চীনের শিক্ষাবিষয়ক কয়েকটি খবর এবং বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতকদের স্বদেশে কর্মসংস্থানের অবস্থা
  2016-04-11 15:09:39  cri

 


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা ভালো আছেন তো? বেইজিং থেকে সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি সিআরআই বাংলার সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠানটি। আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে আমরা আগের মতোই শিক্ষাসম্পর্কিত কয়েকটি খবর তুলে ধরবো। এরপর বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতকদের স্বদেশে কর্মসংস্থানের বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন শোনাবো। আর এ অনুষ্ঠানটি পরিবেশনায় রয়েছি সুবর্ণা এবং টুটুল।

০১. চীনের উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর চীনের ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনায় শিক্ষা খাতের সংস্কার ও উন্নয়ন সম্পর্কে বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তির উদ্যোগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা, শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার একীকরণ এবং আধুনিক শিক্ষাদানের পরিকল্পনা প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চীনের শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাদানের ব্যবধান বর্তমানে একটি জরুরি সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত। ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চীনের মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের শিক্ষাদান ব্যবস্থার উন্নয়ন দ্রুত করা, শিক্ষার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন বাস্তবায়ন করা, সংখ্যালঘু জাতির শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা ও ইংরেজি ভাষার প্রশিক্ষণ জোরদার করা এবং পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষাদানব্যবস্থায় ব্যবধান কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নতুন পরিকল্পনায়।

তা ছাড়া, প্রত্যন্ত দরিদ্র এলাকার বাধ্যতামূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্কুলের পরিবেশ এবং গ্রামাঞ্চলের বোর্ডিং স্কুলের ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, গ্রামাঞ্চলে পিতামাতার সাথে থাকে না এমন শিশুদের জন্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা, এমন শিশুদের স্কুলে ভর্তি করার হার নিশ্চিত করা এবং গ্রামীণ শ্রমিকদের সন্তানদের শহরে এসে সমান বাধ্যতামূলক শিক্ষাগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এ নতুন পরিকল্পনায়।

০২. গত মার্চ মাসে চীনের দ্বাদশ গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)-র চতুর্থ সম্মেলনের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে চিকোং পার্টির সদস্য চিয়াং চ্যুও জুন চীনা বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে প্রস্তাব দেন।

তিনি মনে করেন, নতুন প্রজন্মের বহুমুখী গুণগতমান উন্নত হলে চীন শক্তিশালী হবে। বর্তমানে শিশুদের গুণগতমান প্রশিক্ষণে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করে কার্যকর ও উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে তাদের প্রশিক্ষণ দেবার প্রস্তাব দেন তিনি। শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণের পদ্ধতি পরিবর্তন করা, শিশুদের উদ্ভাবনী দক্ষতা ও ধারণা সৃষ্টিতে বেশ মনোযোগ দেওয়া এবং উদ্ভাবনী ব্যক্তিদের জন্য সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন তিনি।

এছাড়া, চীনা শিশুদের মূল্যবোধ সৃষ্টিতে তাদের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও কার্টুন চলচ্চিত্র পরিচালনা করা, ইন্টারনেটের পরিবেশ সুন্দর করা, গ্রামাঞ্চলে পিতামাতার সাথে না এমন শিশুদের যত্ন জোরদার করা নিয়েও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে চীনা শিশুদের স্বাস্থ্য ও মানসিক চরিত্র গঠনে বেশ মনোযোগ দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, শিশুদের দক্ষতার প্রশিক্ষণ জোরদার করা উচিত, যাতে চীন প্রযুক্তিনির্ভর দেশে পরিণত হতে পারে। চীন সরকার পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা প্রণয়ন করার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বহুমুখী প্রশিক্ষণের সময়সূচি নির্ধারণ করবে বলে প্রস্তাব দেন তিনি। যেমন কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক স্কুল ও শিশু হাসপাতালের আওতা বাড়ানো, কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ও ধাত্রীদের প্রশিক্ষণ জোরদার করা ইত্যাদি।

০৩. চলতি বছরের মার্চ মাসে চীনের জাতীয় গণকংগ্রেস (এনপিসি)-র ইনার মঙ্গোলিয়ার প্রতিনিধি তুং ইউয়ুন সংখ্যালঘু জাতির শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন।

তিনি মনে করেন, চীন সরকারের সহায়তায় বর্তমানে সংখ্যালঘু জাতি অধ্যুষিত এলাকায় শিশুদের শিক্ষাগ্রহণের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় কৃষক ও পশুপালকদের পরিবারের বাচ্চাদের শিক্ষাগ্রহণের পরিমাণ খুবই কম। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জোরদার করার মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার শিশুদের শিক্ষাগ্রহণের অবস্থা উন্নত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

