নারীকণ্ঠ
  2016-01-10 17:00:03  cri
 

প্রথম পর্ব : প্রধান প্রতিবেদন : বাংলাদেশে কৃষিতে নারীর অবদানের স্বীকৃতি নেই...।

সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে জীবনের প্রয়োজনে নারী সমাজ দেশ ও সংসারে অবদান রেখে আসছে। সভ্যতার শুরুতে কৃষিকাজ আবিস্কারে মাধ্যমে নারী তার অকুণ্ঠ সংগ্রামে লিপ্ত আজও। কিন্তু মেলনি কোনো স্বীকৃতি। নির্মম হলেও সত্যি নারী কৃষিকাজ আবিস্কার করলেও সেই কৃষিতেই আজ নারীর স্বীকৃতি নেই। বাংলাদেশের নারীর অবহেলার এ খন্ডিচত্র নিয়ে আজ আমাদের প্রধান প্রতিবেদন 'কৃষিতে নারীর অবদানের স্বীকৃতি নেই'।

শ্রোতাবন্ধুরা, বাংলাদেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কর্মজীবী নারীর হিসাব মতে, কৃষি খাতের ২০টি কাজের মধ্যে ১৭টি কাজে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও; কৃষিতে নারীর স্বীকৃত নেই। বীজ সংরক্ষণ থেকে শুরু করে ফসল উত্পাদন, সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে গ্রামীণ নারীর সিংহভাগ অংশগ্রহণ থাকলেও কৃষক হিসেবে তাদের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন হয় না। কৃষিঋণ ও কৃষকের জন্য দেওয়া সরকারি সুযোগ-সুবিধাগুলো থেকেও গ্রামীণ নারীরা বঞ্চিত।

'গ্রামীণ জীবনযাত্রায় স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচার অভিযান' এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের মোট নারী শ্রম শক্তির পরিমাণ ১ কোটি ৬২ লাখ। এর মধ্যে ৭৭ শতাংশ গ্রামীণ নারী। যার ৬৮ শতাংশ কৃষি কাজে, পোলট্রি, বনায়ন ও মত্স্য খাতের সঙ্গে জড়িত।

সুপ্রিয় শ্রোতা, বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, কৃষি খাতে নিয়োজিত পুরুষের চেয়ে নারীর অবদান ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া কর্মক্ষম নারীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারী নিয়োজিত আছে 'কৃষি কাজে'। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস-এর গবেষণায় বলা হয়েছে-গ্রামীণ ৪১ শতাংশ নারী আলু চাষের সঙ্গে জড়িত। ৪৮ শতাংশ মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বিশ্বখ্যাতি অর্জনের পেছনে আজকের গ্রামীণ নারীর ব্যাপক অর্জন থাকলেও তা স্বীকার করা হয় না। শুধু কৃষক হিসেবে নন; গার্মেন্টস সেক্টরে নারীকর্মী, প্রবাসে নারীকর্মী দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। নারীর এসব অর্জন কেবল সাম্প্রতিক কালেই নয়; আবহমান কাল ধরে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। অথচ এই নারীরাই মজুরি বৈষম্য ও কাজের স্বীকৃতি না পাওয়ার বঞ্চনার শিকার।

নারী শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্য, কৃষক হিসাবে স্বীকৃতি, কৃষি কার্ড প্রদান, সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হলে সমাজে ও দেশের জন্য তারা ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। নারী কৃষকদের উত্সাহিত করতে এদিকটিতে নজর দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন অনেকে।

বন্ধুরা, নারী নেত্রীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে নারীকে কৃষক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। এ জন্য প্রয়োজন নীতি প্রণয়ন। নারীকে দক্ষ কৃষক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতা করতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে নারীকে কৃষক হিসেবে শস্য বাজারজাতকরণ থেকে শুরু করে বিপণন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য তৈরি করতে হবে।

গ্রামীণ নারীকে কৃষক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া সময়ের দাবি উল্লেখ করে একশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেছেন, ২০টির বেশি কৃষিকাজে নারীর অবদান থাকলেও কৃষক হিসাবে তার স্বীকৃতি মিলছে না। একজন পুরুষ কৃষক যেসব সুবিধা ভোগ করছে কিষাণীরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে কৃষিক্ষেত্রে বিপুল অবদান থাকা সত্ত্বেও নারী কৃষকের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, অবাক করা বিষয় হলো, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে পুরুষ কৃষকের জন্য সুনির্দিষ্ট 'ডাটাবেজ' থাকলেও নারী কৃষকের জন্য কোন 'ডাটাবেজ' নেই। ফলে রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে ১ কোটি ৩৯ লাখ কৃষককে কার্ড বিতরণ করলেও নারীরা এর অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

