0308shishi.mp3
|
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ উপলক্ষ্যে চায়না নারী ফেডারেশন সোমবার বেইজিংয়ে মহা গণভবনে দেশি-বিদেশি নারীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এক হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি নারী প্রতিনিধি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের নারী ব্রতের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চীনের জাতীয় নারী ফেডারেশনের চেয়ারম্যান শেন ইয়ুন ইয়ুন বলেন, চীনে নারীরা পুরুষদের মত সমাজের অপরিহার্য শক্তিতে পরিণত হয়েছেন এবং চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
তিনি বলেন, "এ বছর চীনের নারী ব্রতের নতুন অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে লিঙ্গসাম্য আরো বলিষ্ঠভাবে কার্যকর করা হয়েছে। 'চীনের লিঙ্গসাম্য এবং নারী বিকাশ' বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে। চীনের প্রথম পারিবারিক নির্যাতন বিরোধী আইন চালু হয়েছে। নারী বিকাশের পরিবেশ ধাপে ধাপে উন্নত হয়েছে। চীনা নারীরা অভূতপূর্ব আবেগ নিয়ে সংস্কার ও উন্নয়নের বাস্তব অনুশীলনে অংশ নিচ্ছেন, সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গঠনের জন্য মেধা ও শক্তি দিয়ে অবদান রাখছেন।"
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের নারীদের সম কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত চীনে নারীদের কর্মসংস্থানের পরিমাণ মোট কর্মসংস্থানের ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ইন্টারনেট খাতে ৫৫ শতাংশ কর্মী হলেন নারী। তা ছাড়া, নারীদের স্বাস্থ্যের মানও উন্নত হয়েছে। ২০১০ সালে নারীদের গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে ৭৭.৪ বছর, যা পুরুষের চেয়ে ৫ বছর বেশি। ১৯৯০ সালে প্রতি ১ লাখ গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীর মধ্যে ৮৮.৮ জনের মৃত্যু হতো, ২০১৪ সালে প্রতি ১ লাখ গর্ভবতী ও প্রসূতি নারীর মধ্যে মৃত্যু হার কমে ২১.৭ হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়নলক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নারী প্রতিনিধিরা চীনের নারী ব্রতের উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
যেমন, "নারীদের দারিদ্র বিমোচন আর নারীদের স্বার্থ ও অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চীন বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। চীনের অভিজ্ঞতা অন্যদেশেও সম্প্রচার করা যায়।"
এখন চীনে নারীদের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগও বেড়েছে। ২০১৪ সালে ছেলে ও মেয়েদের প্রাথমিক স্কুলে ভর্তির হার সবই ৯৯.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। চীনের সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় আর মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের অনুপাত যথাক্রমে ৫২.১ শতাংশ ও ৫১.৬ শতাংশ। নারীরা ব্যাপকভাবে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ব্যবস্থাপনায় অংশ নিয়েছেন। ১৯৫৪ সালে প্রথম জাতীয় গণ কংগ্রেসে নারী প্রতিনিধির অনুপাত ছিলো ১২ শতাংশ। দ্বাদশ জাতীয় গণ কংগ্রেসে নারী প্রতিনিধির অনুপাত ২৩ শতাংশেরও বেশি।
চীনের জাতীয় গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য চাং চিং সিআরআইয়ের সংবাদদাতাকে জানান, চীনের দুই অধিবেশন চলাকালে ৮ মার্চ নারী দিবস পালন করা হয়েছে। দুই অধিবেশনে নারী প্রতিনিধি ও সদস্যরা নিজ দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশ প্রশাসনের জন্য নানা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তাদের প্রতি এটি ছিলো এ দিবসের বিশেষ উপহার।
চাং চিং বলেন, "নারী সদস্য আর পুরুষ সদস্যের দায়িত্ব একই। আমাদেরও উচিত সক্রিয়ভাবে দেশ প্রশাসনে অংশগ্রহণ করা, মতামত ও প্রস্তাব দেওয়া। গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্যদের উচিত যথাযথভাবে এ ভূমিকা পালন করা। আমি একজন নারী সদস্য হিসেবে নারীদের সমস্যা সমাধান করা ও লিঙ্গসাম্য অগ্রসর করার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রস্তাব উত্থাপন করবো।" (ইয়ু/টুটুল)