প্রতি বছরের শেষ দিকে থেকে অনেক উত্সব একে একে উদযাপিত হয়। এ সময়ে বড় দিন উত্সব , নববর্ষ এবং চীনের ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উত্সব পর পর আসে । আগে চীনের শিশুরা শুধু উত্সব কাটানো পছন্দ করতো । কারণ শুধু উত্সবে শিশুরাই নতুন কাপড় পরতে পারে। শুধু উত্সবে শিশুরা বিশেষ খাবার খেতে পারে। শিশুদের চোখে উত্সবের আরেকটা অর্থ হচ্ছে ছুটি। উত্সবে শিশুরা সম্পূর্ণরূপে খেলাধুলা করতে পারে।চীনে বয়স্কদের জন্যেও উত্সব মানে ছুটি। তাঁরা সারা বছরে কাজ করেন। উত্সব হলো আরামের সময়। এখন আমাদের জীবন মাত্রার মান উন্নত হচ্ছে।প্রত্যেক দিনই চীনাদের জন্যে উত্সবের মতো।তারা নিজেদের ইচ্ছা মতো নতুন কাপড় পরেন, নিজেদের ইচ্ছা মতো মজা খাবার খান। কিন্তু আমরা আগের মতো উত্সব পছন্দ করি।একটি গানের পর আমি আপনাদের কাছে তার কারণ বর্ণনা করবো।
কারণ উত্সবে একটি পরিবারের পুনর্মিলন হয়। উত্সবে পরিবারের যারা দেশের অন্য জায়গায় থাকে বা একই শহরে আলাদাভাবে থাকে ,তাদের উত্সবে অন্য সবার সংগে মিলিত হতে হয়। চীনের বসন্ত উত্সব খৃস্টানদের ক্রিসমাস এবং মুসলমানদের ঈদের মত সমারোহময়। বসন্ত উত্সবের দিনে বড় বড় অক্ষরে লেখা কবিতার ছত্র এঁটে দেওয়া হয় , দেয়ালে ছবি টাঙানো , পটকাবাজি ফাটানো, সিংহ নাচ নাচা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে গিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো এবং নতুন বছরে গোটা পরিবারের সুখশান্তি কামনা করা ইত্যাদি। বসন্ত উত্সবের প্রাক্কালে অর্থাত বসন্ত উত্সবের আগের দিন সন্ধ্যায় পরিবারের সবার একসংগে বছরের শেষ খাওয়া সম্পন্ন করার রীতি সারা চীনে প্রচলিত। উত্তর চীনের লোকেরা বসন্ত উত্সবের প্রাক্কালে পুনর্মিলনের জন্য সাধারণত চিয়াওযি অর্থাত মাংসের পুর দেয়া পুলী পিঠে তৈরী করে সবাই একসংগে খায় আর দক্ষিণ চীনের লোকেরা ইউয়ান সিয়াও অর্থাত বিনি চালের গুঁড়ো দিয়ে গোল গোল খাদ্যবস্তু খায়। চিয়াওযি ও ইউয়ান সিয়াও দুটোই পরিবারের পুনর্মিলন ও সুখশান্তির প্রতীক। সেদিন রাত্রে চীনা জনগণের মধ্য-রাত পর্যন্ত জেগে থাকার রেওয়াজ। খাওয়ার পর পরিবারের সবাই একসংগে বসে বসে টেলিভিশন অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। পরদিন সকালে অর্থাত বসন্ত উত্সবের প্রথম দিন সকালে সবাই সুন্দর কাপড় পরে অন্যদের বাড়ি গিয়ে তাদের উত্সবের শুভেচ্ছা জানায় । আচ্ছা, চীনের বসন্ত উত্সবের সম্পর্কে আমি অনেক কথা বলেছি ।এখন একটু বিশ্রাম নিচ্ছি। একটি গান শুনবো। শোনার পর আমরা আরো কথা বলবো।
ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উত্সব ছাড়া ,চীনে ক্রিসমাসও খুবই সমারোহময়। আমাদের বেতারের প্রতি জায়গায় অপরূপভাবে সাজানো হয়েছে। বেতারের হলের দরজার দু পাশে দুটো বড় ক্রিসমাস গাছ দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালে অনেক ফুলের ঝাড় ঝোলানো হয়। কিভাবে ক্রিসমাস কাটানোর উপায় একেক মনের একেক রকম। কোনো কোনো বন্ধুর সংগে সিনেমা দেখবেন ,কোনো কোনো থিয়ান আনমেন চত্বরে ঘুরে বেড়াবেন , কোনো কোনো বিপণিকেন্দ্রে যেতে চান ।যে কোনো উপায় ক্রিসমাস প্রাক্কাল কাটাবেন , সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আনন্দ ।তাই না ? আচ্ছা ,এখন আমরা একসংগে একটি সুন্দর গান উপভোগ করবো।
|