তাছাড়া রোদ-বৃষ্টি, ঝড়ে প্রতিদিন ১০/১২ ঘণ্টা মাটিকাটা, পাথর ভাঙার মতো কঠিন কাজ করলেও নারী মজুরি পান পুরুষের অর্ধেক। এসব শ্রমিক ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। দুপুরে খাবার সময় পান মাত্র ১ ঘণ্টা। অধিকাংশ নারী শ্রমিকের কাজের জন্য কোনো সুষ্ঠু পরিবেশও নেই। তাদের জন্য নেই পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা। এমনকি নারী শ্রমিকদের ছোট সন্তানের জন্য নেই মাতৃদুগ্ধ পানের বা ডে-কেয়ার সেন্টারেরও কোনো ব্যবস্থা। কৃষিকাজ ও অন্যান্য কাজে নিয়োজিত নারীদের দাবি, নারীকে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এতে তারা কৃষিকাজে প্রয়োজনীয় ব্যাংক ঋণ ও কৃষি কার্ডসহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

দ্বিতীয় পর্ব : আলোকিত নারী :

করিতে পারিনা কাজ, সদা ভয়, সদা লাজ/সংশয়ে সংকল্প সদা টলে/পাছে লোকে কিছু বলে৷

আড়ালে আড়ালে থাকি, নীরবে আপনা ঢাকি/সম্মুখে চরণনাহি চলে/পাছে লোকে কিছু বলে…।

এই একটি মাত্র কবিতার মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষি মানুষের কাছে তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত৷ বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অপরিসীম৷ আর তিনি হলে সকলের প্রিয় কবি কামিনী রায়৷

বন্ধুরা, কবি কামিনী রায় জন্মেছিলেন ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর৷ পূর্ববঙ্গের বাকেরগঞ্জের বাসান্ডা গ্রামে (বর্তমানের বরিশাল)৷ তার বাবা চন্ডীচরণ সেন ছিলেন একজন খ্যতিমান গ্রন্থকার৷ মা রামাসুন্দরী দেবী৷ মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন৷

কামিনী রায়ের পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে৷ বিশেষ করে মা-বাবার কাছে৷ মায়ের কাছে তিনি বর্ণপরিচয় প্রথম ভাগ ও দ্বিতীয় ভাগসহ শিশুশিক্ষা শেষ করেন৷ স্কুলে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পরে 'আপার প্রাইমারী' পরীক্ষা দিয়ে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন৷ ১৪ বছর বয়সে মাইনর পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন৷

তিনি ১৮৮০ সালে কলকাতা বেথুন স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ সালে ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। বেথুন কলেজ থেকে তিনি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসেবে সংস্কৃত ভাষায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন৷ কামিনী রায় ভারতের প্রথম নারী অনার্স গ্র্যাজুয়েট। এরপর তিনি বেথুন কলেজেই শিক্ষকতা শুরু করেন৷

১৮৯৪ সালে কেদারনাথ রায়ের সাথে কামিনী রায়ের বিয়ে হয়৷ তাদের ৩ সন্তান ছিলো৷ ১৯০০ সাল থেকে ১৯০৮ সালের মধ্যে তিনি বাবা,স্বামী,৩ সন্তান,ভাই ও বোনকে হারান। একের পর এক আপনজনদের হারিয়ে তিনি নি:স্ব-নি:সঙ্গ হয়ে পড়েন৷সব হারানোর ব্যাথা তার রচনায় ফুটে ওঠে স্পষ্ট হয়ে৷

প্রিয় শ্রোতা, কামিনী রায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'আলো ও ছায়া' ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয়৷ এই কবিতার বই প্রকাশের সাথে সাথেই তা পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে৷ এ ছাড়া 'মহাশ্বেতা','দ্বীপ ও ধূপ' 'মাল্য ও নির্মাল্য'-১৯১৩,'অশোক সংগীত'-১৯১৪,'জীবন পথে'-১৯৩০, শিশুদের জন্য লেখা কবিতা 'পৌরাণিকী'-১৮৯৭ সালে প্রকাশিত হয়৷তাঁর 'চন্দ্রাতীরের জাগরণ' নাট্যকাব্যটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

কামিনী রায় ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের হাজারীবাগে মারা যান৷

বন্ধুরা, এই মহিয়ষী নারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এখন আমারা তার 'পাছে লোকে কিছু বলে' কবিতাটি শুনবো।