তার এ বছরের প্রস্তাবে প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রকল্পে বিশেষ বাজেট প্রদান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের শিক্ষকদের পূর্বাঞ্চলের উন্নত এলাকায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ প্রদান করলে তা স্থানীয় অঞ্চলের শিক্ষাদানের গুণগতমান উন্নত করার জন্য সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

০৪. ব্রিটেনের লন্ডনে অবস্থিত কোয়াকরেলি সিমেন্ডস (কিউএস) গত মার্চ মাসের শেষ দিকে বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাঙ্কিং নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে চীনের ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেজর বিশ্বের ৪০০টি শক্তিশালী মেজরের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ সংখ্যা বিশ্বের দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।

গত ৫ বছরে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ৭৬৭৯৮ জন পেশাদার বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ এবং ৪৪৪২৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের কর্মসংস্থানের প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা নিয়ে বহুমুখী বিবেচনা করার পর এ র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়। এ পরিসংখ্যান অনুসারে, চীনের ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেজর বিশ্বের ৪০০ শক্তিশালী মেজরের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সংখ্যা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬৪টি, ব্রিটেনের ৭৮টি, জার্মানির ৫১টি এবং ফ্রান্সের ৫০টি।

চীনের ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ও ভাষাবিদ্যা বিশ্বের শীর্ষ ১০টি মেজরে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, কিউএস ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে সংস্থাটি।

০৫. চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ (সিসিসিজি) কেনিয়ার ২৫ জন শিক্ষার্থীকে চীনে অধ্যয়নের বৃত্তি প্রদান করেছে। মার্চ মাসের শেষ দিকে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে এসব শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিদায়ী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা, দেশটির সরকারের নেতৃবৃন্দ এবং কেনিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ সিয়ান ফাসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এ বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ঐ শিক্ষার্থীরা সিসিসিজি'র সহায়তায় চীনে লেখাপড়া করবেন এবং বেইজিং যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরের মতো রেলপথ সম্পর্কিত বিষয়ে লেখাপড়া করবেন।

বহু বছর ধরে কেনিয়াকে সহায়তা করায় চীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা। তিনি অনুষ্ঠানে এই ২৫ জন শিক্ষার্থীকে মনোযোগ দিয়ে রেলপথসম্পর্কিত বিষয় ভালোভাবে সম্পন্ন করার ‌আহ্বান জানান, যাতে স্নাতক হওয়ার পর কেনিয়ায় নির্মিত মোমবাসা থেকে নাইরোবির রেলপথ স্বাধীনভাবে সংরক্ষণ করা যায়।

তিনি বলেন, কেনিয়া সরকার স্বদেশের রেলপথ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। চীনের কাছ থেকে রেলপথসম্পর্কিত উন্নত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান শেখা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানসম্মত দক্ষতার অভাবে কেনিয়ার একটি রেলপথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা।

বর্তমানে সিসিসিজি'র নির্মাণরত মোমবাসা থেকে নাইরোবি পর্যন্ত রেলপথ কেনিয়ার নতুন শতাব্দীর রেলপথ হিসেবে আখ্যায়িত। এটি পুরোপুরি চীনের প্রযুক্তি ও মানদণ্ড অনুযায়ী নির্মাণরত রেলপথ। এই পথটি কেনিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত, এর নির্মাণ বাজেট প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ রেলপথ নির্মাণের পর কেনিয়ার পরিবহনব্যবস্থা ব্যাপকভাবে অনেক উন্নত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনে লেখাপড়ার বিষয় নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ সিয়ান ফা বলেন, ২০১৫ সালে দু'দেশের নেতারা ব্যক্তি প্রশিক্ষণের বিষয়ে একমত হন এবং স্থানীয় অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের আরো বেশি সুযোগ প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেন চীনা নেতৃবৃন্দ। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামে 'দশটি সহযোগিতা পরিকল্পনা' দাখিল করেন। এর মধ্যে শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নের সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সিসিসিজি'র সূত্রে জানা গেছে, এবার চীনের সংশ্লিষ্ট বৃত্তি প্রকল্পে মোট ৬০ জন কেনিয়ার শিক্ষার্থীকে সুযোগ দেওয়া হবে। তারা চীনের শ্রেষ্ঠ যোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে রেলপথ সম্পর্কিত বিষয়ে লেখাপড়া করবেন এবং ভবিষ্যতে কেনিয়ার রেলপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা শিক্ষাসম্পর্কিত কয়েকটি খবর শুনলেন। এখন বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতকদের স্বদেশে কর্মসংস্থান সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি শোনাবো।

