আজকের অনুষ্ঠানে আমাদের বিষয় হচ্ছে কাজের মুল্য। দিন দিন বয়স বাড়ার সংগে সংগে আমাদের প্রত্যেকেই কাজ করি। কিন্তু আমার কাছে কাজের কি অর্থ? আপনারা কি কখনো ভেবেছেন? আমি বিশ্বাস করি ,এই প্রশ্ন অনেক লোক বিবেচনা করেন নি। কারণ, গতকাল পর্যন্ত আমি তা বিবেচনা করি নি। কাজ আমার জন্যে একটি রেওয়াজের মতো। কারণ, আমাদের আশে-পাশের প্রত্যেকজন কাজ করেন, তাই আমরাও কাজ করি। তাই কাজের মুল্য আমরা অগ্রাহ্য করি। একই রকম কাজের মুল্য একেক জনের কাছে একেক রকম।এখন গান শুনুন।
এই প্রশ্ন বিবেচনা পর, আমি মনে করি, ব্যাপক জনগণের কাছে কাজের তিন ধরণের মুল্য আছে,তা হলো: প্রথমত,জীবনের জন্যে কাজ করা। দ্বিতীয়ত, পছন্দের জন্যে কাজ করা। তৃতীয়ত, দায়িত্ব পালের খাতিরে কাজ করা।
ওকে আমাদের অনুষ্ঠানের বিষয়ে ফিরে আসি। আমাদের আশে-পাশের অনেক লোক জীবনের জন্যে কাজ করেন। তাঁদের কাজ করার কারণ খুব সহজ,কারণ তাঁদের আশে-পাশের প্রত্যেক কাজ করেন, কারণ শুধু কাজ করলে বেতন পাবেন। তিনি বেঁচে থাকতে পারবেন, তাই তিনি কাজ করেন। আমাদের মধ্যে বেশীর ভাগ জনগণের জীবনে চাপ আছে, বেতন হচ্ছে অধিকাংশ মানুষের একমাত্র অর্থনৈতিক উত্স । তাই, যারা বেঁচে থাকতে চান, তারা কাজ করেন। কাজের মুল্য তাদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, তাদের মনে কাজ খুবই পবিত্র। তাই না? এখন গান শুনুন,তার পর আমরা কাজের দ্বিতীয় মুল্য সম্বন্ধে বলবো।
কাজের দ্বিতীয় মুল্য হলো, পছন্দের জন্যে কাজ করা। আমি মনে করি, এই ধরণের জনগণ খুবই উত্ফুল্ল, কারণ কাজকর্মে তাদের মন খুশী, কারণ তাদের কোনো জীবনের চাপ নে। আমি খুব সৌভাগ্যবতী, কারণ আমি এই শ্রেনীর অন্তর্ভূক্ত। আমার মনে হয়, আমার ছোটবেলায়,আমি বেতারের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুনতে পছন্দ করতাম, তাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাবর্তন হবার পর, আমি এই কাজ বেছে নিয়েছি। যখন সন্ধ্যায় আমি রোকর্ডিং রুমে মাইক্রোফেনর সাসনে আপনাদের সংগে কথা বলি, তখন আমার মন খুব খুশী। ছোটবেলায়, আমি ভালো বাবা-মা পেয়েছি,এখন আমার ভালো স্বামী আছে, তাই আমার জীবন কোনো চাপ নেই,আমি নিজের সখ অনুযায়ী,পছন্দের কাজ বেছে নিয়ে করতে পারবো। বিশ্বাস করি, আপনাদের মধ্যে আরো বেশী বন্ধু আমার মতোই প্রতিদিন ভালো মন নিয়ে কাজ করতে পারেন।কাজের মুল্য আমাদের কাছে যত না গুরুত্বপূর্ণ,তারচেয়ে কাজকর্ম আমাদের যে আনন্দ উপহার দেয়,তা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি মনে করি,যারা আমার মতো কাজ করেন, তারা খুবই ভাগ্যবান। এখন একটি আনন্দের গান শুনুন,আশা করি, প্রতিদিন আপনাদের মন খুশী হবে।
কাজের তৃতীয় মুল্য ছিলো: দায়িত্ব পালের খাতিরে কাজ করা। আমি মনে করি, এই শ্রেনীর জনগণ খুবই মহান। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ মানুষের ব্রত খুবই সাফল্য-মন্তিত ও ঐশ্বর্যময়। তাদের জীবনে কোনো চাপ নেই, কিন্তু সামাজিক দায়িত্ব পালন করার জন্যে তারা অব্যাহতভাবে কাজ করেন। যেমন অনেক কোম্পানির বস, যথেষ্ট টাকা আছে বলে কাজ করার প্রয়োজন নেই, কিন্তু যখন তারা কাজ করেন না, কোম্পানি বন্ধ করে দেন, তখন অনেক লোক কাজ হারান এবং বাধ্য হয়ে নতুন কাজের খোঁজে বের হন। হয়তো আপনি খুব বিখ্যাত, হয়তো আপনি খুব ধনী, কিন্তু আপনার যাবতীয় মর্যাদা সমাজ থেকেই পাওয়া,তাই সকল সাফল্যমন্ডিত মানুষের উচিত সমাজে নিজের দায়িত্ব পালন করা। আমি মনে করি, এই ধরণের মানুষ খুব মহান। ওকে, আজকের শেষ গান শুনুন, কারণ আমাদের অনুষ্ঠানের সময় বেশী নেই।
গত কয়েক দিনে আমি তাহের ভাইয়ের টেবিলে একটি কথা দেখেছি, খুব মজার, তা হলো: আজ যদি আপনি কাজকর্ম জোর প্রয়াস না নেন, তবে আগামীকাল আপনাকে জোর প্রয়াসে কাজ খুঁজতে হবে। তাই, আমি মনে করি, আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের কাজকে গুরুত্ব দেয়া।
|