বেইজিংয়ের শিচিংশান এলাকায় একটি উদ্যোক্তা কমিউনিটি আছে। এই কমিউনিটি অফিস স্পেস, পারস্পরিক ও আর্থিক সেবা এবং সাপোর্টিং নীতিমালা সরবরাহ করার মাধ্যমে উন্নত ও নতুন প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করে থাকে। এ সহায়তার ফলেই গত দু'বছরে ওয়াং চিন শেং'র শিল্প-প্রতিষ্ঠানে কর্মীসংখ্যা ১০ থেকে বেড়ে শতাধিক হয়েছে। কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণও শুরু দিকের ৬ লাখ থেকে বেড়ে বর্তমানে ২ কোটির ওপরে পৌঁছেছে। ওয়াং চিন শেং বলেন, এখানে অফিস স্থাপন করে কাজ করার সুবিধা আছে। পাশাপাশি কমিউনিটি থেকে ভালো পরামর্শ ও সহযোগিতাও পাওয়া যায়।
পরিসংখ্যান অনুসারে, শিচিংশান উদ্যোক্তা কমিটি ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর এ পর্যন্ত ৬ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এর সদস্য হয়েছে। এখন কমিউনিটির ফাইন্যান্সিংয়ের মোট পরিমাণও ২শ' কোটি ছাড়িয়েছে। ২০১৫ সালের প্রথম ১১ মাসে প্রতিষ্ঠানগুলো কর দিয়েছে ৭.৮ কোটি ইউয়ান। শিচিংশান এলাকায় এটি একটি নতুন রেকর্ড।
শুধু বেইজিংয়ে নয়, ২০১৫ সালে গোটা দেশেই উদ্ভাবন ও নতুন প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। অর্থনীতিবিদ জাং লিয়ানছি বলেন, সৃজনশীলতা ও নতুন শিল্পের উন্নয়ন চীনের অর্থনীতিতে রূপান্তর ও উন্নয়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং এ খাতে যুগিয়েছে নতুন প্রাণশক্তি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৃজনশীলতা 'ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনার' অন্যতম চালিকাশক্তি হবে এবং চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি সৃজনশীলতা নির্মাণশিল্পের রূপান্তর প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত করছে বলে তাদের অভিমত।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম উত্পাদন শিল্প খাত থেকে কর আদায় হয়েছিল ১৮,৭০০ কোটি ইউয়ান। এ ছাড়া, ওষুধ, প্রযুক্তিগত পরিসেবা, তথ্যপ্রযুক্তি, নতুন ধরনের পরিসেবা শিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্প খাত থেকেও তুলনামূলকভাবে বেশি কর আদায় হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৃজনশীলতার প্রতি নজর দেওয়ার কারণেই কর আদায় ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন ঘটেছে এবং কর আদায় বেড়েছে।
২০১৬ সালেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থনীতিবিদ লি ই নিং মনে করেন, সৃজনশীলতার ফলে সৃষ্ট নতুন প্রাণশক্তি চীনের অর্থনীতির অধোগতি রোধ করবে। (প্রেমা/আলিম)