পাছে লোকে কিছু বলে/কামিনী রায়ের

করিতে পারিনা কাজ, সদা ভয়, সদা লাজ,

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,

পাছে লোকে কিছু বলে৷

আড়ালে আড়ালে থাকি, নীরবে আপনা ঢাকি

সম্মুখে চরণ নাহি চলে,

পাছে লোকে কিছু বলে৷

কাঁদে প্রাণ যবে, আঁখি সযতনে শুষ্ক রাখি

নির্মল নয়নের জলে,

পাছে লোকে কিছু বলে৷

একটি স্নেহের কথা প্রশমিত পারে ব্যথা

চলে যায় উপেক্ষার ছলে,

পাছে লোকে কিছু বলে৷

মহত উদ্দেশ্য যবে একসাথে মিলে সবে,

পারিনা মিলিতে সেই দলে,

পাছে লোকে কিছু বলে৷

বিধাতা দিয়েছে প্রাণ, থাকি সদা ম্রিয়মান,

শক্তি মরে ভীতির কবলে,

পাছে লোকে কিছু বলে৷

তৃতীয় পর্ব : বিশ্ব নারীর টুকরো খবর :

শ্রোতাবন্ধুরা, টুকরো খবর বিভাগে প্রথমেই আলোচনা করবো যে খবরটি নিয়ে তা হলো...।

১. মেক্সিকোয় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নারী মেয়র নিহত

মেক্সিকোর দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের একটি শহরের নারী মেয়র অফিসে ওঠার দ্বিতীয় দিনেই দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার ২ জানুয়ারি মোরেলস রাজ্যের অন্যতম বৃহত শহর টেমিক্সকো শহরের মেয়র গিসেলা মোতা এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

স্বায়ত্ত্বশাসিত মোরেলস রাজ্য সরকারের বরাত দিয়ে ৩ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।

মোরেলসের নিরাপত্তা বাহিনীর কমিশনার জেসাস আলবার্তো ক্যাপেলা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মোতা তার বাসভবনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। পাঁচ সন্ত্রাসী তার বাড়িতে গিয়ে নির্বিচারে গুলি ছোঁড়ে। এতে সেখানেই নিহত হন মোতা। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই হামলাকারী নিহত ও আরও তিনজন আটক হয়।

মোতার হত্যাকাণ্ডে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে মোরেলস রাজ্যের গভর্নর গ্রাসো রামিরেজ বলেন, 'এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।' তবে হত্যাকাণ্ডে কোনো চক্র বা মাদকপাচারকারী গ্রুপ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি তিনি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে কার্টেলগুলো প্রায়ই প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আক্রমণ করে থাকে। সে বিবেচনায় মাদকবিরোধী দৃঢ় অবস্থানের জন্য পরিচিত মোতাকে কোনো একটি কার্টেলই হত্যা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ড তদন্তে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।

জানুয়ারি ০৩, ২০১৫

২. মা, আমি আত্মঘাতী মিশনে

'মা, আমি আত্মঘাতী মিশনে আছি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার খেয়াল রাখবেন।' ফোনের এপাশ থেকে এই কথার জবাবে ওপাশে জগতের নীরবতা। সন্ত্রাসী ছেলে মাকে জানাচ্ছে, একটু পরেই সে 'মিশনে' মারা পড়বে। মা সে কথা শুনছেন। কী বলবেন তিনি? কিছু বলতেও শোনা গেল না!

শনিবার ২ জানুয়ারি ভারতের পাঞ্জাবে দেশটির পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার আগে মধ্যরাতে এক সন্ত্রাসী ও তার মায়ের মধ্যে এমনই সংলাপ হয়।

গোয়েন্দা সংস্থা সেই ফোনালাপ ট্র্যাক করেছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

ওই সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, শনিবার গভীর রাত ১টা ৫৮ মিনিটে ওই সন্ত্রাসী ও তার মায়ের মধ্যে ৭০ সেকেন্ডের আলাপ হয়। এসময় সন্ত্রাসীকে বলতে শোনা যায়, 'মা, আমি আত্মঘাতী মিশনে আছি।'

তার এ কথায় কোনো সায় দেয় না ওপাশ।

সন্ত্রাসী সন্তান আবার বলতে থাকে, 'আমি আত্মঘাতী মিশনে আছি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার খেয়াল রাখবেন।'

এরপরও ফোনের ওপাশ থেকে কোনো শব্দ আসে না।

ওই সংলাপের দু'ঘণ্টা পরই পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ততক্ষণাত ভারতীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী অভিযানে নামলে জঙ্গিদের সঙ্গে ১৭ ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে চার সন্ত্রাসী ও বিমান বাহিনীর তিন সদস্য নিহত হন। পরে নিহত হন বিমান বাহিনীর আরও চার সদস্য ও এক সন্ত্রাসী।

সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী ছেলে পাকিস্তানের কোনো একটি স্থানে থাকা তার মায়ের সঙ্গে আলাপ করছিল বলে ট্র্যাকিংয়ে ধরা পড়েছে। তবে, কিছু কিছু আলাপ পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না। সন্ত্রাসী পাঞ্জাবি ও মুলতানি ভাষায় কথা বলছিল।

নিরাপত্তা বাহিনীর ট্র্যাক করা আরও বেশ কিছু ফোনালাপে পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলার ইঙ্গিত রয়েছে জানাচ্ছে সূত্রটি। সূত্রমতে, ৮৭ সেকেন্ডের আরেক ফোনালাপে এক প্রান্ত থেকে বলা হয়, 'এটা কি নিয়ন্ত্রণে?' তখন আরেক প্রান্ত থেকে বলা হয়, 'হ্যাঁ।' তারপর নির্দেশনা দেওয়া হয়, 'বিমান বাহিনীর সরঞ্জাম, হেলিকপ্টার, উড়োজাহাজ সব উড়িয়ে দাও।'

তবে, একটি ফোনালাপের 'তাকে বোঝাও, আমরা চিন্তিত' বাক্যটি নিরাপত্তা বাহিনীকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বলেও জানাচ্ছে সূত্রটি।

পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় এখন পর্যন্ত সাত সেনা সদস্য ও পাঁচ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। সেনা সদস্যদের মধ্যে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদধারী কর্মকর্তাও রয়েছেন। পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দেয়নি ভারতী বাহিনী।

জানুয়ারি ০৩, ২০১৬

৩. যেখানে পুরুষ নিষিদ্ধ ২২ ডিসেম্বর,

বিশ্বের অনেক জায়গা কিংবা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে নারীরা প্রবেশ করতে পারেন না। কিন্তু পুরুষরা নিষিদ্ধ এমন কাহিনী হয়তো আমাদের কাছে অজানা এবং অবিশ্বাস্যও।

তবে এটাই সত্যি যে, পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার উমোজা তেমনই একটি গ্রাম যেখানে শুধুই নারীদের বসবাস। অন্যায়,অত্যাচার,নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে নারীরা একে অপরের দেখভাল করে থাকেন।

উমোজা কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় সামবুরু অঞ্চলে অবস্থিত। এ সম্প্রদায়ের প্রধান রেবেক্কা ললোসলি। তবে উমোজায় পুরুষদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা নেই। তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি নেই। ১৯৯০ সালে ১৫ জন নারী মিলে গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত করেন। এদের সবাই ব্রিটিশ সৈন্য দ্বারা ধর্ষণের পর বেঁচে যান।

এখন সেখানকার জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গ্রামটিতে প্রায় ২০০ শিশুর বসবাস। -দ্য গার্ডিয়ান

৪. মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্যে মিস পুয়ের্তো রিকো বরখাস্ত

২১ ডিসেম্বর,

মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য করায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত হলেন মিস পুয়ের্তো রিকো। টুইটারে পেজে ডেসটিনি ভেলেজ কয়েকটি মুসলিম বিরোধী মন্তব্য করেছেন বলে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্যের প্রতিবাদে চলচ্চিত্র নির্মাতা মাইকেল মুর একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেন। সেখানে 'উই আর অল মুসলিম' লেখা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে ছবি তুলে তা পোস্ট করা হয়। এর বিরুদ্ধে টুইট করেছেন ডেসটিনি ভেলেজ।

একটি টুইটে ডেসটিনি বলেছেন,'যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী কার্মকান্ড করতে ও গ্যাস স্টেশন স্থাপন করতে মুসলিমরা আমাদের সংবিধান ব্যবহার করছে।' অন্য একটি টুইটে লিখেছেন, 'যিশু, খ্রিস্টান ও মুসলমানদের সঙ্গে তুলনা হতে পারে না। যিশু ও খ্রিস্টানদের পবিত্র বইয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কোনো বিষয় নেই। কিন্তু মুসলি তেল ব্যবহার করে এই দেশসহ অন্য দেশগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছে।

ডেসটিনির এই টুইটারের বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে মিস পুয়ের্তো রিকো সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে,ডেসটিনি ভেলেজ সাম্প্রতিক কাজ ও আচরণ আমাদের প্রোগাম,বোর্ডের সদস্য, স্পন্সর ও অংশীদার বা জাতীয় সংস্থার ন্যায়পরায়ণতা ও সততার সঙ্গে যায় না।

