হ্যালো চায়না: ৫. লাও যি
  2016-02-05 19:03:20  cri

লাও যি'র পারিবারিক পদবী লি এবং তাঁর নাম 'আর'। প্রাচীনকালে লি ও লাও এ দু'টি শব্দের উচ্চারণ একই ধরনের হতো বলে মানুষ তাঁকে লাও যি বলে ডাকত। লাও যি ছিলেন বসন্ত ও শরৎ যুগের (খৃষ্টপূর্ব ৭৭১-৪৭৬) একজন দার্শনিক চিন্তাবিদ। তাঁকে চীনের দর্শনশাস্ত্রের জনক বলা হয়। লাও যি'র রচনাবলীর আরেকটি নাম হলো 'তাও তে চিং'। বিদেশি ভাষায় এ গ্রন্থটির এক হাজারের বেশি সংস্করণ রয়েছে এবং এ গ্রন্থটি সবচেয়ে বেশি বিদেশি ভাষায় অনুবাদিত চীনা গ্রন্থ।

লাও যি তাওবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সর্বদর্শন ধারণা 'তাও' এর মূল কথা। তাওবাদের মর্মকথা হলো, এ মহাবিশ্বের সবকিছু অভিন্ন নিয়ম মেনে চলছে। তাই প্রকৃতি ও মানবজাতি সম্প্রীতি ও ঐক্য ধরে রাখা উচিৎ। এ অভিন্ন নিয়মের আরেকটি কথা হলো 'ইন ও ইয়াং' এর রূপান্তর। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে 'ইন ও ইয়াং' এর রূপান্তর কি? এটা হলো পরস্পর বিপরীতধর্মী দুটো জিনিস, কিন্তু একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। যেমন লাও যির ধারণায় ভালো ও মন্দ পরস্পরের ওপর নির্ভর করে। কখনও কখনও ভালো জিনিস খারাপ জিনিসে পরিণত হতে পারে এবং মাঝে মাঝে তার বিপরীতও হতে পারে। লাও যি মনে করেন, 'আছে' ও 'নেই', 'কাজ করা' ও 'কাজ না করা' হচ্ছে আপেক্ষিক ধারণা, পরস্পরের রূপান্তর হতে পারে। 'কাজ না করা' মানে স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কাজ না করে আসলে আরো বেশি উপকার লাভ করা। এর মাধ্যমে মূলত 'কাজ করা' হয়েছে। সুতরাং স্বার্থের জন্য কষ্ট করার প্রয়োজন নেই। 'কাজ না করা'র এ ধারণা চীনা মানুষের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে, তাই চীনারা মনে করে খ্যাতি অর্জনের জন্য সংগ্রাম না করা এক ধরণের পুণ্য।

শুধু চীনেই নয়, বিশ্বব্যাপী লাও যির দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040