সম্প্রতি চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় '২০১৫ বিদেশ থেকে স্নাতক চীনা শিক্ষার্থীদের স্বদেশে কর্মসংস্থান' সম্পর্কিত একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তা থেকে জানা গেছে, প্রায় ৮০ শতাংশ বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতক চীনে ফিরে কর্মসংস্থানে যোগ দিয়েছে।

পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালে বিদেশে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ৫ লাখ ২৩ হাজার ৭০০ জন। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১৯.০৬ শতাংশ। দেশে ফিরে আসা স্নাতকদের সংখ্যা ৪ লাখ ৯ হাজারেরও বেশি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী খাতে ব্যাপকভাবে দক্ষ ব্যক্তিদের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, যা বিদেশ থেকে স্নাতক চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ। তা ছাড়া, বিদেশে চীনা স্নাতকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কঠিন এবং ভিসা প্রদানের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে স্নাতক হওয়ার পর চীনে ফিরে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

'বিদেশে বিজ্ঞান গবেষণাগার বা কর্মসংস্থান খুঁজে বের করলে কিছুটা সুযোগ পাওয়া যাবে। তবে চীনে ফিরে আসার পর নিজের মূল্য ও দক্ষতা আরো সম্পূর্ণভাবে প্রদর্শন করা যায়। চীনে আমাদের জন্য একটি ভালো প্লাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে।'

চীনে ফিরে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও বেড়ে গেছে। রাজধানী বেইজিংয়ে বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতকদের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারা প্রধানত সরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।

তা ছাড়া, বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগ কোম্পানি, চীন সরকারের নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান বা আর্থিক সংস্থায় তারা চাকরি করছেন। বর্তমানে নিজস্বভাবে কোম্পানি চালু করা বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতকদের আরেকটি সুযোগে পরিণত হয়েছে।

চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদেশে অধ্যয়ন সেবা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক স্যু পেই সিয়াং বলেন,'একদিকে ব্যক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের চীনে ফিরে আসতে আকর্ষণ করা, অন্য দিকে, চীনা স্নাতকদের জন্য উদ্ভাবনী উদ্যান স্থাপন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ'।

জানা গেছে, বিদেশ থেকে স্নাতক চীনা শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোগে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০০৬ সাল থেকে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় 'ছুনহুই' উদ্ভাবনী ও উদ্যোগ প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে শুরু করে। যারা বিদেশ থেকে স্নাতক হয়েছেন তারা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা স্নাতক লেই বাও ২০১৪ সালে ছুনহুই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিনি বলেন, চিয়াংসু প্রদেশে বিনা ভাড়ায় তার কোম্পানির অফিস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তিনি ১০ লাখেরও বেশি রেনমিনপি'র পুঁজি বিনিয়োগ পান।

তিনি বলেন, 'এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি, চীনের আঞ্চলিক সরকার বিদেশ ফেরত চীনা স্নাতকদের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা আমাদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে অনেক সমর্থন দিয়েছে এবং আমাদের অনুশীলনের সুযোগও প্রদান করেছে।'

চীনা নাগরিকদের ব্যাপকভাবে উদ্ভাবন ও উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে, বর্তমানে বিদেশ থেকে স্নাতক চীনাদের জন্য উদ্যোগের প্ল্যাটফর্ম ২০০টিরও বেশি।

এ সম্পর্কে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সেবা কেন্দ্রের একজন পরিচালক ছি মো বলেন, ভবিষ্যতে এসব চীনা স্নাতকদের ইন্টার্নশিপ ঘাঁটি স্থাপন করাসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে তাদের কর্মসংস্থানে সুবিধা দেবে চীন সরকার।

তিনি বলেন, 'গত বছর আমরা চীনের ১০টি বড় প্রতিষ্ঠান বাছাই করে এসব স্নাতকদের ইন্টার্নশিপ ঘাঁটি স্থাপন করেছি। ভবিষ্যতে আমরা তাদের জন্য কর্মসংস্থান ও উদ্যোগ পরামর্শ কেন্দ্র নির্মাণ করবো।'

সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়, কথা বলতে বলতে আমাদের আজকের 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠানের সময়ও ফুরিয়ে এলো। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে এবং সেই সঙ্গে চীনের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কেও আপনাদের কোনো কিছু জানার থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

রেডিও'র মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে আমাদের বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bengali.cri.cn

এবার তাহলে বিদায়। আসছে সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবারও আপনাদের সঙ্গে কথা হবে।সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। থাকুন সুস্থ ও আনন্দে। চাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040