শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নারী পুলিশ
  2016-01-24 19:19:02  cri

১৯৮৯ সালে নামিবিয়ায় পরিচালিত ইউএন ট্রানজিট অ্যাসিস্ট্যান্স গ্রুপে সদস্য প্রেরণের মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। তখন বাংলাদেশ পুলিশের পুরুষ সদস্যরাই অংশ গ্রহণ করতো।

২০০০ সালে ৫ নারী পুলিশের একটি টিম প্রথমবারের মত শান্তিমিশনে পূর্ব তিমুরে অংশ নেয়। পরবর্তীতে নানা কারণে আর নারী পুলিশের কোন টিম মিশনে অংশ নেয়নি। এরপর অপেক্ষা করতে হয় আরো দশ বছর। সব বাধা অতিক্রম করে ২০১০ সালে বাংলাদেশ নারী পুলিশের প্রথম গ্রুপটিকে পাঠানো হয় শান্তিরক্ষায় হাইতি মিশনে। এ গ্রুপে ছিল নারী পুলিশের ১৬৮ সদস্য। আর এর মধ্য দিয়েই ব্যাপক আকারে শান্তি মিশনে বাংলাদেশ নারী পুলিশের যাত্রা শুরু।

 এরই মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারী সদস্যরাও কর্মদক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে শান্তি মিশনে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বর্তমানে সংখ্যার দিক দিয়ে পৌঁছে গেছে শীর্ষ অবস্থানে।

আর গত বছর ৯ এপ্রিল শান্তিরক্ষা কঙ্গো মিশনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন বাংলাদেশ নারী পুলিশের দ্বিতীয় গ্রুপের ১২৫ সদস্য। এর ফলে দিয়ে বাংলাদেশ নারী পুলিশও সংখ্যার দিক দিয়ে পৌঁছে গেল শীর্ষ অবস্থানে।

 নানা সমস্যায় ভরা পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ১৪ নারীর অংশ গ্রহণ শুরু প্রায় ৩৫ বছর আগে। এরপর ধাপে ধাপে পুলিশ বাহিনীতে বেড়েছে নারী সদস্য। এখন এ সংখ্যা প্রায় আট হাজারে পৌঁছেছে। আর শান্তিমিশনে নারী পুলিশের অংশগ্রহণ এবং শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছানোকে তিনি মাইলফলক বলেই মনে করেন। এর ফলে পুলিশ বাহিনীতে অংশ গ্রহণে মেয়েদের উত্সাহ যোগাবে।

২০১০ সালে হাইতি মিশনে নারী পুলিশের গ্রুপে সদস্য সংখ্যা ছিল ১৬৮ জন। এর মধ্যে ছিল একজন পুলিশ সুপার, ৬ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ২ জন সিনিয়র এএসপি, ৪ জন এএসপি, ২ জন মেডিক্যাল অফিসার, ৯ জন ইন্সপেক্টর, ১৬ জন সাব-ইন্সপেক্টর, ৪১ জন এএসআই, ৮৫ জন কনস্টেবল,একজন বাবুর্চি এবং একজন পরিচ্ছন্নকর্মী।

 বাংলাদেশ পুলিশের অপর একটি নারী পুলিশের গ্রুপ বর্তমানে হাইতিতে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। গত বছর ৯ এপ্রিল রাতে বাংলাদেশ পুলিশের ১২৫ নারী সদস্যের একটি এফপিইউ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর কঙ্গো মিশনে যোগ দিয়েছে। এই নারী সদস্যের দলটির কমান্ডারের দায়িত্বে আছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিয়া হোসনা।

 বর্তমানে কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, দারফুর, আইভরি কোস্ট, হাইতি, মালি, লাইবেরিয়া ও সোমালিয়াসহ বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ১ হাজার তিন শত ৬৯ জন সদস্য পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ নারী পুলিশের এই যেন উত্তর উত্তর সফলতা লাভ করতে পারে আমরা তা কামনা করছি। তাদের সুনাম আরো বৃদ্ধি পাক; তারা সাহসীকতার সাথে দায়ত্ব পালন করুন এই প্রার্থণা।

অনুষ্ঠানের 'দ্বিতীয় পর্বে' একজন আলোকিত নারীকে নিয়ে আলোচনা করবো আমরা।

প্রিয় শ্রোতা, আর আমরা 'আলোকতি নারী ' পর্বে এমন একজন নারীকে নিয়ে আলোচনা করবো যার জীবন কেটেছে বিজ্ঞানের সাথে যুক্ত থেকে। তিনি সিয়ে সিতে। একজন বিখ্যাত চীনা পদার্থ বিজ্ঞানী। চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের ছুয়েনচৌ শহরের অধিবাসী তিনি।

১৯৪৬ সালে সিয়ে সিতে সিয়ামেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। ১৯৫১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুয়েটার টেকনোলোজি ইনস্টিটিউট থেকে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। পরে এই ইনস্টিটিউট থেকে পোষ্ট ডক্টরাল ডিগ্রী লাভ করেন।

সিয়ে সিতে প্রধানত সেমিকন্ডাক্টর পদার্থবিদ্যা, কঠিন পদার্থের শক্তি-বর্ণালী ও ভৌত পদার্থ প্রভৃতি ক্ষেত্রে অধ্যাপনা ও গবেষণা করেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেন। তিনি এক্ষেত্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণার একজন প্রধান প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক ছিলেন। ৯০-এর দশকে তিনি প্রধানত সেমিকন্ডাক্টরের বাহ্যির ও শর্ট পীরিয়ডের সুপার ল্যাটিসের শব্দ-বর্ণালী নিয়ে গবেষণা চালান এবং গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেন।

