সুর ও বাণী: স্কুলের সহপাঠীদের বন্ধুত্ব কখনও ভোলা যায় না
  2016-03-03 19:20:07  cri


গত শনিবার প্রাথমিক স্কুলের সহপাঠীদের এক পার্টিতে আমি উপস্থিত ছিলাম। প্রায় ত্রিশ বছর পর তাদের সঙ্গে আমার দেখা। সেই সহপাঠীদের মুখে এখন বয়সের ছাপ। কিন্তু পার্টিতে আমরা সেই ছোটবেলার মতোই হৈচৈ করেছি, গল্প করেছি, স্মৃতিচারণ করেছি। আপনারও কি এ ধরনের পার্টিতে মিলিত হন? বহু বছর পর দেখা হয় ছোটবেলার সহপাঠীদের সঙ্গে? আশা করি হয়। তো, বন্ধুরা, আজকে আপনাদের গানে গানে নিয়ে যাবো সেই মধুর অতীতে।

বন্ধুরা, এখন আপনারা হংকংয়ের কণ্ঠশিল্পী চেন ঈ শুনের কণ্ঠে শুনছেন 'কতোদিন দেখা হয়নি' শীর্ষক গান। গানের বাণী বাংলা করলে অনেকটা এমন দাঁড়াবে: 'আমি তোমার শহরে এসেছি। তোমার চলার পথে হাঁটছি। ভাবছি, আমাকে ছাড়া কীভাবে তোমার সময় কেটেছে! তোমার কী কখনও নিজেকে একা মনে হয়েছে? আমরা অতীতে ফিরতে পারবো না। কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই। দেখতে চাই, তোমার মধ্যে কী কী পরিবর্তন ঘটেছে। আমি তোমাকে বলতে চাই, বন্ধু, কী খবর বলো, কতোদিন দেখা হয়নি!'

বন্ধুরা, আমার প্রাথমিক স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুল একই ছিল। কিন্তু মাধ্যমিক স্কুলের দ্বিতীয় বছরেই আমি অন্য এক স্কুলে চলে যাই। তার পর থেকে পুরনো স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে আর দেখা হয়নি। সময় কতো দ্রুত যায়! কোথা দিয়ে যে ত্রিশটি বছর কেটে গেল, বুঝতেই পারিনি! নিশ্চয়ই একটি প্রশ্ন আপনাদের মনে জাগছে: কীভাবে এত বছর পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলো? উইচ্যাটের মাধ্যমে। আপনারা অনেকেই জানেন, চীনে খুব জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে উইচ্যাট। তো, আমাদের কেউ কেউ ছোটোবেলার ছবি উইচ্যাটে আপলোড করেছিল। সেই থেকেই যোগাযোগ।

আমার মনে আছে, স্কুলে আমি নাচের দলে ছিলাম। ফিবছর নববর্ষ ও আন্তর্জাতিক শিশু দিবসে মঞ্চে বন্ধুদের সঙ্গে নাচতাম। আমি ব্যান্ডদলেও ছিলাম। যে-কোনো সাংস্কৃতিক বা ক্রিড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে আমরা ড্রাম বাজাতাম। কী আনন্দের সময় ছিল তখন!

বন্ধুরা, এখন শুনছেন শু ওয়ে'র কণ্ঠে 'অতীতের তুমি' শীর্ষক গান। গানটিতে যৌবনের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে। এতে ফুটে উঠেছে গায়কের অবিচলিত মনোভাব ও আত্মবিশ্বাসও। গায়ক বলছেন: 'আমার স্বপ্ন ছিল তরবারি হাতে বিশ্বে সমৃদ্ধি আনবো। স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে ব্যথা ও বেদনা ছিল, চমত্কার মুহূর্তও ছিল। পথে অনেক বন্ধুর সঙ্গে পরিচয়। তারা আমার ক্ষতস্থানে মলম মেখে দিয়েছে।'

সহপাঠীদের পার্টিতে আমরা স্মৃতিচারণ করছিলাম। কে কোন টেবিলে কার সঙ্গে বসতো, কে কার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া করতো, এইসব! মনে পড়ে, ঝগড়া হলে লম্বা টেবিলের মাঝখানে কলম দিয়ে একটি লাইন আঁকা হতো। মিল্‌মিশ্‌ না-হওয়া পর্যন্ত এই রেখা অতিক্রম করা ছিল নিষিদ্ধ। এটা ছিল আমাদের কাছে মজার এক খেলার মতো।

একজন জানালো, ছোটবেলায় সে একটি মেয়েকে পছন্দ করতো। কিন্তু বলার সাহস পায়নি। মেয়েটিকে সে শুধু দূর থেকে দেখতো আর ভালোবাসতো। এখন দু'জনই মধ্যবয়সী, এখন আর বলতে বাধা নেই। আমরাও শুনেছি গল্পের মতো এই কথাগুলো, প্রাণ খুলে হেসেছি।

বন্ধুরা, এবার শুনুন 'একই টেবিলের সহপাঠী' গানটি। গেয়েছেন লাও লাং। এ গানটি চীনের ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে। ১৯৯৫ সালে গানটি প্রকাশের পর থেকে এখন পর্যন্ত এর জনপ্রিয়তা এতোটুকু কমেনি।

গানের বাণী বাংলা করলে অনেকটা এমন হবে: 'আগামীকাল কি তুমি মনে করতে পারবে, গতকাল তোমার ডায়েরিতে কী লিখেছিলে? অতীতের ছবিগুলো দেখার সময় একদিন হঠাত তোমার কথা মনে পড়লো। তোমার কার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে? কে তোমার বিয়ের পোশাক বানিয়েছে? তুমি আমার কাছ থেকে রাবার ধার করতে। একবার তুমি বলেছিলে, আমার সঙ্গে থাকতে পছন্দ কর। সে সময় আকাশ সবসময় সুন্দর নীল রঙের ছিল; সে সময় দিন খুব দ্রুত গতিতে শেষ হতো।'

1 2
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040