0125edu
|
সুপ্রিয় শ্রোতা, পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠানে আজ আপনারা শুনবেন চীনের নিংপো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মইনুদ্দিন হাসান সোহেলের সাক্ষাতকার।
বিদেশে চীনা শিক্ষার্থী: ২০১৫ সালের রিপোর্ট
২০১৫ সালের শেষ দিকে খাই থাখ শিক্ষা গ্রুপ (Kai Tak Education Group) বিদেশে চীনা শিক্ষার্থীদের অবস্থা পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরী করে। রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য বিবেচনায় নেওয়া হয়। রিপোর্ট অনুসারে, বিদেশে চীনা শিক্ষার্থীদের বয়স কম, চিন্তাধারা যৌক্তিক এবং তাদের মধ্যে লেখাপড়া শেষে স্বদেশে ফিরে আসার প্রবণতাও বেশি।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের চেয়ে ১৭ শতাংশ এবং অনার্স ডিগ্রির জন্য বিদেশে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়েছে।
রিপোর্ট অনুসারে: ২০১৫ সালে কানাডায় চীনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কমবয়সী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৫ শতাংশে দাঁড়ায়, যাদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ অনার্সের জন্য পড়েছে এবং ৩০ শতাংশ কলেজে পড়েছে। এর মধ্যে অনার্স ডিগ্রির জন্য পড়েছে চীনের প্রায় এক লাখ কুড়ি হাজার শিক্ষার্থী, যা ২০১৪ সালের চেয়ে ১২.৭ শতাংশ বেশি এবং মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য পড়ছিল এক লাখ কুড়ি হাজারে বেশি চীনা শিক্ষার্থী, যা ২০১৪ সালের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি।
বিদেশে লেখাপড়া করা চীনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর চীনের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট পিতামাতার মধ্যে আগেভাগে পরিকল্পনা করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খাই থাখ শিক্ষা গ্রুপের প্রতিবেদন অনুসারে, ৯০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী মনে করে, লেখাপড়ার পর চাকরি-বাকরির সুযোগ নিয়েও পূর্ব-পরিকল্পনা থাকা জরুরি। তা ছাড়া, কোন দেশে লেখাপড়ার জন্য যেতে হবে, তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে চীনা শিক্ষার্থীরা নিজেদের চাহিদার কথাই সর্বাগ্রে বিবেচনা করে।
রিপোর্ট অনুসারে, চীনের অনেক ভালো ছাত্র-ছাত্রী নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না-হয়ে, বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বিদেশে যেসব চীনা শিক্ষার্থী মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য পড়ছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই চীনের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে গ্রাজুয়েট হয়েছেন। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সমস্যা হচ্ছে, এখন চীনা শিক্ষার্থীরা কোনো কোনো দেশে যাওয়ার সময় ভিসা জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য শিক্ষার্থীদের অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়।
ক্রমবর্ধমান হারে চীনা শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন, এটা সত্য। পাশাপাশি এটাও সত্য যে, লেখাপড়া শেষে দেশে ফিরে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০০০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বিদেশে লেখাপড়া শেষ করে প্রায় ২০ শতাংশ চীনা শিক্ষার্থী দেশে ফিরে আসেন। ২০১৪ সালে বিদেশে চীনা শিক্ষার্থীর মোট সংখ্যা ছিল প্রায় ৪.৬ লাখ, যাদের মধ্যে চীনে ফিরে আসে ৩ লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী।
এর ফলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিদেশে লেখাপড়া শেষে দেশে ফিরে আসা চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতভাগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তখন বিদেশ-ফেরত শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান একটা বড় ইস্যু হবে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
সম্প্রতি 'চীন-বৃটেন সংলাপ ও উন্নয়ন ফোরাম' পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উচ্চপর্যায়ের শিক্ষা খাতে দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও ব্যক্তি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ বিনিময় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজ্ঞানবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ডেভিড উইলেটস্ ফোরামে বলেন, ২০১৫ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ব্রিটেন সফরের সময় দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের গতিপথ নির্ধারিত হয় এবং এর পর এখন পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেন চীনের সাথে দক্ষ জনশক্তির আদান-প্রদান ও এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে আদান-প্রদানকে উত্সাহ ও সমর্থন দিয়ে যাবে।
ফোরামে ঠিক করা হয় যে, প্রতি বছর বাছাই করা ১০০০ চীনা ও ব্রিটিশ শিক্ষার্থী পরস্পরের দেশে ইন্টার্নশিপ করবে এবং এর মাধ্যমে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা থেকে শিখে নিজেদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বাড়াবে। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে দু'দেশের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের বিনিময়ের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নততর হবে, এবং একে অপরের ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও ফোরামে আশা প্রকাশ করা হয়।
মইনুদ্দিন হাসান সোহেল নিংপো বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিষয়ে লেখাপড়া করছেন। সিআরআই বাংলার 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠানে আজ আমরা তার গল্প শুনবো।
প্রিয় শ্রোতা, এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের কাছে চিঠি লিখবেন। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn।
রেডিও'র মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.bengali.cri.cn। (সুবর্ণা/টুটুল/আলিম)