বিশ্বের প্রভাবশালী ১০ বাংলাদেশির মধ্যে ৩ জন নারী।
  2016-04-03 18:45:22  cri

'ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশন' মূলত যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি উদ্যোগ। বিশ্বজুড়ে বাংলার কৃতী সন্তানেরা নিজেদের দৃপ্ত পদচ্ছাপ রেখে এগিয়ে চলেছে দিগ্বিজয়ীর মতো। এই পদচারণা পরবর্তী প্রজন্মকে এগিয়ে দেবে হয়তো বহুদূর। আর সেই সঙ্গে বাংলাদেশের নামও উজ্জ্বল করবে বিশ্বের মানচিত্রে। এমনই সাফল্যমণ্ডিত মানুষদের নিয়ে ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত। ১০০ জন সবচেয়ে প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকা তারা প্রথম প্রকাশ করে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে। এই তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে তারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্যোগকে স্বাগত জানায় এবং উদযাপন করে।

এই তালিকায় তারা স্থান দেন সেইসব ব্যক্তি ও উদ্যোক্তাকে যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রেখেছেন। যে ব্যক্তি ও উদ্যোক্তারা শুধু নিজ প্রয়োজনে নয়, বরং দেশের স্বার্থে নিজেদের কর্মজীবন পরিচালনা করেন; তাদেরই এই তালিকায় ঠাঁই দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে তারা এমনই একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। এ তালিকায় মোট ১০ জনের নাম এসেছে। এর মধ্যে তিনজন নারী। এর মধ্যে আছেন, সারা হোসেন, সুমাইয়া কাজী ও নিশাত মজুমদার।

১. সারা হোসেন : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী সারা হোসেন। মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে তিনি কাজ করে চলেছেন বহু দিন ধরে। জোরপূর্বক উচ্ছেদের শিকার বস্তিবাসীদের আশ্রয় নিয়েও কাজ করছেন তিনি। এছাড়া নারী নিরাপত্তা ও আইনি ব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করার ফলে হয়রানির শিকার সাংবাদিকদের পক্ষেও তিনি সোচ্চার রয়েছেন সবসময়। বাংলাদেশের একজন আইনজীবী ও সুনাগরিক হিসেবে এই কাজগুলোকে নিজের কর্তব্য মনে করেন তিনি।

২. সুমাইয়া কাজী : সুমাইয়া কাজী জন্মসূত্রে বাংলাদেশি একজন মার্কিন নাগরিক এবং বিখ্যাত নারী উদ্যোক্তা। তার পৈতৃক নিবাস ফেনী শহরে। তিনি লেখাপড়া শেষ করে সান মাইক্রোসিস্টেমস নামক একটি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ওয়েবনির্ভর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন প্রফেশনালদের জন্য। তিনি সংবাদসংস্থা রয়টার্স এবং ক্লাউট কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ৫০ উদ্যোক্তার তালিকায় ১৬ নম্বরে অবস্থান করছেন। সিলিকন ভ্যালি বিজনেস জার্নাল তাকে 'ওমেন অব ইনফ্লুয়েন্স' উপাধি দিয়েছে। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস উইক ম্যাগাজিন ও কালার লাইট ম্যাগাজিন থেকে 'সেরা তরুণ উদ্যোক্তা'সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেছেন। পেয়েছেন সিএনএনের 'ইয়ং পারসন হু রকস' এবং কালার লাইট ম্যাগাজিনের সেরা তরুণ উদ্যোক্তার পুরস্কার।

৩. নিশাত মজুমদার : 'হিমালয় পার হওয়া' বলতে সবাই বোঝায় দুঃসাধ্য ব্যাপার। সেই দুঃসাধ্য কাজটিই করে দেখিয়েছেন নিশাত মজুমদার। তিনি প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালের ১৯ মে শনিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন। ঢাকা ওয়াসায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত তিনি। পেশায় একজন অ্যাকাউনটেন্ট হলেও নিজের নেশাকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। সারা বিশ্বের নারীদের সামনে তিনি একজন বড় মাপের আদর্শ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। হিমালয় জয় করার আগে বহুবার তিনি পর্বতারোহণ করেছেন প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে। তাই বলা যায়, এমন মানুষই তো সবার জন্য আদর্শ হবেন!

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040