guangying
|
এ তথ্যচিত্রের মোট ৭টি পর্ব আছে। প্রথম পর্বের নাম হলো 'প্রকৃতির উপহার'। চীন বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্যসম্পন্ন দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। পাহাড়, পর্বত, হ্রদ, সাগর- এমন ধরনের ভৌগলিক উপাদান সারা চীনে বিরাজমান। চীনের মতো এমন সব উপাদান অন্য কোনো দেশে খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন।
প্রকৃতির উপহারস্বরূপ চীনারা চারটি ঋতুতে সবকিছু সংগ্রহ করেন। এই পর্বে সুস্বাদু খাবারের পিছনে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের গল্প তুলে ধরা হয়। প্রকৃতি কিভাবে নানা উপায়ে চীনাদের খাবার উপহার দিয়েছে এবং চীনারা কিভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সম্প্রীতিতে বাস করে তাও তুলে ধরা হয়েছে এ পর্বটিতে।
দ্বিতীয় পর্বের নাম হলো 'প্রধান খাদ্যের গল্প'। এই খাদ্য মানুষের প্রয়োজনীয় অধিকাংশ ক্যালরি যোগায়। চীনাদের রন্ধনের উপায় একটু ভিন্নতর। সাধারণ ভাত থেকে মানথৌ এবং নানা রকমের খাবার সবই চীনাদের পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার ফল। যতই সুস্বাদু সবজি বা মাংস খাওয়া হোক না কেন, এই 'প্রধান খাবার' সবসময়ই চীনাদের টেবিলের সর্বশেষ প্রধান চরিত্র।
তৃতীয় পর্বের নাম হলো 'পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা'। চীনারা সবসময়ই নতুন নতুন খাবার তৈরি করার চেষ্টা করে থাকেন।
চতুর্থ পর্বের নাম হলো 'সময়ের স্বাদ। সময় একদিকে খাবারের সেরা বন্ধু, অন্যদিকে খাবারের বড় শত্রু। খাবার সংরক্ষণের জন্য চীনাদের বৈচিত্র্যময় প্রযুক্তি রয়েছে। তবে লবণ দিয়ে ও পুরাতন উপায়ে যে খাবার সংগ্রহ করা হয় তাতে আরো সুগভীর ও চমত্কার স্বাদ পাওয়া যায়।
পঞ্চম পর্বের নাম হলো 'রান্নাঘরের গোপনীয়তা। চীনা খাবারের সংখ্যা গণনা এবং এসব খাবারের শ্রেণিবিভাগ করা অসম্ভব একটি ব্যাপার। ভাজা, রান্নার সময়কাল, গন্ধ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সব বিষয় দেখতে অনেক সহজ, তবে বাস্তবে তা অনেক জটিল। কেউ কেউ বলে থাকেন, চীনা বাবুর্চিরা জাদুকরের মতো। চীনের রান্নাঘরে হাজার রকমের গোপনীয়তা থাকে। কে বলতে পারেন সেসব? হয়তো কেউ-ই বলতে পারেন না।
ষষ্ঠ পর্বের নাম হলো 'অ্যাসিড, মিষ্টি, লবণ, ঝাল ও নিমকিসহ পাঁচটি স্বাদের সমন্বয়'।
চীনারা কেবল জিহ্বা ও নাক দিয়ে স্বাদগ্রহণ করা ছাড়াও, মন দিয়ে স্বাদগ্রহণ করে থাকেন। এই পর্বে ১০টি গল্পের মাধ্যমে ছুয়য়ে (সি ছুয়েন), লু (শানতোং), ইউয়ে (কুয়াং তোং) ও হুয়েইয়াংসহ চারটি মৌলিক খাবারের রন্ধনপ্রণালী এবং সিন চিয়াং ও ইউন নানসহ প্রতিনিধিত্বকারী আঞ্চলিক খাবার তুলে ধরা হয়।
সপ্তম পর্বের নাম হলো 'আমাদের জমি'। চীনে একটি প্রবাদ আছে, তা হলো- 'পাহাড়ের পাশে বাস করে পাহাড়ের ওপর নির্ভর করে জীবন কাটান এবং সাগরের পাশে বাস করে সাগরের ওপর নির্ভর করে জীবন কাটান'। আসলে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খেয়ে চলা হলো চীনের বৈশিষ্ট্যময় বেঁচে থাকার উপায়।
এই পর্বে খাবারটেবিল থেকে জমিতে প্রত্যাবর্তন করা হয়। এতে পরিবেশবান্ধব কৃষি উত্পাদনের উপায় প্রদর্শিত হয়। এমন ধরনের উপায় সুস্বাদু খাবারের গুণগত মানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়তা যোগাতে সক্ষম।
'এ বাইট অব চায়না' তথ্যচিত্রের পরিচালক ছেন সিও ছিন বলেন, এ তথ্যচিত্রের লক্ষ্য হলো সুস্বাদু খাবারকে একটি জানালা হিসেবে ব্যবহার করে দেশি-বিদেশি দর্শকদের কাছে চীনা খাবারের সৌন্দর্য, চীনা সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও সমাজের পরিবর্তন তুলে ধরা।
পরিচালক ছেন সিও ছিন আরো বলেন, 'খাবারের প্রতি সম্মান ও অনুভূতি নিয়ে এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি'। তিনি মনে করেন, আন্তরিকতা হলো শিল্পের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কোনো শিল্পকর্ম যদি নিজেকে মুগ্ধ করতে পারে, তাহলে অন্যদেরকেও তা মুগ্ধ করতে সক্ষম। কোনোকিছু নিজের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হলে তা অন্যদের কাছেও বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে।
'আলোছায়া' পরিবেশনায় লিলি লাবণ্য এবং এনামুল হক টুটুল।