 সিয়ে সিতে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, কানাডা, জাপান ও হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার ১২টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মানিত ডক্টরেট ডিগ্রি লাথ করেন। এছাড়াও জাপানের তোয়ো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিত ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৮৮ সালে তিনি তৃতীয় বিশ্বের বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমিশিয়ান নির্বাচিত হন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্য ও সাইন্স বিজ্ঞান একাডেমির বিদেশী একাডেমিশিয়ান ও শাংহাই ফুতান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৮০ সালে তিনি চীনা বিজ্ঞান একাডেমীর একাডেমীশিয়ান নির্বাচিত হন।

শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের 'তৃতীয় পর্বে' 'বিশ্ব নারীর টুকরো খবর' বিভাগে প্রথমেই আলোচনা করবো যে খবরটি নিয়ে তা হলো, ম্যাগি নুডলস নিয়ে মারামারি করে মাকে হত্যা। উর্মি, খবরটি খুবই হৃদয়বিদারক। কি বলা হয়েছে এতে একটু বলো তো বন্ধু।

 ম্যাগি নুডলস খাওয়া নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া মেটাতে গিয়েছিলেন মা। কিন্তু ছেলেদের হাতে বেদম মারে মর্মান্তিক মৃত্যু হল বৃদ্ধা মায়ের। মৃতের নাম মঞ্জু সাক্সেনা (৭০)। ভারতের উত্তরাখণ্ডে এই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, দু'জনেই উত্তেজিত হয়ে মাকে বেদম মারধর করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। প্রতিবেশীরা আরও অভিযোগ করেন, তারপর দুই ভাই মিলে মঞ্জুদেবীকে বাড়ির পাশের একটি জমিতে ফেলে দিয়ে আসে। পরের দিন মঞ্জুদেবীর দেহ উদ্ধার হওয়ার পরই প্রতিবেশীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দুই ভাইকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা।

বাড়ির পাশের একটি জমি থেকে তার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশীরা অভিযোগ দায়ের করার পরই গ্রেফতার করা হয়েছে ওই দুই ভাইকে। কলকাতার সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই দুই ভাই বদমেজাজি। নিজেদের মধ্যে তো বটেই, মায়ের সঙ্গেও তাদের প্রায়ই ঝামেলা হতো। গত ১০ জানুয়ারি দুই ভাইয়ের মধ্যে ম্যাগি খাওয়া নিয়ে ঝগড়া চরমে পৌছায়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে গড়ায়। বিষয়টি সামাল দিতে আসেন মা মঞ্জুদেবী। তখনই দু'জনের রাগ গিয়ে পড়ে মায়ের উপর।

এবারের খবর 'কেজরিওয়ালের মুখে কালি ছিটালো এক তরুণী' দিল্লির রাস্তায় গাড়ি চলাচলের নতুন নিয়ম মেনে চলায় নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে দলীয় এক সভায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তব্য দেওয়ার সময় তার দিকে কালি ছুড়ে মারলেন এক তরুণী, যার কয়েক ফোটা মুখ্যমন্ত্রীর মুখেও লেগেছে। রোববার দিল্লির ছত্রশাল স্টেডিয়ামে এই ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপির দিকে অভিযোগ তুলেছে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, গত ১৭ জানুয়ারি রোববার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে কেজরিওয়াল বক্তব্য শুরু করার পর ওই তরুণী মঞ্চের দিকে এগিয়ে এসে কালি, কিছু কাগজ ও একটি সিডি ছুড়ে মারে। কয়েক ফোঁটা কালি মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের মুখে লাগে। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে অবস্থান নেন। একদল ওই তরুণীকে আটকান। ভাবনা অরোরা (২৬) নামের ওই তরুণী নিজেকে 'আম আদমি সেনা'র সদস্য বলে পরিচয় দেন, যে গ্রুপটি আম আদমি পার্টি থেকে দলছুটদের নিয়ে গঠিত। নিরাপত্তাকর্মীরা সরিয়ে নেওয়ার সময় ওই তরুণী সাংবাদিকদের বলেন, আম আদমি সেনার হয়ে পাঞ্জাবে কাজ করেন তিনি।

ভারতের রাজধানীতে জোড়-বিজোড় নম্বরধারী গাড়ি আলাদা দিনে চালানোর যে নিয়ম কেজরিওয়াল চালু করেছেন তার সমালোচনা করেন তিনি। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে দিল্লি সরকার একটি সিএনজি কেলেঙ্কারি শুরু করেছে। আমার কাছে তার প্রমাণ আছে। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাত চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সময় দেওয়া হয়নি।

 অরোরাকে মডেল টাউন থানায় নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সূর্যাস্তের পর নারীদের গ্রেপ্তারের নিয়ম না থাকায় তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি চেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মানিশ সিসোদিয়া। ঘটনার জন্য দিল্লি পুলিশের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি পুরো ঘটনার বিজেপির দিকে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। পুলিশ কিছুই করেনি। ওই নারী যখন কেজরিওয়ালের দিকে কালি ছোড়ে তখন তারা যেন নাটক দেখছিল। কালির জায়গায় এটা এসিডও হতে পারত। আমি মনে করি, বিজেপিই পুরো ঘটনার পরিকল্পনা সাজিয়েছে।

 এক টুইটে দিল্লির পরিবহনমন্ত্রী গোপাল রাই লিখেছেন, যারা ১৫ দিনে জোড়-বিজোড় পরিকল্পনা ব্যর্থ করতে পারেনি তারা একটা ঝামেলা করার চেষ্টা করেছে। এটা লজ্জাজনক। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিজেপি নেতা বিজেন্দার গুপ্ত বলেছেন, আমি তীব্রভাবে এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।

(মান্না)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040