0402Muktarkotha
|
গত ৩০-এ মার্চ বুধবার ৬ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সিআরআই প্রতিনিধিদল দু'দিনের সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে আসেন। সিআরআই সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন, মহাপরিচালক ওয়াং গেন নিয়ান, অর্থ বিভাগের পরিচালক মাদাম গং ছিংছিং, সংবাদ বিভাগের পরিচালক হুয়াং ইয়োং গুও, দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক লুও হোংবিং, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের উপ-পরিচালক মাদাম লিয়াও লি এবং অফিস বিভাগের পরিচালক চুং রেন যোং।
ঢাকা হযরত শাহজালাল (রা:) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি গেইটে চীনা অতিথিদের বাংলাদেশে স্বাগত জানায় সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশ, সিআরআই সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব এবং সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের প্রতিনিধিবৃন্দ।
এসময় বিমান বন্দরে উপস্থিত ছিলেন, সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের চীনা পরিচালক শিয়ে নান আকাশ, বাংলাদেশ পরিচালক গোলাম মোস্তফা, কনসালটেন্ট ও শিক্ষক মহিউদ্দিন তাহের, সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউল করিম বেলাল, সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও সিআরআই বাংলাদেশ মনিটর দিদারুল ইকবাল, সিআরআই সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু প্রমূখ।
সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের চীনা পরিচালক শিয়ে নান আকাশ সিআরআই প্রতিনিধিদলের নেতাদের সাথে সিআরআই শ্রোতাসংঘের নেতৃবৃন্দের পরিচায় করিয়ে দেন।
সিআরআই মহাপরিচালক ওয়াং গেন নিয়ান-কে শ্রোতাসংঘের পক্ষে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন, সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও সিআরআই বাংলাদেশ মনিটর (দিদারুল ইকবাল)। এছাড়া তিনি অতিথিদের শ্রোতাসংঘের পক্ষ থেকে উপহারও প্রদান করেন। সিআরআই দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক লুও হোংবিং-কে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউল করিম বেলাল। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অতিথিদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের প্রতিনিধিবৃন্দ। সিআরআই মহাপরিচালক ওয়াং গেন নিয়ান বিমান বন্দরে শ্রোতাসংঘের প্রতিনিধিদের উপস্থিতির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন, আনন্দ প্রকাশ করেন এবং শ্রোতাসংঘের প্রতিনিধিদের তিনি ধন্যবাদ জানান। অতিথিদের বরণ শেষে সেখানে শ্রোতাসংঘের প্রতিনিধিদের সাথে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়ে শ্রোতাস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচিত হয়। বিশেষ করে শর্টওয়েভ ও ইন্টারনেটের পাশাপাশি বাংলাদেশে এফএম সম্প্রচার পরিধি সম্প্রসারনের বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। বর্তমানে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে এফএম-এ ১৮ ঘন্টা করে মোট ৩৬ ঘন্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয়। যার মধ্যে পুন:প্রচার সহ বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয় ৬ ঘন্টা করে ১২ ঘন্টা বাকী ১২ ঘন্টা করে ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার হয় ইংরেজী অনুষ্ঠান। এখানে সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও সিআরআই বাংলাদেশ মনিটর (দিদারুল ইকবাল) সিআরআই মহাপরিচালকের বাংলাদেশ সফরের পূর্বে সিআরআই বাংলা বিভাগের পরিচালক মাদাম ইউ কোয়াং ইউয়েসহ শ্রোতাদের সাথে আলোচনা করেন বর্তমানে যে দুটি বিভাগীয় অঞ্চলে (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) ১৮ ঘন্টা করে ৩৬ ঘন্টার এফএম অনুষ্ঠান চলছে তা ভাগ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বাংলা অনুষ্ঠান ৩ ঘন্টা করে ৬ ঘন্টা এবং ইংরেজী অনুষ্ঠান ১ ঘন্টা করে ২ ঘন্টা সর্বমোট ৮ ঘন্টা প্রচার করে বাকী ২৮ ঘন্টার অনুষ্ঠান অন্যান্য অঞ্চলে বিশেষ করে সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, কুমিল্লা, কক্সবাজার এবং ঠাকুরগাঁও-এ ৩+১=৪ ঘন্টা করে প্রচারের উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশের আরো বেশি শ্রোতা এফএম-এর আওতায় চলে আসবে। এতে বাংলাদেশ বেতার তথা বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক কোন ক্ষতি হবেনা অপরদিকে সিআরআই এর শ্রোতারা লাভবান হবে। এবং এটি সিআরআই মহাপরিচালকসহ দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালকের কাছে তুলে ধরা হয় যাতে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ বেতারের সাথে আলোচনা করা হয়।
৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগ বাংলাদেশ বেতারের সদর দপ্তরে বাংলাদেশ বেতার এবং চীন আন্তর্জাতিক বেতার-এর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশ বেতারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে চীনা প্রতিনিধিদল মতবিনিময় করেন।
