guangying
|
২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি চীনে প্রথমবারের মতো আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্র উত্সব, অর্থাত্ চু রোং গ্রামের আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্র উত্সব বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্র সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়। আয়োজকরা আঞ্চলিক ভাষার সংস্কৃতি এবং আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্রের সামাজিক প্রভাব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এ কাজ করেন।
এখানে একটি কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, আপনারা জানেন, এই চলচ্চিত্র উত্সবের আয়োজক হলো চীনের কুয়াং তোং প্রদেশের লুই চেউ উপ-দ্বীপের একটি গ্রাম। তাই বলা যায়, এই আঞ্চলিক ভাষার চলচ্চিত্র উত্সব হলো একটি বেসরকারি উত্সব। তবে এর উদ্দেশ্য, কাঠামো এবং পুরস্কার অনেক চমত্কার।
এই চলচ্চিত্র উত্সবে 'শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার', 'শ্রেষ্ঠ তথ্যচিত্র পুরস্কার', 'শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক পুরস্কার', 'শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার পুরস্কার', 'শ্রেষ্ঠ পুরুষ ও নারী অভিনেতা-অভিনেত্রী পুরস্কার'সহ সাধারণ পুরস্কার ছাড়াও, আরো চালু করা হয় বেশ কয়েকটি পুরস্কারও, যেমন- আঞ্চলিক সঙ্গীত উপাদান দিয়ে চলচ্চিত্রের আবহসঙ্গীত পুরস্কার প্রভৃতি। তা ছাড়া, আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে তৈরি চলচ্চিত্রের গবেষণা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতাদের শিল্প সৃষ্টি করাকে সমর্থন করার জন্য আয়োজক 'আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে তৈরি চলচ্চিত্রের উন্নয়ন তহবিল' প্রতিষ্ঠা করে।
চু রোং গ্রামবাসীদের প্রতিনিধি ও চলচ্চিত্র উত্সবের আয়োজক মাও তে কোং গ্রুপের চেয়ারম্যান ছেন ইউ দশ বছর ধরে আঞ্চলিক ভাষার সংরক্ষণ কাজ করে আসছেন। তিনি মনে করেন, এবারের এ চলচ্চিত্র উত্সব আঞ্চলিক ভাষার সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং আঞ্চলিক ভাষায় বহুপক্ষীয় শৈল্পিক কাজ চালাতে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুপ্রেরণা দিতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, এবারের চলচ্চিত্র উত্সবের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন চীনের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক কাও ছুন শু। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ভাষা হলো মানুষের মূল। যত দূরেই থাকি না কেন টেলিফোনের অপর দিক থেকে বাবা মার সুপরিচিত আঞ্চলিক ভাষা শুনে আমরা বুঝতে পারি, জন্মস্থান আমাদের ডাকছে।
তা ছাড়া, চীনের বিখ্যাত কবি, পর্যালোচক ও চলচ্চিত্র পরিচালক ছিন সিও ইউন এবারের চলচ্চিত্র উত্সবের জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইন্টারনেট দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটে আঞ্চলিক ভাষাও সক্রিয় হয়ে ওঠতে শুরু করে। আঞ্চলিক ভাষা দিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র চীনের চলচ্চিত্র বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়। চলচ্চিত্রে আঞ্চলিক ভাষা সরাসরি তুলে ধরা হয় এবং সংরক্ষণ করা হয়। যা চলচ্চিত্রশিল্প প্রকাশের বিশেষ উপায়ে পরিণত হয়। একই সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষা চরিত্রের প্রকৃতি ও কাহিনী তুলে ধরার অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়।
সাম্প্রতিক কালে বিদেশে চীনের চলচ্চিত্র ও টিভিনাটকের প্রভাব
সম্প্রতি চীনের বেতার, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনঅনুষ্ঠান বিনিময় কেন্দ্রের মহাপরিচালক মা রুন শেং বলেন, অধিক থেকে অধিকতর চীনা চলচ্চিত্র ও টিভিনাটক 'এক অঞ্চল, এক পথ' বরাবর অঞ্চলসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করেছে। চীনা সংস্কৃতির প্রতিনিধি হিসেবে চীনের চলচ্চিত্র ও টিভিনাটক দ্রুত গতিতে বিশ্বে পা ফেলেছে, ফলে দিন দিন চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাবও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
২০১৩ সালে চীন সরকারের উদ্যোগে আধুনিক শিল্পকর্মের অনুবাদ প্রকল্প চালু হয়। এর পর থেকে অনেক প্রতিনিধিত্বকারী আধুনিক চলচ্চিত্র ও টিভিনাটক বিভিন্ন বিদেশি ভাষায় অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা শুরু হয়। অনেক চীনা গল্প প্রাণবন্তভাবে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এখানে একটি তথ্যচিত্রের নাম অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। তা হলো 'এ বাইট অব চায়না-১'।
সুস্বাদু খাবার সম্পর্কিত দারুণ প্রশংসনীয় এই বিরাটাকারের তথ্যচিত্র বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে প্রচারিত হয়েছে। অনেক দর্শক এ তথ্যচিত্র দেখার পর চীন ভ্রমণ করেন। কেবল তথ্যচিত্রে তুলে ধরা চীনের সেই সুস্বাদু খাবারের স্বাদগ্রহণের জন্যই চীনে আসেন তারা।
সবাই হয়তো জানেন, চীন একটি বিশাল দেশ। তাই চীনের খাবারদাবারের সংখ্যাও অনেক বিচিত্র।বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, স্বাদ এবং রন্ধনের পদ্ধতি আছে। বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন বিশেষ খাবারও আছে। বিশেষ খাবার, এর অর্থ হলো এই জায়গা ছাড়া, আপনি অন্য কোথাও এ রকমের খাবার খেতে পারবেন না।
'বিউটিফুল ডটার-ইন-ল' নামে চীনের একটি টিভিনাটকের সোয়াহিলি ভাষার সংস্করণ তাঞ্জানিয়াসহ আফ্রিকায় প্রচার হয়েছে। এর পর থেকে চীনের আধুনিক তরুণ-তরুণীদের দৈনন্দিন জীবন আফ্রিকান দর্শকদের মনে গভীর দাগ কেটেছে।
গত বছরের নভেম্বর মাসে ভিয়েতনামের জাতীয় টিভি কেন্দ্রে 'বেইজিং ইয়োথ' নামের একটি টিভিনাটক প্রচারিত হয়। দর্শকরা নিজ দেশের চ্যানেলে ভিয়েতনামি ভাষায় চীনের তরুণ তরুণীদের পরিশ্রম করার কাহিনী দেখতে পান। 'আলোছায়া' পরিবেশনায় লিলি লাবণ্য ও এনামুল হক টুটুল।