হ্যালো চায়না: ৭. চাঁদ
  2016-02-19 19:00:07  cri

চাঁদ হচ্ছে সূর্যের বিপরীত। প্রাচীনকালে চীনের মানুষ চাঁদকে 'থাই ইন' বলে ডাকত। আর চীনা ভাষায় সূর্য হলো 'থাই ইয়াং'। চাঁদের পূর্ণতা ও হ্রাসের হিসেব অনুযায়ী চাদ্রপঞ্জিকায় 'মাস' গণনা করা হয়। চীনের মানুষ চাঁদ পছন্দ করে। কারণ, যখন প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে, তখন আকাশের চাঁদের দিকে চোখ তুলে তাকায়। চান্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী ১৫ আগস্ট চীনে মধ্য-শরৎ উত্সব শুরু হয়। এ সময়টি হলো ভরা পূর্ণিমা। পূর্ণ চন্দ্রের এ রাতে পারিবারিক পুনর্মিলনে সবাই চাঁদের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রদর্শন করে। অতীতকালে প্রাচীন চীনের মানুষ চাঁদ পূজাও করত। এ সময় চীনারা প্রিয়জনের সান্নিধ্য উপভোগ করে এবং দূরে থাকা আত্মীয় স্বজনদের কথা মনে করে। এ রাতে সবাই একসঙ্গে 'মুন কেক' খায়। এই মুন কেক মধ্য-শরৎ উত্সবের অন্যতম অনুষঙ্গ।

কেনো চাঁদের বুকে গাছের মতো ছায়া দেখা যায়? চাঁদে কি কেউ বসবাস করে? প্রাচীন চীনের মানুষ এ সম্পর্কে জানত না তাই এ নিয়ে অনেক পৌরাণিক কাহিনী তৈরি হয়েছে এবং এর মধ্যে ছাংওর কাহিনী সবচেয়ে বিখ্যাত।

বীর হৌ ই ও ছাংও দম্পতি পরস্পরকে অনেক ভালবাসতেন। এক দেবতার কাছ থেকে হৌ ই পেয়েছিলেন সর্বরোগের ওষুধ। কিন্তু সেই ওষুধ সেবন করে ছাংও এর কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চান না হৌ ই। তাই ওষুধটি লুকিয়ে রাখেন তিনি। অন্যদিকে, অমরত্ব লাভের আগ্রহে ওষুধটি খাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন ছাংও। তাই একদিন যখন হৌ ই বাড়িতে ছিলেন না, তখন গোপনে ওষুধটি খায় ছাংও। এরপরই আকাশের উড়ন্ত পরীতে রূপান্তরিত হয়ে যান তিনি। অমরত্ব লাভ করেন ঠিকই, কিন্তু একা একা উড়ে চলে যান সুদূর চাঁদের বুকে। ভীষণ অনুতপ্ত হন তিনি, কিন্তু ফিরে আসার আর কোনো উপায় নেই। এরপর থেকে পৃথিবীর মানুষ ছাংও সম্পর্কে অনেক আগ্রহী হয়ে ওঠে। তাই যখন চীনারা পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলো উপভোগ করে, তখন ছাংও'র কথা আলোচনা করে তারা। তাদের মনে ভেসে ওঠে একজন সুন্দর ও দুর্বল চিত্তের নারী ছাংও'র কথা। চীনের সংস্কৃতিতে চাঁদ হলো ইন এবং এটি নারী চরিত্রের প্রতীক।

প্রাচীনকাল থেকেই চীনের মানুষ চাঁদে যাবার আগ্রহ পোষণ করে। ওখানে ছাংও'র অস্তিত্ব আছে কিনা তা দেখার আগ্রহও ছিল। আর তাইতো, চাঁদের কক্ষপথে চীনের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম 'ছাংও ওয়ান'। এ নামটির পেছনে রয়েছে চীনের পৌরাণিক কাহিনীটি।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040