আলোচনায় বাংলাদেশ বেতারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন মহাপরিচালক এ কে এম নেছার উদ্দিন ভূইয়া এবং চীন আন্তর্জাতিক বেতার-এর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন, মহাপরিচালক ওয়াং গেন নিয়েন। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ বেতারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপ-মহাপরিচালক (সংবাদ) নারায়ন চন্দ্র শীল, প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ কামরুজ্জামান, সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এটিএম জিয়া হাসান, বহির্বিশ্ব কার্যক্রমের পরিচালক কামাল আহমেদ প্রমূখ। এছাড়া সিআরআই ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাথে বাংলাদেশস্থ চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সেলর চেন শুয়ান, সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের চীনা পরিচালক শিয়ে নান আকাশ, সিআরআই বাংলা বিভাগের সাবেক বিদেশী ভাষা বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন তাহেরও উপস্থিত ছিলেন।
এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বৈঠকে আলোচনা হয় ভবিষ্যতে বেতারের সাথে বেতারের সহযোগিতা আরো কিভাবে বাড়ানো যায়, বিভাগীয় পর্যায়ে সিআরআই এফএম অনুষ্ঠানের পরিধি বাড়াতে আরো বেশি রেডিও স্টেশনকে কিভাবে সংযুক্ত করা যায়, বর্তমানে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে এফএম-এ ১৮ ঘন্টা করে ৩৬ ঘন্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচার হচ্ছে। এই ৩৬ ঘন্টার অনুষ্ঠানকে ভাগ করে অন্যান্য বিভাগীয় অঞ্চলে এফএম চালু করা যায় কিনা সে বিষয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ বেতারের সাথে চীন বেতারের কারিগরী সহযোগিতা, প্রশিক্ষণমূলক সহযোগিতা, কর্মশক্তি ও কর্মকর্তা বিনিময় এবং অনুষ্ঠান বিনিময় করতে নীতিগত ভাবে উভয়পক্ষ সন্মত হয়েছে। বর্তমানে যে চুক্তি রয়েছে তার আওতায় খুব শীঘ্রই কর্মকর্তা বিনিময় বা প্রশিক্ষণ বিনিময় নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশ বেতার তাদের বহির্বিশ্ব কার্যক্রমে ৭ম ভাষা হিসেবে চীনা ভাষার অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার আগ্রহ প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-এর সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ বেতার। সব মিলিয়ে উভয় বেতারের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন বা রাজি হয়েছেন। এখন বাংলাদেশের আইনকানুন এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত পাওয়া গেলে কাজগুলি বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যাবে।
পরে চীনা অতিথিবৃন্দ সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুম পরিদর্শন করেন। এবং সেখানে ক্লাসরুমের পরিবেশনাগুলি উপভোগ করেন।
যাই হোক এখন আমরা সিআরআই-এর সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বাংলাদেশ সফরের গুরুত্ব নিয়ে দু'জন শ্রোতাসংঘের প্রতিনিধি এবং সিআরআই কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের কনসালটেন্টের সাথে কথা বলবো। সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউল করিম বেলাল, তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক শহীদুল কায়সার লিমন এবং সিআরআই বাংলা বিভাগের সাবেক বিদেশী ভাষা বিশেষজ্ঞ ও কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের কনসালটেন্ট শিক্ষক মহিউদ্দিন তাহের সিআরআই প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের গুরুত্ব নিয়ে তারা কি বলেছেন তা এখন আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো।
শ্রেতাবন্ধুরা আপনারা এতক্ষণ শুনছিলেন সিআরআই মহাপরিচালকের বাংলাদেশ সফরের ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। আপনারা জানেন, চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-এর কোন মহাপরিচালকের এটিই ছিল প্রথম বাংলাদেশ সফর।
ওয়াং গেং নিয়াং-এর বাংলাদেশ কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ আমার খুব ভাল লাগে। বাংলাদেশের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব আছে। চীন এখন উন্নয়নের রাস্তায় আছে বাংলাদেশও উন্নয়নের রাস্তায়। আমরা এ উন্নয়নের কাজ এক সঙ্গে করতে চাই। দুই পক্ষই যদি আমরা উন্নয়নের সঙ্গী হই তাহলে এই উন্নয়নটা আরো জোরদার হবে। কারণ আমরা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি বাংলাদেশও বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা যদি আমরা সত্যিকার অর্থে করতে পারি তাহলে আমাদের সম্পর্কটা আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তাঁর এই প্রত্যাশা সফল হোক, এই কামনা জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি।
দিদারুল ইকবাল
চীন আন্তর্জাতিক বেতার
বাংলাদেশ।