নামকরণের ইতিহাস : 'জিকা' নামটি নেয়া হয়েছে উগান্ডার জিকা বন থেকে। ১৯৪৭ সালে হলুদ জ্বর নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা জিকা বনে একটি খাঁচায় একটি বানর রাখে। পরে বানরটি জ্বরে আক্রান্ত হলে তার দেহে একটি সংক্রামক এজেন্টের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। ১৯৫২ সালে এর নাম দেয়া হয় জিকা ভাইরাস। এরপর ১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়ায় একজন মানুষের দেহে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
লক্ষণ : জ্বর, চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি, গোঁড়ালিতে ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া-জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণত এসব লক্ষণ দেখা দেয়। এছাড়া পেশীতে ও মাথায় ব্যথা হতে পারে৷ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যেসব দেশে ছড়িয়েছে : ২০১৫ সাল নাগাদ আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার কয়েকটি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দুজন নাগরিকের শরীরেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
যেভাবে ছড়ায় : এডিস ইজিপ্টি নামের মশার কামড়ের মাধ্যমে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। যে কারণে মশার কামড় থেকে বাঁচার যে উপায়গুলো আছে, সেগুলো মেনে চললেই এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে।
ভ্যাকসিন নেই : এই রোগের চিকিত্সায় এখনও কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। মার্কিন বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে গবেষণা করলেও তারা জানিয়েছে, এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার হতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। আর বাজারে আসবে আরও পরে। যে কারণে সতর্ক থাকাটাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। অবশ্য এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা বিরল।
গর্ভবতী নারীদের সতর্কতা : সম্প্রতি একটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না গবেষকরা। তাদের কারো মত, কয়েকটি দেশে শিশুদের 'মাইক্রোসেফালি' রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী মা। এই রোগ হলে শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো হয় না। ফলে শিশুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়া, শারীরিক বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বা বিলম্বিত হওয়া থেকে শুরু করে অকালে মারা যাওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। বৈজ্ঞানিকভাবে অবশ্য এটি এখনও প্রমাণ করা যায়নি।
(ওয়াং হাইমান উর্মি/মান্না)