জন্য তাদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ করা উচিত।

এর জবাবে ইফতেখারুজ্জামান জানান, তাদের ওয়েবসাইটে সব কর্মকর্তার সম্পদের বিবরণী দেয়া রয়েছে। যে কেউ চাইলে তা দেখতে পারেন। কারো প্ররোচণা বা চাপে পড়ে টিআইবি রিপোর্ট প্রকাশ করে না দাবি করে ড. ইফতেখার বলেন, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিয়েই টিআইবি দুর্নীতির চিত্র আর সমালোচনা তুলে ধরে।

মাহমুদ হাশিম, ঢাকা থেকে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040