বিবৃতিতে বলা হয়,ভেলেজের কাজ সংস্থার সাথে বিরোধপূর্ণ। তার কাজের জন্য তাকে মিস পুয়ের্তো সংস্থা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।

তবে তার মন্তব্য অর্গানাইজেশনের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ভেলেজকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়,মিস পুয়ের্তো রিকো অর্গানাইজেশন বিতর্কিত কোনো আচরণ সহ্য করবে না। এতে ডেসটিনি ভেলেজ এর ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিও অন্তভুক্ত করা হয়।

মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতাতেও অংশ নিয়েছিলেন ডেসটিনি ভেলেজ। সংস্থাটিও তার মন্তব্যে তাদের কোনো দায় নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে।

পুয়ের্তো রিকো থেকে নির্বাচিত ২০১৬ সালে ডেসটিনি ভেলেজ মিস আমেরিকা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।

৫. আবারও ক্যারিয়ারে মনোযোগী হতে চায় প্রীতি জিনতা

০৪ জানুয়ারী,২০১৬

গতবছর গুঞ্জন উঠেছিল নতুন বছরে সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন বলিউড তারকা প্রীতি জিনতা। প্রীতির কাছ থেকেও তেমন ইতিবাচক আভাস পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ক্যারিয়ারে এতোগুলো বছর পার করলেও নতুন করে আবারও ক্যারিয়ারের হিসেব কষছেন এই অভিনেত্রী।

আর নতুন বছরে এসে বিয়ের খবর উড়িয়ে দিয়েছেন প্রীতি নিজেই। ব্যক্তিজীবন নয়,আপাতত ক্যারিয়ারেই মন দিতে চান তিনি। দীর্ঘদিন বিরতির পর আবারও রূপালি পর্দায় ফিরতে চান তিনি। খুব তাড়াতাড়ি নিজের প্রযোজনায় একটি ছবিতে অভিনয় করবেন বলে জানা যায়।

প্রীতি বলেন,'বিয়ে নয়,আবারও ক্যারিয়ারে মনোযোগী হতে চাই। এখন সিনেমাতেই মন দেবো।' প্রীতির ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়,এখন শিকাগোতে রয়েছেন তিনি। সেখানে একের পর এক নতুন চিত্রনাট্য পড়ছেন। চলছে চিত্রনাট্য বাছাইয়ের কাজ। দিন কয়েকের মধ্যেই তার এই নতুন ছবির ঘোষণা করবেন বলিউড অভিনেত্রী।

যদিও নিন্দুকরা বলছেন,বি টাউনে নাকি আর কাজ পাচ্ছেন না প্রীতি।

সে কারণেই নিজের প্রযোজিত ছবি দিয়ে অভিনয়ে ফিরতে হচ্ছে তাকে। তবে প্রীতির কাছে কয়েকটি নতুন সিনেমা প্রস্তাবও আছে। কিন্তু সেদিকে না ভিড়ে এখন নিজের প্রযোজনা নিয়েই ব্যস্ত তিনি। প্রীতি এখন ক্যারিয়ারের যে পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন তাতে চরিত্র পছন্দের বিষয়ে একটু রুচিশীল হবেন তিনি।

চতুর্থ পর্ব : সাম্প্রতিক : জুয়ার দায় মেটাতে শিশু বিক্রির বিজ্ঞাপন!

২৬ ডিসেম্বর,

ইসরায়েলে জুয়ার দায় মেটাতে গিয়ে নিজের তিন মাসের শিশু সন্তানকে বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে দম্পতি। অনলাইনে নিজের সন্তান বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিল তারা।

অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে একজন পুলিশ বেনামে কয়েকবার ওই শিশুর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং দেখা করে। তদন্তে দেখা যায় শিশুটির বাবা পাড় জুয়াড়ি এবং সব মিলিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তার পাঁচ লক্ষ ডলার দেনা রয়েছে। শিশুটির বাবা ১ লাখ শেকেল বা ২৬ হাজার ডলার মূল্যে বিক্রি করতে সম্মত হয়। গত বুধবারে শিশুটি সঙ্গে নিয়ে দেখা করতে আসে আর তখনই পুলিশ তাকে আটক করে। এর কিছুক্ষণ পরে তার স্ত্রীকেও গ্রেফতার করা হয়। এই দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

তিন মাসের শিশুটির বিজ্ঞাপনে সুস্থ ও সবল উল্লেখ করা হলেও মেডিকেল চেক আপের পরে দেখা গেছে যথেষ্ট অযত্নের শিকার হচ্ছিল সে। বর্তমানে শিশুটি দেশটির রাজধানীর সমাজকল্যাণ কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রয়েছে।

 (মান্না)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040