দীর্ঘ মেয়াদী মাথা ব্যথা
  2016-03-27 19:51:53  cri


দীর্ঘমেয়াদী মাথা ব্যথার অন্যতম একটি কারণ ক্লাস্টার মাথা ব্যথা। এটির প্রকৃত কারষ আজো জানা সম্ভব হয়নি। এই মাথা ব্যথা এপিসোডিক বা পালাক্রমে হয়। অর্থাত্ একবার হয়ে যাবার পর রোগী বেশ কিছুদিন ভাল থাকে। তারপর আবার মাথা ব্যথা হয়।

ক্লাস্টার মাথা ব্যথায় চোখ লাল হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, নাক বন্ধ থাকে বা নাক দিয়ে পানি পড়ে, অস্থির লাগে, বমিভাব হয় এবং ক্ষুধামন্দা থাকে। এ ধরনের মাথা ব্যথা সাধারণত মাথার একদিকে হয়ে থাকে। ক্লাস্টার মাথা ব্যথা ছেলেদের বেশি হয়। এর পেছনে কোনো কারণ স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। পরিবারের কারো একজনের থাকলে অন্যদের হবার সম্ভাবনা থাকে। যাদের বয়স ২০ বা তার বেশি তার ক্ষেত্রে এ ধরণের মাথা ব্যথার সম্ভাবনা বেশী।

বিজ্ঞানীরা ক্লাস্টার মাথা ব্যথার যথাযথ কারণ আজো বের করতে পারেনি। তবে সেরোটোনিন এবং হিস্টামিন নামের দুটি উপাদানের সাথে যে অসুখের সম্পর্ক আছে তা আজ প্রমানিত। গবেষকরা হাইপোথ্যালামাসের সাথে অসুখের সম্পর্ক পেয়েছেন।

ক্লাস্টার মাথা ব্যথা শুরু হবার কিছু 'ট্রিগার ফ্যাক্টর' আছে। যেমন- মদপান ও ধূমপান,অতি উজ্জল আলো, উত্তাপ, কিছু ওষুধ, কোকেন, অত্যাধিক পরিশ্রম,উচুঁ স্থানে আরোহন। এসবের ফলে মাথা ব্যথা শুরু হয়। ক্লাস্টার মাথা ব্যথা ডায়াগনসিস খুব একটা কঠিন নয়। তবে দক্ষ চিকিত্সকের দরকার। ইতিহাস নিলে এবং শারীরিক পরীক্ষা করলে অসুখটি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। সিটিসড়্যান এবং এমআরআই করা হয় অন্য কোন অসুখ আছে কিনা তা জানার জন্য। কিছু ওষুধ আছে যা ক্লাস্টার মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করে। যেমন-প্রোপানোলল, ভেরাপামিল,সাইপ্রোহেপ্টাডিন,টপিরামেট,ভ্যালপ্রোয়িক এসিড, লিথিয়াম,এমিট্রিপটাইলিন ইত্যাদি। আর হঠাত্ ক্লাস্টার মাথা ব্যথা শুরু হলে ট্রিপট্যান জাতীয় ওষুধ বা স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। ১০০% অক্সিজেন দিলে রোগী দ্রুত আরাম পায়। ক্লাস্টার মাথা ব্যথা জীবনের জন্য হুমকি! এই ধরণের মাথা ব্যথায় ব্রেনের কোন ক্ষতি হয়না। কিন্তু এ ধরণের মাথা ব্যথা শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দেয়। অভিজ্ঞ একজন নিউরোলোজিস্টের কাছে গেলে অনেক ভাল ভাবে এ ধরণের মাথাব্যথা মোকাবেলা করা যায়।

মাথা থাকবে আর মাথায় ব্যথা হবে না তা হতে পারে না। মাথা থাকলে মাথাব্যথাও থাকবে। মাথাব্যথায় পড়েননি এমন কেউ নেই। দিনের শুরুতে, কাজের সময় এমনকি রাতে ঘুমের সময় মাথা ধরে দিনটাই মাটি করে দিতে পারে। আজ মাথাব্যথা থেকে দূরে থাকার কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো আমরা।

দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, টেনশন এসব মনের ওপরে চাপ ফেলে। সারাক্ষণ মানসিক অস্থিরতার মাঝে থাকলে মাথা ব্যথা হবেই, এটা স্বাভাবিক। দুশ্চিন্তা কমাতে হবে, পেশাগত মানসিক চাপ ঘরে বয়ে আনা যাবে না। মনকে বিশ্রাম দিন, ঘরে ফিরে মাথা থেকে কাজের কথা বাদ দিয়ে একান্ত কিছু সময় কাটান।

বিশ্রাম নিন পর্যাপ্ত। গবেষকেরা দেখেছেন ঠিকমতো ঘুম না হলে অনেকেরই মাথায় ব্যথা হতে পারে। কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা ঘুম দরকার পূর্ণবয়স্ক মানুষের। কম ঘুমানো, ঘুমের মাঝে বাধা, সাউন্ড স্লিপ না হওয়া থেকে বাঁচতে কিছু ব্যবস্থা নিন। ঘুমের আগে ভারি কাজ করবেন না, ঠাণ্ডা পানিতে শরীর ধুয়ে ফেলুন, স্নিগ্ধ মনে বিছানায় যান। অন্ধকার শব্দহীন ঘরে একটা আরামের ঘুম দিন, পরের দিন মাথা ধরা থাকবে না।

পছন্দের গান শুনতে পারেন যা মনকে শান্ত করবে। ক্লাসিকাল মিউজিক যেমন রাগপ্রধান গান বা যন্ত্রসঙ্গীত শুনতে পারেন।(ওয়াং হাইমান/মান্না)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040