v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-07 21:17:24    
দীর্ঘায়ু তারকা

cri
    চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে কয়েক ডজন হাজার দীর্ঘায়ুর ক্লাবে ৯৩ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা সিয়াং ইউন সুপরিচিত । ক্লাবের ষাট সত্তর বছর বয়সী সদস্যরা তার সংগে কতাবার্তা বলতে পছন্দ করেন । তিনি খাটো, তবু পিঠ সোজা ,দ্রুত হাঁটতে পারেন আর তার শ্রবন শক্তি ও দৃষ্টি শক্তিও ভাল । তিনি ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন , দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশ ও পূর্ব চীনের বহু দর্শনীঁয় এলাকায় গিয়েছিলেন । ভ্রমনের সময়ে তার পরিবার পরিজনের যত্ন আর রক্ষনাবেক্ষণও লাগে না । তা ছাড়া বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে আসার পর তিনি পরিবার পরিজনের জন্য খাওয়া দাওয়াও বন্দোবস্ত করতে পারেন । তার স্বাস্থ্য খুবই ভাল , ঔষধ খুব কম খান ।

    তার দীর্ঘায়ুর কারণ কি ?

    প্রথমে তার ভাল মন আছে । গরমকালে ক্লাবের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা ভ্রমণ করতে যান । তারা হ্রদে নৌকা বিহার করেন , মরুভুমিতে হাঁটতে যান আর মহা প্রাচীর পরিদর্শন করতে যান । সিয়াং ইউন সব সময় তাদের সংগে যান । ভ্রমনকালে সন্ধ্যা বেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় । উপস্থাপক আর সংগীদের উত্সাহে তিনি রসিকতার সংগে ছড়া আবৃত্তি করেন । তার রসিকতা আর স্ফুর্তিপূর্ণ ভাবভঙ্গী সংগীদের তুমুল করতালি জয় করেছে । তার ভাল মন অন্যদের জন্যও আনন্দ বয়ে এনেছে ।

    দ্বিতীয়তঃ জীবনধারা বৈচিত্র্যময় । বৃদ্ধাটার দৈনন্দিন সময়সূচীতে বিবিধ আমোদ প্রমোদ আর খেলাধূলা ব্যবস্থা করা হয় । সপ্তাহের সাত দিনে খেলা ছাড়া তিনি বন্ধু-বান্ধবী আর আত্মীয় স্বজনের সংগে কথাবার্তা বলেন । তিনি কখনো নিঃসঙ্গ বোধ করেন না । তিনি চরম খেলাধূলা করেন না । এটা বয়ষ্কদের শারীরিক অবস্থার সংগে খাপ খায় ।

    তৃতীয়তঃ তিনি অপ্রীতিকর ঘটনা নিরসনে পারদর্শী । অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হলে তার মনও খারাপ হয় । যেমন একদিন প্রতিবেশীর বাচ্চার সংগে তার পরিবারের বাচ্চার ঝগড়া ঘটে । প্রতিবেশী উচ্চস্বরে তার পরিবার পরিজনকে গালি দেয় । তার জবাবে বৃদ্ধাটা গালাগালি করলেন না , বরং নীরবতা অবলম্বন করলেন । তিনি নিশ্চিন্তভাবে ঝুল বারান্দায় বসে চা খেলেন , বৈচিত্র্যময় ফুল উপভোগ করলেন । তার মমতা আর নমনীয়তায় প্রতিবেশী মুগ্ধ হলেন । কয়েক দিন পর প্রতিবেশী তার পরিবারের কাছ থেকে ক্ষমতা চেয়েছে । তার ভদ্রতা আর নমনীয় প্রকৃতি তার দীর্ঘায়ুর জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছে ।

    অন্যদের আন্তরিকভাবে সাহায্য করাও বৃদ্ধা সিয়াং ইউনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য । ৯৩ বছর বয়স্ক বৃদ্ধাটা যথাসাধ্য অন্যদের সাহায্য করে থাকেন । যেমন ৭৯ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা ছুই হুই চেন তার একজন পুরানো সহকর্মী । ছুই রোগে ভুগছিলেন আর হাঁটার অসুবিধা ছিল । বৃদ্ধা সিয়াং ইউন সময় সময় ছুইকে খাবার ও প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য দ্রব্য উপহার দিলেন এবং তাকে চুল ধুতে আর নখ কাটতে সাহায্য করলেন । তিনি বলেছেন , বন্ধু হিসেবে পরস্পরকে সাহায্য করতে হয় ।

    বন্ধুত্ব আর পরিবার পরিজনের সংগে মিলন বয়স্কদের দারুণ চাহিদা । পরিবার পরিজন , বন্ধু-বান্ধবী আর সমাজকে ভালবাসার জবাবে তিনি তাদের কাছ থেকে মায়া মমতাও পেয়েছেন । এই ক্ষেত্রে সুন্দর খাবার , দামী পোষাক আর উচ্চ পর্যায়ের বাসা ও গাড়ী তুলনা করা যায় না । ঠিক এই কারণে তিনি সুস্থ থেকে দীর্ঘায়ু আর সুখী জীবনযাপন কাটাচ্ছেন ।

    মানুষের আয়ু প্রায় এক শো বছরের কাছাকাছি । এটা অসলে হোটেলে থাকার মতো স্বল্প মেয়াদী । সুতরাং সুস্বাস্থ্যের ওপর মনোযোগ না দিলে মানুষের রোগে ভোগারসম্ভাবনা আছে । সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ুর মূলে রয়েছে খাওয়া দাওয়া সীমিত রাখা । খাওয়ার পর আস্তে আস্তে হাঁটতে হয় । নাসিকা আর ফুসফুস থেকে নির্গত বায়ু বাহির করার জন্য বুক , পেট আর বৃক্কের দিকে মাসাজ করতে হয় । প্রতি বেলায় বেশী খেলে শরীরের ক্ষতি হয় , কম খেলে স্বাস্থ্যের অনুকুল । সন্ধ্যায় ৫ থেকে ৬ টা পর্যন্ত খাওয়া উচিত । অনেক দেরীতে খেলে পেটের হজমের ক্ষতি। মদ খাওয়া কড়াকড়িভাবে সীমিত রাখা উচিত । নইলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।